আব্দুল্লাহ আল মামুন:
লোহাগড়ার ঐতিহ্যবাহী নবগঙ্গা ডিগ্রী কলেজে জোরপূর্বক সাক্ষর গ্রহণের মাধ্যমে এডহক কমিটি গঠনের অভিযোগে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এই কমিটির সভাপতি টিপু সুলতান ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য মোঃ নজরুল ইসলামের অপসারণ এবং কলেজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার দাবিতে দক্ষিণ লোহাগড়া বাসী ও কলেজের শিক্ষার্থীরা আজ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেন।
আজ সকাল ১১টায় কলেজ ক্যাম্পাসে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ, অভিভাবক, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। বক্তারা জানান, কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়ের কাছ থেকে জোরপূর্বক সাক্ষর নিয়ে এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বার্থবিরোধী এবং ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎকে বিপদে ফেলছে। তাদের দাবি, টিপু সুলতান ও নজরুল ইসলামের অপসারণ ছাড়া এই সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।
উপস্থিত কিছু বক্তারা বলেন, বর্তমান কলেজের প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা ও অযোগ্যতার কারণ “কলেজের পরিচালনা কমিটির ভুল সিদ্ধান্ত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নহীনতা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা টিপু সুলতান ও নজরুল ইসলামের অপসারণ দাবি করছি।”
শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে কলেজের সুষ্ঠু পরিচালনা ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানায়। মিছিলটি কলেজ চত্বর থেকে শুরু হয়ে দিঘলিয়া বাজারের চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তারা জানান, যতদিন না এই এডহক কমিটি বাতিল করা হবে এবং নতুন কমিটি গঠন করা হবে, ততদিন তারা ক্লাস বর্জন করবে। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা পড়াশোনা করতে এসেছি, কিন্তু এই কলেজের প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলার কারণে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। তাই আমরা বাধ্য হয়েছি ক্লাস বর্জন করতে।”
এদিকে, অভিভাবকগণও শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “আমাদের সন্তানেরা সুশিক্ষা পাওয়ার জন্য কলেজে আসে। কিন্তু বর্তমান কমিটির ব্যর্থতার কারণে তারা শিক্ষার পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই আমরা তাদের সঙ্গে আছি।”
বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দও বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন এবং শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান। তারা বলেন, “নবগঙ্গা ডিগ্রী কলেজ এই অঞ্চলের শিক্ষা-সংস্কৃতির অন্যতম প্রতীক। এই প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।”
বিক্ষোভ মিছিলের পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি দ্রুত সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন, “আমরা চাই শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক এবং এই ধরনের অনৈতিক কমিটি বাতিল করা হোক।” প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এখন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে উদ্বেগ আরও বাড়ছে এবং সবাই কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন।