জিহাদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ
এমনই নানা অনিয়ম আর রোগী বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে ঢিমতালে চলছে লক্ষ্মীপুর রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জাকির হোসেনকে জানিয়ে ও মিলছে না সুফল।
সরকারি হাসপাতালে সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২.৩০টা পর্যন্ত চিকিৎসকরা উপস্থিত থাকার নিয়ম থাকলেও সময় মত উপস্থিত থাকেন না অত্র হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
অভিাযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উপকূলীয় এলাকা উত্তর চরবংশীর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক না থাকায় গত ৫ জানুয়ারি প্রসব বেদনা নিয়ে
ছুটে যান রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের ভর্তি হন শারমিন বেগম (১৯) এক রোগী।যার রেজি নং ১১৯/১১৯ তাং ০৫/০১/২০২১। ঘটনার দিন( ৫ জানুয়ারি) দুপুর ১২.৩০ টার দিকে রোগীকে নিয়ে আসার প্রায় ৫ ঘন্টা পর বহু দেন-দরবার করার পর ভর্তি নেয়ার জন্যে এক নার্সকে নির্দেশ দেন নার্স আরজু।তবে কোনো চিকিৎসক না থাকায় কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে রোগীকে প্রাইভেট হাসাপাতেল নিয়ে যায় ভুক্তভোগীর পরিবার।
ভুক্তভোগী জানান, রোগীকে চেকআপ করা হবে বলে এক জোড়া হ্যান্ডস গ্লােভস ওষুধের দোকান থেকে কিনে আনার জন্যে পাঠানো হয়।আমি দ্রুত হ্যান্ডগ্লোভস নিয়ে আসার পরে জানতে পারি আমার স্ত্রীর চেকআপ হয়ে গেছে।এরপর আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে হবে বলে জনসেবা প্রাইভেট হাসপাতালে রোগীসহ আমাকে পাঠায়।রিপোর্ট নিয়ে আসার পরে 'বাচ্চার অবস্থা আশঙ্কাজনক' বলে আমাকে প্রাইভেট হাসপাতাল বা লক্ষ্মীপুরে অন্য কোনো হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন সিনিয়র নার্স আরজু।দুপুর ১টার দিকে রোগী নিয়ে আসলেও প্রায় ৫ ঘন্টা বহু দেন-দরবার করর পর ভর্তি নেয়ার জন্য বলেন একনার্সকে নির্দেশ দেন আরজু।
এদিকে রোগী 'ব্যাথায় চিৎকার চেচামেচি' করলে ব্যথানাশক ইনজেকশন পুশ করতে হবে বলে তড়িঘড়ি করতে থাকেন ওই নার্স। প্রথমে ইনজেকশন নাই বলে সাফ জানিয়ে দেন হাসপাতালের এক কর্মচারী। পরে ১'শ টাকা হাতে গুঁজে দিলে ইঞ্জেকশন বের করে রোগীকে পুঁশ করেন।'
ওই ভুক্তভোগী আরো বলেন-'দুপুর একটার দিকে রোগীকে হাসপাতালে আনার পরে কোনো চিকিৎসক ছিল না। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রদত্ত রোগীর 'হলুদ বই' দেখানোর পরেও কোন চিকিৎসককে কল করা হয়নি।'
জানা গেছে, নার্স আরজু ও কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে চিকিৎসার নামে বেনামে সাধারন অসহায় রোগীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়। যারা টাকা পয়সা দেয় তাদের চিকিৎসা আছে। যারা টাকা পয়সা দেয় না, দিতে পারে না তাদের হাসপাতাল থেকে নানা অজুহাতে ছেড়ে দেয়া হয়।
চিকিৎসা কাজে দায়িত্ব অবহেলার খবর প্রতিবেদকের কাছে আসার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প:কর্মকর্তা ডাঃ জাকির হোসেনকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি পরদিন স্বশরীরে হাসপাতাল গিয়েও তাকে দেখতে না পেয়ে আবারো একাধিকবার মোবাইল ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঘটনার এক সপ্তাহ পর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জাকির হোসেনকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়। বিস্তারিত শোনার পর তিনি বলেন-' কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
তবে ঘটনার দিন হাসপাতালে জরুরি বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক তন্ময় পালকে পাওয়া যায়। তিনি অকোপটে স্বীকার করেন যে তিনি ইমার্জেন্সির দায়িত্বরত ডাক্তার ছিলেন। তবে কোনো কথা বলতে হলে 'কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে'এমনটি সাফ জানিয়ে দিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বাহারুল ইসলাম ছুটি নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন ও মোবাইল ফোনে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy