রেখা মনি, নিজস্ব প্রতিবেদক
Facebook Twitter Instagram share
কচু আর পাটশাক খেয়ে রোজা রাখা বৃদ্ধা মহিতনকে (৮১) এক মাসের বাজার ও ঈদ উপহার দিলেন রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার।
বুধবার (১২ মে) সকালে পুলিশ সুপারের পক্ষে সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম পলাশ গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের কৈপাড়া গ্রামের ওই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে এক মাসের প্রয়োজনীয় খাবার ও ঈদ উপহার পৌঁছে দেন।
Surjodoy.com
ওই গ্রামের মৃত জাফর আলীর স্ত্রী মহিতন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, দুই ছেলে মোন্নাফ ও মনির দিনমজুরের কাজ করতেন। কয়েক বছর আগে কুমিল্লা থেকে বাড়ি ফেরার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তারা। ছোটছেলে মতিয়ার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন।
The Daily surjodoy
একমাত্র মেয়েটিও থাকেন অন্যের জমিতে। ঘরের নড়বড়ে একটি চাল। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। তখন বসে রাত কাটে মহিতনের। চালের চারদিকে দেয়া হয়েছে নেট, যাতে করে পানি ভেতরে ঢুকতে না পারে। ঘরে ভাঙা একটা চৌকি। সেটাও নড়বড়ে। শোয়ার জন্য যে কাঁথা ও বালিশ আছে সেগুলো ছেঁড়া। ঘরে চলাফেরার মতো জায়গা নেই।
The Daily surjodoy
সীমাহীন কষ্ট জীবনযাপন করলেও সরকারের মানবিক সহায়তা কিংবা ভিজিএফের কার্ড জোটেনি মহিতনের। ইফতার ও সাহরিতে খাচ্ছিলেন মানুষের দেয়া খাবার। মাঝে মাঝে কচুশাক ও পাটশাক খেয়েই রোজা রেখেছেন।
The Daily surjodoy
মহিতনের এমন দুর্দশার কথা জানতে পেরে বিস্তারিত খোঁজখবর নেন রংপুুুর জেলার পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার। পরে এক মাসের বাজার হিসেবে চাল, ডাল, লবণ, তেল, পেঁয়াজ, আলু, মুরগিসহ বিভিন্ন খাবার পৌঁছে দেন। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে সেমাই, চিনি, দুধ, মশলা, নতুন কাপড় ও নগদ সাহায্য দেন পুলিশ সুপার।
The Daily surjodoy
পুলিশ সুপারের উপহার পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধা। তিনি বলেন, ‘বড় কষ্টে আছি বাবা। জীবন আর চলে না। দুই বেটা মরি গেছে, আরেক বেটা থাকিয়াও নাই। বেটি বেঁচে খাচুং। মাইনসের থাকি খুঁজি মিলি খাং। এসপি স্যার মোর বেটার চেয়েও বড় কাম করিল। আল্লাহ তোমাগুলাক ভালে থুক।’
The Daily surjodoy
এসময় উপস্থিত লোকজন নিঃসঙ্গ এই বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ানোর জন্য এসপি বিপ্লব কুমার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ওই গ্রামের মোয়াজ্জিন আবুবক্কর বলেন, মহিতনের খুব কষ্ট। মানুষ যা দেয় সেটাই খায়। পুলিশ সুপার যে মহতী কাজ করলেন এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই।
Leave a Reply