নিরাপত্তা ঝুঁকিতে কমলাপুর ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো বা আইসিডি বন্দর। যে কেউ চাইলেই প্রবেশ করছে। নেই নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা। ঝুঁকিতে পড়েছে পণ্যের সুরক্ষা ও রাজস্ব আদায়। কাস্টমসের সিসি ক্যামেরার তার কেটে ফেলছে দুষ্কৃতকারীরা। পণ্যের ওজন মাপার মেশিনের অপব্যবহার হচ্ছে দীর্ঘদিন। বেড়েছে কারচুপি। প্রকৃত ওজনের চেয়ে ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি বেশি হয়। শুল্ক গুদামের গেটগুলো খুবই ভঙ্গুর ও নাজুক। এ তথ্য উঠে এসেছে কমলাপুর আইসিডি কাস্টমস হাউসের কার্যবিবরণীতে। এ প্রসঙ্গে কমলাপুর আইসিডি কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোবারা খানম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, কাস্টমস হাউস ঘিরে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সিসিটিভি লাগানোর পর তা থাকে না। রাত-দিন প্রচুর জনসমাগম হচ্ছে। রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকছে না। তৈরি করা হয়েছে ভুতুড়ে পরিবেশ। ওজনে কারচুপি নিত্যদিনের ঘটনা। কনটেইনার থেকে পণ্য চুরি হচ্ছে। দুষ্কৃতকারী চক্রের কাছে জিম্মি পুরো কাস্টমস হাউস। এর আগে কমলাপুর আইসিডি কাস্টমস হাউসের সঙ্গে যৌথসভা করেছে পোর্ট, রেলওয়ে, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, নিরাপত্তা দল ও আইসিডি। ওই সভার কার্যবিবরণী গত ১৫ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে দিয়েছে কমলাপুর আইসিডি কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোবারা খানম। তার স্বাক্ষরিত কার্যবিবরণীতে বলা হয়, পণ্যের ওজন মাপার ওয়ে ব্রিজ মেশিনের স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বিগ্ন কাস্টমস। মেশিন ঠিকমতো কাজ করছে না। পণ্যের সঠিক ওজন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এতে পণ্যের ওজন কারচুপির আশঙ্কা থাকে। প্রকৃত ওজনের তুলনায় ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি ওজন বেশি হয়। যথাযথ রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে পণ্য চালানের ওজন নিশ্চিত করা জরুরি। যদিও ওজন মাপার ওয়ে ব্রিজ মেশিন দুটি স্থাপনের পর দীর্ঘদিন অপব্যবহার কিংবা কম ব্যবহার হওয়ার কারণে বেশ কিছু দিন অচল ছিল। কাস্টমস হাউসের পক্ষ থেকে ১০ বার পত্র দিলেও বন্দরে অটোমেশন স্লিপ বা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার ওজন মেশিন স্থাপন করার উদ্যোগ ও কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে। কার্যবিবরণীতে বলা হয়, বন্দর সংরক্ষিত বন্ডেড ও নিরাপদ এলাকা হলেও অবাধে মানুষজন চলাফেরা করেন। এ ধরনের অবাধ চলাফেরা পণ্যের সুরক্ষা, রাজস্ব আদায় কার্যক্রমের জন্য যথাযথ নয়। সব সময় অযাচিত লোকজনের ভিড় জমে। সিসি ক্যামেরার পরিধি বাড়াতে গেলে দুষ্কৃতকারীরা তার কেটে ফেলছে। ওই কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়, শুল্ক গুদামের গেটগুলো খুবই ভঙ্গুর ও নাজুক অবস্থায় আছে, যা খোলার অনুপযোগী। কমলাপুর আইসিডিতে বাণিজ্যিক পণ্য আমদানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় এবং শতভাগ কায়িক পরীক্ষার মাত্রা অধিক। এ জন্য একটি পণ্য পরীক্ষণ শেড করার জন্য ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ রেলওয়েকে বলা হলেও তা করা হয়নি।