নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতিতে নামধারী এক দালালের মাধ্যমে ১৩ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি স্কুলছাত্র আশিক শরীফের (১৮)। কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বাধীন র ঘানি টানতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আশিককে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে ওই দালালের মাধ্যমে নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুনকে দশ হাজার টাকা ঘুষ দেয়ার ঘটনার একটি অডিও ফাঁস হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
আশিক উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের আকবর শরীফের ছেলে ও কলাবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অনিয়মিত ছাত্র।
আশিক ও তার পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে নড়াগাতি থানায় অভিযোগ করতে গেলে কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা ছাড়াই গত ২৩ ডিসেম্বর আশিক শরীফকে আটক দেখায় থানা পুলিশ। আর তাকে ছাড়িয়ে আনতে আশিকের প্রতিবেশী রিয়াজুল ইসলাম নড়াগাতি থানার ওসিকে ঘুষ দেওয়ার নামে আশিকের মায়ের কাছ থেকে ১৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।
এদিকে, পুলিশ কোনো লিখিত অভিযোগ ছাড়াই পরদিন আশিককে ‘আক্রোশবশত হামলার চেষ্টা বা সন্মানহানির চেষ্টায় ৩৫৫ ধারার অপরাধ’ দেখিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনে হাজির করে। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আশিককে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়। ১৫ দিন জেল খাটার পর গত ৭ জানুয়ারি আশিক মুক্তি পায়। বাড়ি ফিরে টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে রিয়াজুল ইসলাম জানায়, ১৩ হাজার টাকার মধ্যে দশ হাজার টাকা ওসিকে দিয়ে মোবাইল কোর্ট করানো হয়েছে। কোনো মামলা করানো হয়নি। বাকি টাকার মধ্যে তদন্তের দায়িত্বে থাকা কবিরকে ৫০০, ওসি তদন্তকে দুই হাজার ও ৫০০ টাকা আশিকের নাস্তা বাবদ খরচ হয়েছে। এছাড়া বাকি টাকা দিয়ে মোটরসাইকেলের তেল কিনেছেন। এ সংক্রান্ত অডিও কথোপকথন ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
তবে আশিককে থানা থেকে মুক্ত করে দিতে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুন। তবে আশিককে কেন আটক করা হলো এবং মোবাইল কোর্টে পাঠানো হলো সে বিষয়ে তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।