প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৯, ২০২৪, ৪:২৫ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ১, ২০২০, ৬:০৬ পি.এম
নড়াইলের স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব আম রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে
উজ্জ্বল রায় (নড়াইল জেলা) প্রতিনিধি।।
নড়াইলের স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব আম রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে।মিশ্র আমবাগান করে সফল হয়েছেন বর্গাচাষি বিল্লাল মীর (৩৫)। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চরবগজুড়ি গ্রামে প্রায় ১৫ একর জমি লিজ নিয়ে লাগিয়েছেন বিভিন্ন জাতের আম। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব আম রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে প্রতিদিন। ইতোমধ্যে এলাকায় সফল আমচাষি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, এদিকে, কৃষক বিল্লাল মীরের আমবা গানটি এলাকার মানুষ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন। এ ছাড়া সরকার ঘোষিত নিরাপদ ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখছেন তিনি। বিল্লাল মীর জানান, কৃষিকাজের পাশাপাশি প্রথমে এক হাজার চারা লাগিয়ে আমবাগান শুরু করেন তিনি। আমবাগানের এই যাত্রাটা শুরু করেছিলেন প্রায় ১৪ বছর আগে। প্রথম বছর আমবাগানের সফলতায় ধীরে ধীরে বেড়েছে এর পরিধি। বর্তমানে ১৫ একর জমিতে চারটি আমবাগান গড়ে তুলেছেন বিল্লাল মীর। এখানে পাঁচ হাজার আমগাছ রয়েছে। এসব গাছে গুটি, চুষা, গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, হাড়িভাঙ্গা, আম্রপালি, ফজলি, আশ্বিনীসহ ১৬ প্রকার আম ঝুলছে থোকায় থোকায়। বিল্লাল মীর বলেন, চাষাবাদের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আমবাগানে লোকসান গুনতে হয়নি। তবে এ বছর ঘূর্ণিঝড় আমফানে প্রায় ২০ লাখ টাকার ৮০০ মণ কাঁচা আম পড়ে বেশ ক্ষতি হয়েছে। তবুও ভালো ফলন হওয়ায় খরচের দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন তিনি। এ বছর প্রায় ৫০ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন বলে জানিয়েছেন বিল্লাল মীর। এক্ষেত্রে গাছের পরিচর্যা, শ্রমিকমূল্য, বাজারজাতকরণসহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয় হবে। গত ৯ জুন থেকে পরিপক্ক আম বাজারজাত শুরু করেছেন তিনি। আরো অন্তত এক মাস এই আম বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বিল্লাল মীর। এই আমের বড় বাজার মূলত ঢাকার কারওয়ান বাজার বলে জানান তিনি। তার এই দৃষ্টিনন্দন আমবাগানটি দেখলে মানুষ আরো বেশি উৎসাহিত হবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ছাড়া বিল্লাল মীর আরো ৩০ একর জমি লিজ নিয়ে ধান, ভুট্টা, ডাল এবং কলা চাষাবাদ করে থাকেন। এসব আমে কোনো প্রকার বিষ বা ফরমালিন দেয়া হয় না বলেও নিশ্চিত করেছেন বাগানমালিক বিল্লাল মীরসহ এখানকার শ্রমিকেরা। তাই এখানকার আমের ভালো চাহিদা রয়েছে বলে জানান স্থানীয় ক্রেতারা। সুবিশাল এই আমবাগানটিতে ঘুরতেও আসেন অনেকে। সঠিক ভাবে পরিচর্যার জন্য রাজশাহী অঞ্চলের নয়জন শ্রমিক সারাবছর আমবাগানটি দেখাশোনা করেন। এ ছাড়া আমের ভরা মওসুমে বর্তমানে ২০জন শ্রমিক কাজ করছেন। এমনটিই জানিয়েছেন এই বাগানের বারোমাসি শ্রমিক রাজশাহীর আবু সুফিয়ান। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নড়াইলের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় জানান, কৃষক বিল্লাল মীরের আমবাগানটি এলাকার অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। ক্ষতিকর কীটনাশক পরিহার করে জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকার ঘোষিত নিরাপদ ফল উৎপাদনেও ভূমিকা রাখছেন তিনি। এ ছাড়া রাজশাহী অঞ্চলের দক্ষকর্মী দিয়ে এই আমবাগানটি পরিচর্যা হয়ে থাকে। তাই প্রতিবছরই লাভের মুখ দেখছেন বাগানমালিক। এ বছর প্রায় ৫০ লাখ টাকার আম বিক্রির আশা করছেন বর্গাচাষি বিল্লাল মীর। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিল্লাল মীরের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে অষ্টম এবং মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছোট মেয়ের বয়স দেড় বছর। আগে বিদেশ থাকলেও জন্মভূমিতে এসে কৃষিকাজে ঝুঁকে পড়েন। প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন তিনি।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy