উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ করোনা উপসর্গ নিয়ে নড়াইল সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার ডা: মোঃ ইয়ানুর হোসেন বৃহস্পতিবার রাতে ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৫ বছর। ডা: মোঃ ইয়ানুর হোসেন নড়াইল পৌরসভার মাছিমদিয়া এলাকার মো: ইউনুস শেখের ছেলে। নড়াইল জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই প্রথম কোনো ডাক্তারের মৃত্যু হলো।
নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মশিউর
রহমান বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ডা: ইয়ানুর হোসেন গত কয়েকদিন যাবত জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ও গলাব্যাথাসহ করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ্য ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি নড়াইল সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দিনগত রাত ১০ টার দিকে তিনি মারা যান।ডা: মোঃ ইয়ানুরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান আরএমও ডা: মশিউর রহমান বাবু।
এদিকে নড়াইল সদর হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়েছে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুকালে ডা: ইয়ানুর স্ত্রী ও এক ছেলে সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।শুক্রবার সকালে জানাযা শেষে তাকে নড়াইল শহরের পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
[…] উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি কবে আলোর মুখ দেখবে সুলতান সংগ্রহশালার ঘাট ? এ প্রশ্ন সুলতান ভক্তদের। কারণ, উদ্বোধনেই থমকে আছে সংগ্রহশালার ঘাট নির্মাণের কাজ। এসএম সুলতান সংগ্রহশালার পাশে চিত্রা নদীর পাড়ে ‘ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ’ ঘিরে এই ঘাট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে কাজ বেশি দুর এগোয়নি।. সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এসএম সুলতানের ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ তথা দ্বিতলা নৌকাটি চিত্রা নদীর পাড়ে যথাযথ ভাবে সংরক্ষণসহ পর্যটক আকর্ষণীয় করতে ২০১৮ সালের জুনে দৃষ্টিনন্দন ‘সুলতান ঘাট’ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কয়েকটি পিলার ঢালাইয়ের মধ্যদিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করা হলেও তা বেশি দুর এগোয়নি। নক্সা পরিবর্তন ও আর্থিক সমস্যায় প্রায় দু’মাস পরেই নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ কাজের জন্য প্রায় ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পিলারের চারপাশে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। রডগুলো বেরিয়ে আঁকাবাকা হয়ে গেছে। এমনকি রডগুলো এলোমেলো অবস্থায় ছড়িয়ে থাকায় দর্শনার্থীসহ স্থানীয়দের জন্য বিপদের কারণ হয়েছে। এছাড়া ঝোপঝাড়ে একাকার হয়ে আছে। এ অব্যবস্থাপনার কারণে পর্যটকদের মনে হতে পারে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এসএম সুলতানের ‘ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ’। এমনটিই জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও বর্তমানে করোনাকালে দুর-দুরান্তের পর্যটকদের তেমন একটা দেখা নেই। তবে ঈদ আনন্দে অনেকে দেখতে এসেছেন সুলতান সংগ্রহশালাসহ দ্বিতলা এই নৌকাটি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, বড় পরিসরে সুলতান সংগ্রহশালার ঘাট নির্মাণসহ ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গটি মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ কারণে অর্থের পরিমাণও বেড়ে গেছে। ঘাটটিকে দৃষ্টিনন্দন ও বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় ২ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। এজন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত বিভাগে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি এই অর্থবছরেই বরাদ্দ পেয়ে যাবো। এরপর কাজ শুরু হবে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এসএম সুলতান তার জীবনদ্দশায় চিত্রা নদীতে শিশুদের নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গে। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থের ইঞ্জিনচালিত দ্বিতলা নৌকাটি (ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ) সুলতান তার নিজের অর্থে তৈরি করান। প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছিল। সুলতানের মৃত্যুর পর চিত্রা নদীর পাড়ে তুলে টিনের ছাউনির নিচে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় দ্বিতলা নৌকাটি। তবে যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে নৌকাটি ধীরে ধীরে সৌন্দর্য হারিয়েছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বার্ধক্যজনিত কারণে ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। করোনা সংকটের কারণে এ বছর জন্মদিনে (১০ আগস্ট) বর্ণাঢ্য আয়োজন থাকছে না বলে এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। […]