একেএম বজলুর রহমান, পঞ্চগড় প্রতিনিধি :
ঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার আব্দুল মজিদের নামে এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে জমি দখলের মামলা দিয়ে নিরীহ কৃষকদের হয়রানিসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। েতার বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যনসহ জন প্রতিনিধিদের কাছে একাধিক অভিযোগ করেও কোন প্রকার প্রতিকার পায়নি বলে জানান ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীরা অবশেষে তদন্তসাপেক্ষে প্রতিকার চেয়ে ভূমিমন্ত্রী, দূদক মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে গণঅভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরেও দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। নিজের অপকর্মকে আড়াল করতে স্ত্রী কহিনুর বেগমের নামে চা বাজারজাতকরণ কোম্পানী, কাপড়ের দোকানসহ রয়েছে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ব্যবসায়ী পরিচয়ের আড়লে তিনি মুলত জমি জালিয়াতিসহ নানা অপকর্মে জড়িত। কৌশলে স্থানীয়দের ফাসিয়ে বিপদে ফেলে তাদের নানাভাবে হয়রানিসহ এক পর্যায়ে তাদের কাছেই অর্থ আদায় করেন। অভিযোগে বলা হয়, আব্দুল মজিদ স্থানীয় ঈদগাহ, মসজিদ,মাদরাসা এবং সরকারি ক্লিনিকের জন্য অন্যের দানকৃত জমির ভূয়া দলিল তৈরি করে মালিকানা দাবি করেন। একাধিক কৃষক পরিবারের বসতভিটা নিজের দাবি করে মামলা করেন। নারীঘটিত বিভিন্ন বিষয়ে কৌশলে ঝগড়া সৃষ্টি করে তৃতীয় পক্ষ সেজে আর্থিক ফায়দা হাসিল করেন। সড়কের পাশে সরকারি খাস জমি দখল করে নিজে মালিক সেজে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে স্থানীয়দের বরাদ্দ দেন। শালবাহান রোড বাজারের মুল্যবান সরকারি জায়গায় অবস্থিত দোকানের পাশের জায়গাও বিক্রি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান স্থানীয় প্রভাবশালী ও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এমন অপকর্ম করে চলেছেন। নিরিহ কৃষকদের জমি সংক্রান্ত প্যাঁচে ফেলে সুযোগ বুঝে তিনি তাদের কাছেই মোটা অংকের টাকা আদায় করেন। এসব অপকর্মের ফলে অল্প দিনেই অঢেল সম্পদের মালিক হয়ে যান আব্দুল মজিদ। তবে মামলা এবং অযথা হয়রানির ভয়ে প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে কথা বলতে কেউ সাহস পান না। কান্না জড়িত কন্ঠে মজিদের অপকর্মের বর্ণনা দেন শালবাহান রোড এলাকার শ্রমজীবী নারী আয়েশা খাতুন (৫২) তিনি জানান, তার ক্রয়কৃত ১০ শতক বসতভিটার উপর মজিদের চোখে পড়ে। এরপর তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন। ৪০ বছর আগে স্বামীহারা এই নারী নিজেই আয় করে মজিদের সাথে মামলা পরিচালনা করেছেন। নিম্ন আদালতে রায় পেলেও মুক্ত হতে পারেননি মজিদের কবল থেকে। স্থানীয় বাসিন্দা আহম্মদ আলী নামে এক পুলিশ সদস্য বলেন, আমি স্থানীয় এক জনের কাছে বাড়ির জমি কিনেছিলাম। সমুদয় টাকা পরিশোধ নিয়ে তিনি রেজিস্ট্রি করে দেন। এরপর সেখানে থাকা তার ঘর সরিয়ে নিতে বিক্রেতা টালবাহানা শুরু করেন। ঘর সরিয়ে নিতে তিনি অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। আমি বাড়তি টাকা দেই ঘর সরিয়ে নেওয়ার জন্য। এরপর পরও তিনি সেখান থেকে ঘর সরিয়ে নিয়ে আমাকে জমিটি দখলে দেন নাই। পরে আমি নিরুপায় হয়ে উচ্ছেদ মামলা করি। দেড় বছর ধরে ঝুলছি। এক পর্যায়ে জনতে পেরেছি, এসব ঘটনার পেছনে ইন্ধনদাতা আব্দুল মজিদ। তিনি জমি বিক্রেতার আত্বীয়। মাঝিপাড়ার শালবাহান রোড জামে মসজিদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লা হেল বাকী (৭৫) জানান, এই মসজিদের জমি স্থনীয় এক ব্যক্তি দান করেন। কিন্তু গোপনে ভূয়া কাগজপত্র বানিয়ে আব্দুল মজিদ এখন এই মসজিদ ও ঈদগাহের জমিও তার কবলে নিয়েছেন। মসজিদ এবং ঈদগাহের জমি নিজের দাবী করে তিনি আমাদের নামাজে আসতেও বাঁধা দিচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের কাছে অনেক অভিযোগ করেছি। তিনি কারো কথায় কর্ণপাত করেন না। আমরাও এর কোন প্রতিকার পাইনা। আমরা তার এমন অনৈতিক কর্মকান্ডের তদন্ত করে বিচার দাবি করছি। একই ধরণের অভিযোগ করেন ওই এলাকার শামসুল হক, আবুল হোসেন, আহম্মদ আলী ও আব্দুল মান্নানসহ শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা। মজিদেও কর্মকান্ড নিয়ে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য গণঅভিযোগ দাখিল করেন তারা। এদিকে আব্দুল মজিদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, যারা আমার নামে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন এই অভিযোগগুলি সম্পুর্ন মিথ্যা।আমার কাছে সব দলিলপত্র রহিয়াছে। আমাকে অভিযোগকারিরা বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল মান্নান বলেন, তেঁতুলিয়ার শালবাহান রোড এলাকার আব্দুল মজিদ নামে এক জনের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা তদন্তে অভিযোগটি তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মর্কতার কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy