বাবু চৌধুরী -বিশেষ প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে (৯)টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে (৩)টি ভোট কেন্দ্রে প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনী সহিংসতায় আব্দুল মাবুদ (৫২) নামের একজন নিহত ও প্রায় ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রবিবার সকাল ৮টায় নির্বাচন শুরু হয়, সকাল ১১:৩০ মিনিট নাগাদ ৮নং ওয়ার্ড এর ভোট কেন্দ্রে পশ্চিম দিক থেকে কে বা কারা অতর্কিত ভাবে গুলি ছুটতে ছুটতে এক পর্যায়ে ভোট কেন্দ্র ঢুকে অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। সে হামলায় ভোট কেন্দ্রের ভাইরে (১)জন কে পেটে চুরি আগাত করে হত্যা করে ও (৫) জন আহত হয়েছে। মৃত ব্যাক্তি বর্তমান কাউন্সিলর আবদুল মন্নানের ছোট ভাই আবদুল মাবুদ বলে মন্নান কমিশনার এর মেয়ে জানান। সে ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে, আটককৃত’রা হলেন `বর্তমান কাউন্সিলর ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবদুল মন্নান এবং উট পাখি মার্কা কাউন্সিলর পদপ্রার্থী সরওয়ার কামাল রাজীব। পটিয়া পৌর নির্বাচন কে কেন্দ্র করে ৬নং ওয়ার্ড পাইকপাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ে দুপুর নাগাদ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী রুবেল দাশ বাবু এবং উট পাখি মার্কা’র কাউন্সিল পদপ্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর সফি’র সমর্থক দের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ইট পাক্কেল ছুটতে থাকে, পরিস্থিতির আবনতি ঘটতে দেখে সেখানে দ্রুত বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ লাঠি চার্জ করে, সেখানে পটিয়া উপজেলা যুবলীগের সদস্য জাবেদ সরোয়ার সহ দায়িত্ব পাপ্ত একাধিক নেতা কর্মী আহত হয়। এরি মধ্যে সকাল ৭ টা নাগাদ পটিয়া পৌর ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবদুল খালেক কে অপহরণ করছে বলে যানাযায়। পরবর্তীতে নির্বাচনের দিন রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ কাউন্সিলর আবদুল খালেক কে খুজে পাওয়া যায় বলে জানাযায়। সে ঘটনার সত্যতা জানতে অপহৃত আবদুল খালেক এর বাসভবনে উপস্থিত হয়ে জানা যায়, নির্বাচনের দিন সকালে নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে নামাজ পড়তে যান, নামাজ পড়ে বের হইতে একটি প্রাইভেট কারে করে থাকে চার জন যুবক তার আসার পথ আটকিয়ে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে ওঠায়, নির্জন এক স্থানে তাকে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাকে চুখে কালো কাপড় বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তাকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। এক পর্যায়ে তাকে ১১:৩০মিনিট নাগাদ একটা ফোন আসে এবং তাকে একটা সিএনজি করে উড়িয়ে দেয় এবং আবদুল খালেক ঘরে চলে আসে এবং অপহত ব্যাক্তির কাছথেকে ১লক্ষ ৯৬ হাজার ১শত ১০টাকা পকেট নিয়ে ফেলে বলে অভিযোগ করেন। অন্যদিকে পটিয়া পৌর ২নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঞ্জীব কুমার ও বর্তমান কাউন্সিলর রুপক সেন এর মধ্যে ভোট নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়, রুপক সেন অভিযোগ করে বলেন আমার পরিচিত ভোটারদের জোর পূর্বক ভাবে কেন্দ্রে থেকে বাহির করে দিচ্ছে, ৬নং পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে নাজমুল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে ফিঙ্গার প্রিন্ট দেয়ার পর জোর পূর্বক অন্য প্রতীকে ভোট দিয়ে দেয়ার অভিযোগ করেন। ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ সাইফুল ইসলাম ও আবছার উদ্দীন সোহেল অভিযোগ করেন বহিরাগতরা বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে কেন্দ্রের চারপাশে অবস্থান নেয়ায় ভোটরারা আতঙ্কে ও ভয়ের মধ্যে রয়েছে বলে অভিযোগ করেন, তবে উক্ত কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ সোহরাব হোসের জানান, ভোটারদের ভয়-ভীতি এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ কোন প্রার্থী আমার কাছে কেউ করেনি বলে জানান। কিছু কিছু ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষণীয় এরমধ্যে ২নং ওয়ার্ডের সুচক্রদন্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র, ৪নং ওয়ার্ডের পশ্চিম পটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র, ৪নং ওয়ার্ডের শেয়ানপাড়া আবদুল খালেক আমিরিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুয়াদন্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে প্রচুর ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে। সুচক্রদন্ডী এলাকার রবিউল হোসেন জানান, আমি বিগত দুই নির্বাচনের মধ্যে এই ধরণের উৎসব মুখর পরিবেশে শত শত ভোটারদের উপস্থিতিই নির্বাচন আর দেখেননি বলে জানান।
এছাড়াও জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শামশুল আলম মাস্টার ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব আলী হোসাইন নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়ম কারচুপি ও জোর পূর্বক নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট নেয়ার অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন দুপুরে।
এ বিষয়ে পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনের রির্টানিং অফিসার আরাফাত হোসাইন বলেন, কিছু কিছু ভোট কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, যেখানে কোন অনিয়মের খবর পাওয়া গেছে, সেখানে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, সব মিলে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে আইয়ুব বাবুল বেসরকারি ভাবে পটিয়া পৌরসভা মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন, নব-নির্বাচিত আইয়ুব বাবুল বলেন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে, ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষনীয় বলে তিনি জানান।