সোহেল রানা,স্টাফ রিপটার
পটুয়াখালিতে সংবাদ সংগ্রহকালে মাছরাঙা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি চিনময় কর্মকার ও বাংলাভিশনের জেলা প্রতিনিধি কে. এম শাহাদাৎ হোসেনকে লাঞ্ছিত করেছেন জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মো. আকরাম শিকদার।
পটুয়াখালীতে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী পুরাতন টাউন হল ও পটুয়াখালী ড্রামাটিক ক্লাবের প্রবেশ পথ দখল করে স্টল নির্মাণের বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গোটা শহরে প্রতিবাদের ঝড় চলছে।
ইতোমধ্যে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে স্টল নির্মাণ বন্ধ ও টাউনহলটির পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য। এ ঘটনার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসাবে শুক্রবার সকালে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন পালন করেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ধ্রুবতারা ইউথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দরা।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে অংশ নেন শহরের সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ। মানববন্ধনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, এই ড্রামাটিক ক্লাবের মঞ্চ ও টাউন হল পটুয়াখালীর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিকাশের স্বাক্ষী। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল শত বছরের ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার চক্রান্তে এর প্রবেশ পথ দখল করে স্টল নির্মাণ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এখানে স্টল নির্মাণ বন্ধ ও অবৈধ দখল মুক্ত করে শহরের ঐতিহ্য রক্ষায় এই হল ও মঞ্চটি সংস্কারের উদ্যেগ নেয়ার জন্য মানববন্ধন থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানানো হয়।
এদিকে মানববন্ধন শেষে এ বিষয়ে সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহের জন্য টাউন হলের সামনে ভিডিও করতে গেলে মাছরাঙা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি চিনময় কর্মকার ও বাংলাভিশনের জেলা প্রতিনিধি কে, এম শাহাদাৎ হোসেনকে লাঞ্ছিত করেন ঐ এলাকার সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মো. আকরাম শিকদার ও তার পক্ষের লোকজন।
স্টলের ভিডিও ধারণ করতে নিষেধ করে উল্টো তার পক্ষের লোকজনকে দিয়ে ওই সংবাদকর্মীর ভিডিও ধারণ করে মোবাইলে। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করা হয় সংবাদকর্মীদের।
এর আগে অন্য সংবাদকর্মীরা ভিডিও করতে গেলে তাদেরকে চাঁদাবাজি মামলা করার হুমকী দেয়া হয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং শুক্রবার রাতে এ ব্যপারে প্রেসক্লাবে জরুরী মিটিংয়ের আয়োজন করা রয়েছে।
অপরদিকে দুই সংবাদকর্মীকে লাঞ্চিত করার ঘটনায় গোটা জেলার সকল সংবাদকর্মীরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। জানতে চাইলে জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন জানান, এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
জেলা যুবদলের সাথে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের একটি সুন্দর ও ভাল সুসম্পর্ক রয়েছে। সেখানে কোন নেতা যদি এহনও কাজ করে থাকে তবে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে এবং সেটা যুবদল নেবে না।
আর অভিযুক্ত জেলা যুবদলের সহসভাপতি আকরাম শিকদার জানান, “আমি কিছু করিনাই সেখানে কিছু ব্যবসায়ী ছিল তারা ওই দুই সাংবাদিকের ভিডিও করেছে। হইলে তাদের সাথে কিছু হয়েছে।”
এদিকে টাউন হলের সামনে স্টল বরাদ্ধের প্রতিবাদে শনিবার শহরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ স্মৃতি পাঠাগারে জরুরী বৈঠকে বসে পরবর্তী বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে বলে জানা যায়।