উম্মে হান্না লিয়া,পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালী জেলার একমাত্র পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি,জেলার বিদ্যুৎ লাইন সরবরাহের সব কার্য এখান থেকে হয়।একাধিক ঠিকাদার এ বিষয়টি অকপটে স্বীকারও করেন, তারা বলেন আসলে এলাকার কিছু গন্য মান্য ব্যাক্তিরা টাকা তুলে আমাদের লেবারদের থাকা খাওয়ার কিছু খরচ দেন। আপনারা যেহেতু বিদ্যুৎ অফিস থেকে বিল নিচ্ছেন তো সেক্ষেত্রে এলাকার সাধারণ মানুষের টাকা কেন নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের সরাসরি কোন উত্তর না দিয়ে দায় সারা জবাব যে,টাকাতো আমরা একারা নেই না। সকল ঠিকাদার নিয়ে থাকে তাই আমরা নেই।
এলাকার সাধারণ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অভিযোগ এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল টাকা তুলছে টাকা নাদিলে আমরা লাইন পাবনা তাই শত কস্ট হলেও আমাদের টাকা দিতে হয়। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে টাকা তোলার একাধিক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন আমরা যে টাকাটা তুলি তার সিংহভাগ বিদ্যুৎ অফিসের প্রকৌশলীদের দিতে হয়। না দিলে বছরের পর বছর লাইনের জন্য বিদ্যুৎ অফিসে ঘুরতে হয়। এর সব কিছুর সত্যতা পাওয়া যায়।
গত ১৮ ই জুলাই ২০১৯ মির্জাগঞ্জ উপজেলার আমরাগাছিয়ায় জনৈক নজরুল ইসলাম একটি আবেদন করেন তাতে উল্লেখ রয়েছে একটি নতুন খুটি দিয়ে তার বাড়ীতে সংযোগ দেয়ার জন্য কিন্তু, অদৃশ্য কারনে এক বছর অতিবাহিত হলেও আলোর মুখ দেখেনি সেই আবেদন,নজরুল বলেন ইঞ্জিনিয়ার শান্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে প্ল্যান নিয়ে আসলেও টাকা না দেয়ার কারনে তার সংযোগটি আজও আলোর মুখ দেখেনি।
এ বিষয় মুঠোফোনে শান্তর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে ঐ ব্যাক্তি আমার সাথে যোগাযোগ করেনি, করলে হয়ত এতদিনে তার সংযোগটি পেয়ে যেত। টাকা পয়সা কত লাগবে এমন প্রশ্নের জবাবে,তিনি বলেন আপনি অফিসে এসে সরাসরি কথা বলেন আপনার খুঁটি পাশ হয়ে যাবে।
এদিকে সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নে জনৈক সাবেক মেম্বার লতিফ সিকদার ২০১৫ সাল থেকে ঐ এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা তোলেন, এমনকি সেখানে এখন পর্যন্ত কোন সংযোগ দেয়া হয়নি, বর্তমানে বিদ্যুৎ এর খুটি বসানোর কাজ চলমান। কিন্তু এখন তিনি পুনরায় আবারও ঘর প্রতি ১১০০ টাকা দাবী করেন,তার প্রতারনায় অতিষ্ট এলাকাবাসী।
এ বিষয় লতিফ সিকদার এর কাছে জানতে চাইলে টাকা অফিসের কাকে দিতে হয়, এমন প্রশ্নের সরাসরি কোন উত্তর না দিয়ে কৌশলে এরিয়ে যায় এবং বলে বাংলাদেশের কোন অফিসে টাকা ছাড়া ফাইল লরে। আপনি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কে? এমন প্রশ্নের সরাসরি কোন উত্তর না দিয়ে বিষয়টি এরিয়ে যায় । ভুক্তভোগীরা বলছে এখন পুনরায় আবারও কিছু টাকা চাচ্ছে ঐ চক্রটি। অফিসের টাকা পরিশোধ হয়নি বলে লাইন পাশ হয়নি এমনটা জানায় ঐ দালাল। শুধু পটুয়াখালী সদর উপজেলাই নয়।
জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এমন চিত্র অব্যাহত রয়েছে। আর এ কাজে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষমতাশীল একটি চক্র রয়েছে। এ চক্রের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, এ টাকার একটি বড় অংশ উপর লেভেলে দিতে হয়, অপর একটি অংশ লাইন পাশ করার জন্য পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে দিতে হয় আমরাতো কিছুই পাইনা, এই যা চা পান খরচ আর অফিসে যাতায়াত করার খরচ হয় মাত্র।এর বেশি কিছু না
তারা আরও বলেন, এ বিষয় আমাদেরকে কেন ধরেন পারলে অফিসে গিয়ে তাদেরকে ধরেন যাতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী শুধু মিটারের টাকা জমা দিয়ে নতুন সংযোগ পেতে পারি। এ সকল অভিযোগের বিষয় জানতে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মনোহর কুমার বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে আংশিক স্বীকার করে বলেন,আসলে আমাদের অফিসের কোন লোক এ টাকা নেয়ার সাথে জরিত না থাকলেও বিভিন্ন এলাকায় একটি চক্র বিদ্যুৎ এর নামে কিছু টাকা নিচ্ছে বলে ইতিমধ্যে কিছু অভিযোগ পাওয়ায় আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় এ চক্রের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ টি মামলা চলমান, নতুন কোন অভিযোগ পেলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিবো।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ঠিকাদারি কিছু প্রতিষ্ঠান টাকা তুলছে বলে অভিযোগ পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী তাদেরকে কালো তালিকাভূক্ত করেছে এবং নতুন কোন অভিযোগ পেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। জেলা বাসী বলছে বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আমরা শুধু মিটারের টাকা জমা দিয়ে নতুন সংযোগ পেতে চাই কোন দালালের মাধ্যমে নয়। সচেতন মহল মনে করছে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি শুরুতে ভালো থাকলেও বর্তমানে ঘুষ বানিজ্যে জরিয়ে পরছে তারা।
আর এ কাজে সহযোগিতা করেন খোদ এলাকার একটি কুচক্রী মহল। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া না হলে সরকারের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে বাধাগ্রস্ত হওয়া সহ অনেকেই বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত হবে।গ্রামের অসহায় মানুষ গুলোকে অন্ধকারে থাকতে হবে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy