নিরেন দাস,জয়পুরহাটঃ-
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে তুলসীগঙ্গা নদী খননের সময় ব্রিজের তলদেশ থেকে অতিরিক্ত মাটি তোলায় ব্রিজটির পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ পিলার ফাটলের পরে ৪২ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যার ফলে ঢাকা,বগুড়া,রংপুর,হিলি,গাইবান্ধা ও কামদিয়া বাইপাস সড়কের সকল প্রকার পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ।
দৈনিক সূর্যোদয় সরজমিনে গিয়ে দেখতে পায় নদীর ব্রিজ টি ঝুঁকিপূর্ণ হবার ফলে নদী পারাপারের জন্য ব্রিজের নিচ দিয়ে মাটি ভরাট করে এপারওপারের সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য ব্যবস্থা করা হলেও যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন পারাপার হতে পারছে না। ফলে বিকল্পপথে প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে দুই গ্রামের মানুষদের এতে চরম বিভ্রান্তিতে পরেছে তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা-গেছে, শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি ধরে রাখতে পারে ও বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি গুলো দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য পাঁচবিবির তুলসীগঙ্গা নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নদী খননের কাজ চলছে। খনন চলাকালে ব্রিজের তলদেশ থেকে অতিরিক্ত মাটি তোলায় ব্রিজের ফাটল ধরেছে। ব্রিজটির পিলারে ফাটল দেখা দিলে তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি, দায়িত্ব-হীনতাকে দায়ী করে এ এমন অবস্থা থেকে মুক্তি চান দুই গ্রামের মানুষেরাসহ নানা অঞ্চল থেকে আসা বিভিন্ন চালক ভুক্তভোগীরা।
ওই এলাকার বেশ কয়েকজন স্থানীয় ও পথচারীরা দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন, দানব আকৃতির ৩ টি ভেক্যু মেশিন দিয়ে তুলসীগঙ্গা নদীর ব্রিজটির নিচের তিনটি পিলারের গোঁড়া থেকে মাটি খনন করা হয়। এ কারণে পিলারের গোঁড়া দেবে গিয়ে গোঁড়ায় বিশাল একটি ঝুঁকিপূর্ণ পাটল দেখা দিলে ব্রিজটির উপর দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পাঁচবিবি উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয় এলাকার বাসী ও জনপ্রতিনিধিরা দৈনিক সূর্যোদয় কে বলেন, নদীটি খননকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের নদীটির পাশে মসজিদ ও মাদ্রাসা রয়েছে উল্লেখ করে আমরা ওই ব্রিজের তলদেশ থেকে মাটি না কাটার জন্য অনুরোধও করা হয়েছিল। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা আমাদের পক্ষ থেকে জানানো অনুরোধ টি না রেখে। তাদের ইচ্ছে মতে নদীটির মাটি খনন করেই চলেছে।
ব্রিজটির পিলার ফাটলের জন্য , ট্রাকচালক,বাসচালক,অটোরিকশা ও ভ্যানচালকসহ দুই গ্রামের মানুষেররা দৈনিক সূর্যোদয় কে বলেন, ব্রিজটি চরম ঝুঁকিতে থাকাই প্রশাসন বন্ধ ঘোষনা করে। বালি-মাটি দ্বারা তৈরি পথ দিয়ে যাতায়াত করা আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে এমনকি আমাদের মতো কারো পক্ষেই সম্ভব হচ্ছে না। ব্রিজটির বন্ধের ফলে ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে জয়পুরহাট জেলা শহর হয়ে তারা যানবাহন নিয়ে চলাচল করছে এবং তাদের খরচ ও সময়ও বেশি ব্যয় হচ্ছে।
জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাদেুল ইসলাম দৈনিক সূর্যোদয় কে বলেন, প্রকল্পের স্বার্থে নদীর ব্রিজের আগে একটা রিং বাঁধ দিয়েছিলাম, কিন্তু পানির প্রবল স্রোতে সে রিং বাঁধ ভেঙে ব্রিজের পিলারে আঘাত করলে পুরাতন ব্রিজের পিলারগুলি ইটের গাঁথুনিতে তৈরি করাই পানির স্রোতে সেগুলোতে ফাটল দেখা দেয়।
পরে বিষয়েটি নিয়ে জয়পুরহাট (এলজিইডি"র) নির্বাহী প্রকৌশলী আলাউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক সূর্যোদয়কে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে তুলসীগঙ্গা নদী খননের কাজ হচ্ছিল।
এতে করে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি-গাইবান্ধার কামদিয়া সড়কের ফিচকা ঘাট ব্রিজটির পিলারে ফাটল দেখা দিলে তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এবং তা দ্রুত নির্মাণ করাসহ সংস্কারের জন্য আমরা ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিচ্ছি।