খুলনা প্রতিনিধ
খুলনার পাইকগাছা পৌর বাজারে মরা গরু জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।গত ২২-শে এপ্রিল ২০২৩ ঈদুল ফিতরের আগের দিন শুক্রবার দুপুরের পরে রেহেনা বেগম নামে এক মহিলার গরু অসুস্থ হয়। রেহেনা বেগম পাইকগাছা পুরাতন গোডাউনের পাঁচালীর ভিতরে থাকে বলে জানা যায়।অসুস্থ গরুর সময়মতো চিকিৎসা দিতে না পারায় দুপুর গড়িয়ে বিকেল, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা অবশেষে মারা যান,পাইকগাছা বাজারে কসাই আবুল কালাম ও কসাই সাত্তার মরা গরু জবাই করে, শনিবার অর্থাৎ ঈদের দিন পাইকগাছা পৌর বাজারে মাংস বিক্রয় করেন বলে এমনটি অভিযোগ উঠেছে।
আব্দুর রহমান গাজী পিতা শামছুর গাজী,গ্রাম,ওয়াপদা পাড়া,বাতিখালী, পাইকগাছা পৌরসভা জানান, ঈদের আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার কাঠের আড়ৎ এর সামনে এ গরু মারা যায়,আর সেই মরা গরু জবাই করে মাইনদুর ছেলে রশীদ এর ভ্যান এ করে নিয়ে যায় এবং কসাই আবুল কালাম ও কসাই সাত্তার বাজারে বিক্রি করে।
এ বিষয়ে গরুর মহাজন রেহেনা বেগম, ওরফে (ফাতেমা’র মা) এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের আগের দিন দুপুরের পরে বাইরে থেকে আমার গরু বাড়ি ফিরে আসে।তার পরে গরুর পেট ফুলতে থাকে এক পর্যায়ে গরু অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমার মনে হয় পৌরসভার ডাস্টবিন থেকে বিষাক্ত কোন খাবার খেয়েছেন।সে জন্য এমনটি হয়েছে।পরে আমি গরুর ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম কিন্তু ডাক্তার পাইনি।আমি কোন উপায়ান্ত না পেয়ে পানিতে স্যালাইন গুলিয়ে খাওয়ায় দিয়েছিলাম কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। বিকেলের দিকে রাস্তা দিয়ে এক কসাই যাচ্ছিলো আমি তাকে ডেকে গরুর সমস্যার কথা বললে তিনি বলেন এ গরু বাঁচবে না। কসাই ১৫ হাজার টাকা দিয়ে আমার কাছ থেকে গরু কিনে নেন। তারপরে অসুস্থ গরু ওয়াপদার নিচে জবাই করে মাংস বিক্রি করে। গরু মারা গেছে কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরু জীবিত ছিলো কিন্তু গরু অসুস্থ হয়ে পড়ছিলো।
উক্ত বিষয়ে কসাই আবুল কলাম বলেন, তিনি খাশির মাংস বিক্রি করে, গরুর মাংস বিক্রি করে না তিনি আরো বলেন আমি ঐ দিন ওয়াপদার রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম, এই বিষয়টি আমি কিছু সময় দাঁড়িয়ে দেখছিলাম পরে আমি চলে আসি।আবার তিনি এ কথাও বলেন আমি অন্য এক জনের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম।
উক্ত বিষয়ে কসাই সাত্তার সাংবাদিকদের প্রশ্নর উত্তরে বলেন, কালাম থেকে গরু কিনে ছাত্তারে কাছে ফোন দেন।১৫ হাজার টাকা দিয়ে গরু টি কিনেছেন।গরুর মাংশ ৩৯ কেজি ৫’শ গ্রাম হয়েছিল। ৫”শ টাকা দরে কেজি ভাগাভাগি করে নিয়েছে অসুস্থ গরুর মাংস। ভাগাভাগি করে নেয় কালাম ৫ কেজি,ছাত্তার ৫ কেজি ছাত্তারের কুটুম ৫ কেজি, কালামের চাচাতো ভাই ৫ কেজি এবং অন্যান্যরা। ৫’শ টাকা দরে ভাগাভাগি করে ৩৯ কেজি ৫’শ গ্রাম মাংস। কিন্তু ৫’শ টাকা দর হলে ৩৯ কেজি ৫’শ গ্রাম মাংসর মূল্য হয় ১৯ হাজার সাত শত পঞ্চাশ টাকা।১৫ হাজার টাকা দিয়ে গরু কেনেন সেই গরুর মাংস বিক্রি হয় ১৯ হাজার সাত শত পঞ্চাশ টাকা।
পাইকগাছা পৌরসভার প্যানেল মেয়র শেখ মাহবুবুর রহমান রঞ্জু’র কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে, তিনি বলেন বিষয়টি শুনেছি এবং তাদেরকে নিয়ে সন্ধ্যা পর বসাবাসী করব তারপরে সবকিছু বলতে পারব।
উপজেলা স্যানেটারী ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক উদয় কুমার মন্ডল এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়।ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পাইকগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, এই বিষয়টি আজ আমার এক অফিসারের কাছ থেকে শুনেছি।এখন এটা খতিয়ে দেখা হবে,যদি এমন কোন ঘটনা ঘটে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম সাংবাদিকদের বলেন,বিষয়টি শুনেছি এটা নিয়ে তদন্ত চলছে। সত্যতা প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অসুস্থ পশু জবাই করে বিক্রয় করা অপরাধ কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন অসুস্থ পশু জবাই করে বিক্রয় করা ও অপরাধ।