
মাসুদ রানা জয়,পার্বত্যচট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান:
পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী পাহাড়িদের অন্যতম জনপ্রিয় সুস্বাদু খাবার “বাঁশ কোড়ল”। পার্বত্য তিন জেলায় (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) অহরহ বাঁশ বন থাকায় বাঁশ কোড়ল এখানে সহজলভ্য। মারমারা একে “মহ্ই” আর ত্রিপুরা “মেওয়া” বলে থাকে। চাকমা ভাষায় বাঁশ কোড়লকে বলা হয় “বাচ্চুরি”।
পাহাড়িদের প্রিয় খাবার
বাঁশ কোড়ল-পাহাড়ি খাবার
বাঁশ কোড়ল বর্তমানে শুধু পাহাড়িদের প্রিয় খাবার না। এর অন্যরকম স্বাদের জন্য এটি এখন বাঙালিদের কাছেও জনপ্রিয়। পাহাড়ি এলাকায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণই থাকে এই বাঁশ কোড়ল। এছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে এটি খুব জনপ্রিয় একটি মজাদার খাবার। চীন, ভারত, জাপান, মায়ানমার, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশে খাবারটির প্রচলন থাকায় আন্তর্জাতিকভাবে বেশ চাহিদা রয়েছে। জাপানে ‘তেকেনাকো’, চীন ও থাইল্যান্ডে ‘ব্যাম্বো স্যুট’, মায়ানমারে ‘মায়াহেট’, নেপালে ‘থামা’, আসামে ‘বাঁহ গাজ/খবিচা’, এবং ইন্দোনেশিয়ায় ‘রিবাং’ নামে অভিহিত করা হয়।
আদিবাসীদের প্রিয় খাবার
বাঁশ কোড়ল-পাহাড়ি খাবার
বর্ষার শুরুতে মাটি নরম হলে বাঁশ কোড়ল গজাতে শুরু করে।বছরের মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত এ সবজির ভরা মৌসুম থাকে। পা্র্বত্য অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ রয়েছে। মুলি বাঁশ, ডলু বাঁশ, বাজ্জে বাঁশ, মিতিঙ্গা বাঁশ, কালিছুরি বাঁশ এদের অন্যতম। এদের মধ্যে মুলি বাঁশ কোড়ল সবচেয়ে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর দাম ও চাহিদা একটু বেশি। বাজারে ১নং ও ২নং ছবির মত করে বাঁশ কোড়ল পাওয়া যায়। তবে ১নং ছবির বাঁশ কোড়লগুলো রান্নার উপযোগী করতে (২নং ছবির মত) উপরের শক্ত অংশগুলো ফেলে দিতে হয়। রান্নার উপযোগী করে বিক্রি করা বাঁশ কোড়লগুলোর দাম একটু বেশি হয়ে থাকে। সাধারণত প্রতি কেজি ৬০-৮০ টাকা হয়ে থাকে।
যেভাবে রান্না করে খাবেন বাঁশ কোড়ল
বাঁশ কোড়ল এখন পাহাড়িদের পাশাপাশি বাঙালিদের কাছেও প্রিয় খাবার। পার্বত্য তিন জেলার পাহাড়ি হোটেলগুলোতে বিভিন্ন আইটেমের বাঁশ কোড়ল খাবার পাওয়া যায়। আপনিও বাড়িতে নিজে রান্না করে খেতে পারেন এই সবজিটি। প্রায় সকল আইটেমের সাথে বাঁশ কোড়ল রান্না করে খাওয়া যায় বলে এর রেসিপির সংখ্যা অনির্দিষ্ট।
নিম্নে বাঁশ কোড়লের কয়েকটা রেসিপি দেয়া হল।
বাঁশ কোড়ল (১)নং ছবির মত হলে প্রথমে উপরের সবুজ শক্ত অংশটাকে সরিয়ে ফেলতে হবে। (২) নং ছবির মত হলে আপনার প্রয়োজনমত ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে ভালো করে পানিতে ধুয়ে একটি পাত্রে পানি নিয়ে তাতে বাঁশ কোড়ল সিদ্ধ করবেন। সিদ্ধ করার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নেবেন।
এই সিদ্ধ হওয়া বাঁশ কোড়ল বিভিন্ন আইটেমে রান্না করে খেতে পারবেন। কয়েকটা নিম্নরুপ:
১) পুঁইশাকের সাথে রান্না
একটি পাত্রে পরিমাণমত পানি নিয়ে তাতে শুটকি, পেঁয়াজ, মরিচ ও পরিমাণমত লবণ দেবেন। পাহাড়িরা এই আইটেমে ছাঁকা নাপ্পির পানি দিয়ে থাকে। নাপ্পি হল পাহাড়িদের তরকারী রান্নার প্রিয় একটি মশলা যা মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া দিয়ে তৈরি করা হয়। লক্ষ্য রাখবেন এই আইটেমে হলুদ গুঁড়া দেয়া হয় না।
এরপর এটি চুলায় বসিয়ে ৪-৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে । পানিটা ফুটতে থাকলে এতে বাঁশ কোড়ল দিতে হবে। এর ১০-১৫ মিনিট পর এতে হালকা পুঁইশাক দিতে হবে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর রান্নাটা হয়ে আসবে।
২) শুধু বাঁশ কোড়ল রান্না
সিদ্ধ করা বাঁশ কোড়ল কুচি কুচি করে কেটে তেল দিয়েও রান্না করে খেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে একটি পাত্রে পরিমাণমত তেল দিয়ে চুলায় বসাতে হবে। পেঁয়াজ একটা কুচি করে কেটে শুটকি তেলে ভাজাতে হবে। কিছুক্ষণ ভাজার পর কুচি করে কাটা বাঁশ কোড়ল দিতে হবে। এতে লবণ ও হালকা লাল মরিচের গুঁড়া মেশাতে হবে। এরপর সামান্য পানি দিয়ে ঢেকে মিডিয়াম তাপে রান্নাটা করে নিতে হবে।
চাইলে আপনারা শুটকি ভাজার স্থানে টাটকা চিংড়ি ভাজিয়েও দারুণ স্বাদের রান্না করে নিতে পারেন। এর জন্য হালকা জিরা গুঁড়া মেশাতে হবে।
৩) মাংসের সাথে রান্না
মাংসের সাথে বাঁশ কোড়ল রান্না বেশ মানায়। মাংসের সাথে বাঁশ কোড়ল রান্না করে খাওয়া পাহাড়িদের খুব প্রিয়। পাহাড়িরা সাধারণত মুরগি ও শুকরের মাংসের সাথে বাঁশ কোড়ল রান্না করে খায়। তবে অন্যান্য সকল মাংসের সাথেই রান্না করে খাওয়া যায়।
প্রথমে আপনাকে স্বাভাবিক নিয়মেই মাংসটা রাঁধতে হবে। শুধুমাত্র মাংসটা হওয়ার ১০-১৫ মিনিট আগে কুচি করে কাটা সিদ্ধ বাঁশ কোড়লগুলো দিতে হবে। বেশ হয়ে গেলো দারুণ রান্না।
এবার ভাতের সাথে গপাগপ গিলে খান পাহাড়িদের প্রিয় খাবার বাঁশ কোড়ল।
এ জাতীয় আরো খবর..
This information was provided to ClinicalTrials cialis dosage In some embodiments, the active agent has a solubility in water w v which is 3 or less, e