1. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  2. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
পালাচ্ছেন ভাড়াটিয়ারা মালপত্র রেখে ঘর ছেড়ে
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৬:৫১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
বৈদেশিক ঋণনির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে বাড়তি পরিশ্রমের  নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর  সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী লক্ষ্মীপুরে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ বরুড়ায় বই ও কসমেটিক বিক্রেতাকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড,  স্বামী’র কারাদণ্ড বদলগাছীতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কাঠ মিস্ত্রিকে সহায়তা দিলেন সংসদ সদস্য সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী দেবীদ্বারে আনোয়ারাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের ফ্লাইওভারে গাড়িতে আগুন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অস্থির চট্টগ্রামের মসলার বাজার বরগুনা উপজেলার হলদিয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়ন ভেঙ্গে নতুন ৫ ইউনিয়ন করার দাবী এলাকাবাসীর রাউজানে বড় ভাইয়ের হাতে আপন ছোট ভাই খুন

পালাচ্ছেন ভাড়াটিয়ারা মালপত্র রেখে ঘর ছেড়ে

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২১ জুন, ২০২০, ৫.৩৪ পিএম
  • ২৫৮ বার পঠিত

আনোয়ার হোসেন আন্নুঃ

কভিড-১৯ এর প্রভাবে শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, নির্মাণসহ সব খাত স্থবির হয়ে পড়ায় গত কয়েক মাসে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন রাজধানীর লাখ লাখ মানুষ। কাজ হারিয়েছেন গৃহ শ্রমিক, পোশাক শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক থেকে শুরু করে সব খাতের শ্রমজীবীরা। সরকারি-বেসরকারি সহায়তায় কিছু নিম্নবিত্ত পরিবারের খাদ্যের সংস্থান হলেও দিতে পারছে না ঘরভাড়া। ফলে গত তিন মাসে অসংখ্য পরিবার রাজধানী ছেড়ে পাড়ি দিয়েছে গ্রামে। কয়েক মাসের ঘরভাড়া বকেয়া পড়ায় অনেকে মালপত্র রেখেই চলে গেছেন।  কেউ রাতের আঁধারে যতটুকু মালামাল নেওয়া সম্ভব তা নিয়ে পালিয়ে গেছেন। একটা শ্রেণি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় জমানো শেষ সম্বলটুকু খরচ করে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছেন। রাজধানীজুড়ে এখন শুধু ‘টু-লেট’ এর ছড়াছড়ি। গত কয়েকদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র সামনে এসেছে। এদিকে এই পরিস্থিতিতে ভাড়া কমিয়ে হলেও ভাড়াটিয়া রাখার চেষ্টা করছেন অনেক বাড়িওয়ালা। কিন্তু কাজ না থাকায় সেই সামর্থ্যও নেই অনেকের। রাজধানীর ভাটারা থানাধীন ছোলমাইদ এলাকায় একটি তিনতলা ভবনের নিচতলায় তিন বেডরুমের ‘ব্যাচেলর’ ফ্ল্যাটে সাড়ে চার হাজার টাকা দিয়ে থাকছেন মাত্র একজন। দুই মাস আগেও তাকে ভাড়া দিতে হতো পাঁচ হাজার টাকা। তখন অন্য দুই কক্ষে আরও দুজন ছিল। কাজ না থাকায় ভাড়া কমিয়েও অপর দুজনকে রাখতে পারেননি বাড়িওয়ালা। করোনা পরিস্থিতির আগে ফ্ল্যাটটি থেকে বাড়িওয়ালা পেতেন মাসে ১৫ হাজার টাকা। পুরো ফ্ল্যাটে একজন থাকলেও তাকে সেই ভাড়া পরিশোধ করতে হতো। ওই ভবনেরই তিনতলায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে পুরো ফ্ল্যাট নিয়ে থাকছেন আরেকজন। এদিকে গত দুই মাসে এই এলাকা থেকেই শতাধিক পরিবার ঘর ছেড়ে চলে গেছেন। অধিকাংশ বিল্ডিংয়ে ঝুলছে ‘টু-লেট’ লেখা সাইনবোর্ড। অনেকেই ভাড়া বকেয়া পড়ায় মালপত্র রেখে পালিয়ে গেছেন। ভাটারার ছোলমাইদ ও বসুমতি এলাকার টিনশেড ঘরগুলোতে বসবাস মূলত গৃহকর্মী, রিকশাচালক ও নির্মাণ শ্রমিকদের। এর মধ্যে কিছু রিকশাচালক টিকে থাকলেও করোনার কারণে কাজ হারিয়েছেন অধিকাংশ গৃহকর্মী ও নির্মাণ শ্রমিক। ওই এলাকার বাড়িওয়ালা হাজী বদরউদ্দিনের আটটি ভাড়াটিয়া পরিবার গত তিন মাসে ঘর ছেড়েছে। বদরউদ্দিন জানান, বটগাইছ্যাবাড়ি এলাকায় তার টিনশেড ভাড়া ঘর থেকে করোনা পরিস্থিতির শুরুতেই তিনটি পরিবার ভাড়া না দিয়ে চলে গেছে। তাদের ঘরগুলোতে তেমন কোনো মালামালও ছিল না। এ ছাড়া বালুর মাঠ এলাকায় তার টিনশেড ভাড়া ঘর থেকে আরও চার ভাড়াটিয়া ঘরে তালা দিয়ে চলে গিয়েছিল। গত মাসে তাদের দুজন এসে অনুনয়-বিনয় করায় ৩-৪ হাজার টাকা মওকুফ করে ছেড়ে দেন। এ ছাড়া দুই মাস আগে তার আরেকটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নেন এক নারী। দু-একদিনের মধ্যে অগ্রিম টাকা দেবেন জানিয়ে ঘরে কিছু মালপত্র রেখে তালা দিয়ে চলে যান। এখন পর্যন্ত ফেরেননি। ফোনেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। কুড়িলের কুড়াতলি এলাকায় একটি কক্ষ সাড়ে তিন হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে থাকতেন চারজন। একজন ফুটপাথে কাপড় বিক্রি করেন। দুজন রাজমিস্ত্রির সহকারী (নির্মাণ শ্রমিক)। মাসুম নামের অপরজন একটি সুপার শপের কর্মচারী। কাজ না থাকায় এপ্রিলের শুরুতে জামালপুরে গ্রামের বাড়ি চলে যান নির্মাণ শ্রমিক দুজন। তাদের দুই মাসের ভাড়া বকেয়া পড়ায় বাড়িওয়ালা অপর দুজনকে চাপ দেন। ফোন করলে নির্মাণ শ্রমিক দুজনই টাকা পাঠাতে অপারগতা জানান। সেই সঙ্গে বাসা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে দেন। বাধ্য হয়ে অপর দুজন কিছু টাকা জোগাড় করে বাড়িওয়ালাকে শান্ত করেন। গত মে মাসের মাঝামাঝি আকস্মিক সুপার শপের চাকরিটি হারান মাসুম। এরপর থেকে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন কাজের আশায়। গতকাল পর্যন্ত কোনো কাজ মেলেনি। মাসুম বলেন, এখন যে ঘরভাড়া পরিশোধ করে বাড়ি চলে যাব সেই টাকাই নেই। কী খাব, কী করব? এদিকে পশ্চিম রাজাবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ ছাত্র মেসগুলোয় ‘সিট/রুম ভাড়া হবে’ লেখা সাইনবোর্ড ঝুলছে। বাড়িগুলোর কেয়ারটেকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্কুল-কলেজ বন্ধের পরই শিক্ষার্থীরা চলে গেছেন। দেড়-দুই মাস পরে অনেকে ফোন করে বাসা ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। বকেয়া ভাড়াও পাঠাচ্ছেন না। অনেক মেস পুরোপুরি খালি হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে অনেক ভবনের কেয়ারটেকারের বেতনও আটকে আছে। এমনকি চাকরি না থাকার শঙ্কাও কাজ করছে তাদের মধ্যে। এদিকে সন্তানের স্কুলসহ নানা বিষয়ে রাজধানীর সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া মধ্যবিত্ত শ্রেণি শেষ সম্বল খরচ করে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছেন। অনেকেই ভাড়া কমাতে ফ্ল্যাট বাসা ছেড়ে উঠছেন শহর থেকে দূরে টিনশেড ঘরে। বড় ফ্ল্যাট ছেড়ে উঠছেন ছোট ফ্ল্যাটে। এমনই একজন হাফিজ উদ্দিন চলতি মাসেই উত্তরার ভাড়া বাসা ছেড়ে প্রায় অর্ধেক ভাড়ায় উঠেছেন উত্তরখানে একটি টিনশেড ঘরে। গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি হঠাৎ করেই একটি কনস্ট্রাকশন ফার্মের সিনিয়র এক্সিকিউটিভের চাকরিটি হারান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews