এম হাবিব পেকুয়া প্রতিনিধি:-
পাহাড় পৃথিবীর অন্যতম রক্ষাকবচ। পাহাড়কে বলা হয় পৃথিবীর পেরেক। পেরেক মেরে যেমন কিছু আটকে রাখা যায় তেমনি পাহাড়ও পৃথিবীর উপরিস্থলের প্লেটগুলোকে আঁকড়ে ধরে রাখে। মাটির ওপরে পাহাড়ের দৃশ্যমান অংশ ছাড়া মাটির নিচে রয়েছে বিস্তৃত আরেক অংশ অনেকটা ফ্রাস্টাম অব কোনোর মতো। এই অংশ পাহাড়ের স্থায়িত্ব ও ভূপৃষ্ঠের ভারসাম্য বজায়ে বিরাট ভূমিকা রাখে। এমনকি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় রেখে চলে বিশেষ ভূমিকা।
অথচ আজ চারিদিকে পরিবেশ বিধ্বংসী নানা কর্মকাণ্ডের মধ্যে পাহাড় কাটা বিশেষ আলোচনায় আসছে। পাহাড়কে কেটে ফেললে বা পাহাড় উপরিস্থিত বৃক্ষের বিনাশ পাহাড়ের রক্ষাকবচের ভূমিকাকে অকেজ করে দেয়। একসময় পাহাড় নিজেই দুর্বল হয়ে ধসে পড়ে। নদনদী, গাছপালার মতোই পাহাড় পরিবেশ-প্রতিবেশের এক বিশেষ অনুষঙ্গ যার বিনাশ পৃথিবীকে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে ঠেলে দেয়। বর্ষা মৌসুম এলেই দেশে পাহাড় কাটার ধুম পড়ে যায়। বাংলাদেশের পাহাড় অঞ্চল কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া রেইঞ্জ ও টইটং বন বিট পাহাড় কাটার মহোৎসবের খবর প্রায় পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। তাতে যেমন এলাকার নান্দনিকতা নষ্ট হচ্ছে তেমনি প্রকৃতির ভারসাম্য পড়েছে হুমকির মুখে। এমনকি পাহাড়ধসে মানুষের মৃত্যু এক বেদনাদায়ক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার বরইতলি দিয়ে রেলওয়ের লাইনের একটি সড়কের পাশ দিয়ে রাস্তা তৈরির নামে, এম,পি আলহাজ জাফর আলমের নাম বিক্রি করে ৭ নাম্বার ইউনিয়নের মছমিয়া কাটা ৮নাং ওয়ার্ডের বাদল মেম্বার,৭নাম্বার ওয়ার্ডের শুক্কুর মেম্বা,ও নুর আলম,হুসাইন,জমির উদ্দিন,ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার, ২টি পাহাড় নিধনের আয়োজনের খবরও একসময় অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। ইতঃপূর্বে কক্সবাজার জেলার,চকরিয়া উপজেলার,হারবাং রেইঞ্জ বন বিট অঞ্চলে ও একই জেলার,পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া বনঞ্চলের এলাকায় এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে চলেছে সব আইন-কানুন উপেক্ষা করে। পাহাড় কেটে কখনও মাটি লুট করা হচ্ছে। পাহাড় কেটে ভূমি সমতল করে কাটা পাহাড়ের গায়ে গড়ে তোলা হয় হাজার হাজার অবৈধ বাড়িঘর। ইতঃপূর্বে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের আবাসিক হোটেল-মোটেল জোনসংলগ্ন কলাতলী সৈকতপাড়ায় সরকারি পাহাড় কেটেও বাড়ি নির্মাণ করা হয়। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের প্রতীক পাহাড় আজ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
পাহাড়ের বন উজাড় ও পাহাড় কাটার ফলে জীববৈচিত্র্য হচ্ছে হুমকির সম্মুখীন, বন্যপ্রাণী হারাচ্ছে আবাসস্থল। প্রকৃতি হয়ে পড়ছে ভারসাম্যহীন। ইতঃপূর্বে
টইটং ইউনিয়ের ৪নাং ওয়ার্ডের বন বিটের জমিতে ব্যাপকভাবে গড়ে উঠছে দালান ঘর,
বনবিভাগের জমিতে সামাজিক বনায়ন ছাড়া কোনো কিছুই করার বিধান নেই।
আর সেই জমিতে দালান গড়ে উঠায় বন বিভাগের বিট কর্মকর্তার বাধা অমান্য করে ছাদ ডালাই দেওয়ায় টইটং বন বিট অদ্যা ১৯তারিখ সকাল ১০:৩০ঘটিকায় বন বিভাগ কর্মকর্তারা সরজমিনে পৌছালে আইন অমান্য কারি এসময় পালিয়ে যাই।বন্ধ করে দেওয়া হয় ডালাই মেশিন,এবং ছাদ তৈরি না করার নির্দেশ বন বিটের,
কয়েক বছর ধরে পাহাড়ধসে মৃত্যু কিছুতে ঠেকানো যাচ্ছে না। অতি সম্প্রতি জুলাই মাসে প্রবল বর্ষণের ফলে পাহাড়ধসে মাত্র দুই দিনে কক্সবাজারে ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বর্ষাকাল এলেই চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, কক্সবাজার ও বান্দরবানের মতো পাহাড় এলাকায় মৃত্যু-বিভীষিকা নেমে আসে। প্রবল বর্ষণে প্রায়ই ঘটে পাহাড়ধসের মতো ঘটনা।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy