1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
পিকে হালদারের জালিয়াতির ১১শ’ কোটি: বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন
বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কসবায় বিএসএফের এলোপাথাড়ি গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত! চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ৩ হাজার পিস ইয়াবা সহ আটক ১ঃ মাদক পরিবহনে নিয়োজিত মোটর সাইকল জব্দ ট্রেনঃ পৃথিবীর সবচেয়ে আন্ডাররেটেড ঘাতকের রহস্য এবং “হ্যাবিচুয়াল কনফিডেন্স” চট্টগ্রামে ১৪ পিছ বিদেশী স্বর্নের বার সহ আটক ১ সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ছেড়ে দিয়েছে আদালত আওয়ামীলিগের সময়ে আওয়ামীলিগের নেতা , বিএনপির সময়ে বিএনপির নেতা সেজে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা ! নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এলজিইডি কুমিল্লার মতবিনিময় কলেজ ছাত্র আব্দুল আলীম হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ! সাভারে বিরুলিয়ায় নিহত নারী ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা : স্বামী গ্রেফতার । ফেসবুকে মানহানিকর লেখা প্রচারের অভিযোগ এনে এক কোটি টাকার মানহানি এবং হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পিকে হালদারের জালিয়াতির ১১শ’ কোটি: বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০, ৯.২৭ এএম
  • ২৭৮ বার পঠিত

প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের জালিয়াতির ১১০০ কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট বা এফডিআর করা হয়েছে।

পিকে হালদারের নিজ নামে এবং তার স্বজন ও বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে এ অর্থ এফডিআর করা আছে।

আদালতের নির্দেশে হিসাবগুলোতে সব ধরনের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এতে দেখা যায়, পিকে হালদার ও তার সঙ্গে জড়িতরা ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে আত্মসাৎ করে মোটা অঙ্কের অর্থ।

এর কিছু অংশ দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নামে-বেনামে এফডিআর করে। বাকি বেশির ভাগ টাকাই বিদেশে পাচার করে।

শুধু ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে নামে-বেনামে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে এই চক্র।

এর ১১শ’ কোটি টাকা এফডিআর হিসেবে দেশে আছে। বাকি প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা পাচার ও বিভিন্ন ব্যক্তি আত্মসাৎ করেছে।

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আর্থিক খাতে সুশাসনের ঘাটতি থাকায় এত বড় জাল-জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।

সুশাসন থাকলে এগুলো হতে পারত না। এসব ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও যথেষ্ট নজরদারির অভাব রয়েছে। এখন সেসব বিষয়ই উঠে আসছে।

তিনি বলেন, এ জালিয়াতির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে। পর্ষদে যারা ছিলেন, তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

যে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, সেগুলো আদায়ে প্রয়োজনে নতুন করে তাদের অন্যান্য সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা যেতে পারে।

বিদেশে পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক আন্তরিক হলে একটু সময় লাগলেও ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ছয়টি অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠান, পাঁচ ব্যক্তির নামে দেশের আটটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ওইসব অর্থ এফডিআর করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- এমটিবি মেরিন লিমিটেড, কোলোসিন লিমিটেড, মুন এন্টারপ্রাইজ, প্যারামাউন্ট স্পিনিং, প্যারামাউন্ট অ্যাগ্রো এবং কনিকা এন্টারপ্রাইজ।

মূলত অর্থ আত্মসাৎ করার জন্যই পিকে হালদার এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বাস্তবে এগুলোর কোনো অস্তিত্ব বা কার্যক্রম নেই। প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে কোনো নিবন্ধনও নেয়া হয়নি।

এর প্রতিটির সঙ্গে পিকে হালদারের স্বজনরা সম্পৃক্ত রয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ঋণ অনুমোদন দেয়ার পর তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে টাকা স্থানান্তর করা হয়।

পরে বিভিন্ন ব্যাংকে সেগুলো এফডিআর করা হয়। যেসব ব্যক্তির নামে এফডিআর করা হয়েছে তারা হচ্ছেন- সাদাব হোসেন, রঞ্জন দাশ, অলোক কুমার দাশ, অনিতা দাশ ও শাখাওয়াত হোসেন।

মেঘনা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ফাইন্যান্সে এফডিআর করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ঋণ অনুমোদনের সময় কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। ন্যূনতম কোনো নিয়মাচারও পালন করা হয়নি।

প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বড় অঙ্কের ঋণ দেয়ার আগে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স, জয়েন্ট স্টক কোম্পানির নিবন্ধন, ভ্যাট নিবন্ধন, আয়কর শনাক্তকরণ নম্বর দেখতে হয়।

এছাড়া প্রকল্পের মূল্যায়ন করে এর ঝুঁকি ও বাস্তবায়নের সক্ষমতা সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়। এসবের কিছুই করা হয়নি। বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে বেআইনিভাবে ঋণ অনুমোদন করে অর্থ নামে-বেনামে স্থানান্তর করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পিকে হালদারের বেনামি প্রতিষ্ঠান এমটিবি মেরিন লিমিটেডের নামে ৬০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দেয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে।

এর মধ্যে ১৪ কোটি টাকা জমা হয় অলোক কুমার দাশ ও তার স্ত্রী অনিতা দাশের প্যারামাউন্ট অ্যাগ্রো এবং তাদের পুত্র রঞ্জন দাশের হিসাবে। ওই টাকা মেঘনা ব্যাংকে এফডিআর হিসাবে জমা রাখা হয় শাখাওয়াত হোসেনের পুত্র সাদাব হোসেনের নামে।

অপর ভুয়া প্রতিষ্ঠান কোলোসিন লিমিটেডের নামে ৮০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দেয়া হয় একই প্রতিষ্ঠান থেকে। এর মধ্যে ছয় কোটি ২০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয় প্যারামাউন্ট স্পিনিংয়ের হিসাবে।

এর পরিচালক অলোক কুমার দাশ, অনিতা দাশ ও শাখাওয়াত হোসেন। এসব অর্থ জব্দ করা হয়েছে।

একই লিজিং কোম্পানি থেকে মুন এন্টারপ্রাইজের নামে ৮৩ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে ১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয় প্যারামাউন্ট স্পিনিং এবং রঞ্জন দাশের তিনটি ব্যাংকের তিনটি হিসাবে।

এগুলো হচ্ছে- মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক। অপর প্রতিষ্ঠান কনিকা এন্টারপ্রাইজের ঋণের এক কোটি টাকার এফডিআর করা হয় সাদাব হোসেনের নামে।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে আত্মসাৎ করা অর্থের মধ্যে ৪৪৬ কোটি টাকা জমা করা হয়েছে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পিকে হালদারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট হিসাবে। ওই অর্থ জব্দ করা হয়েছে।

ব্যাংক এশিয়ায় থাকা পিকে হালদারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট একটি হিসাবে এফডিআর করা হয় ২২২ কোটি টাকা।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের একটি হিসাবে স্থানান্তর করা হয় ১২০ কোটি টাকা। ওই হিসাবের সঙ্গেও পিকে হালদারের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এছাড়াও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি হিসাবে ১৮৪ কোটি টাকা এবং ওয়ান ব্যাংকের চট্টগ্রামের একটি শাখায় ৭৪ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়। এসব অর্থ আদালতের নির্দেশে আটক করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, নন-ব্যাংক আর্থিক খাতে সব অপকর্মের মূল হোতা প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার)। সে এখন বিদেশে পলাতক।

তাকে ধরে আনলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কারণ সে জানে টাকা কোথায় গেছে, কার কাছে আছে। তাকে ধরতে পারলে অন্যদেরও ধরা যাবে। লুটপাটের টাকার একটি অংশ দেশে থাকতে পারে। তবে বেশির ভাগ টাকা বিদেশে চলে গেছে।

এখন লুটের টাকা উদ্ধারে পিকে হালদারের বিকল্প নেই। দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) শক্তভাবে তার পিছু নিতে হবে। তা না হলে তাকে ধরা সম্ভব নয়।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৈরি তদন্ত প্রতিবেদনটি দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটকে। তারা এ ব্যাপারে আরও বিশদ তদন্ত করে তা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠিয়েছে।

এখন দুর্নীতি দমন কমিশন এ বিষয়ে প্রতিটি জালিয়াতির ঘটনা আলাদা আলাদা ধরে তদন্ত করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের যেসব পর্ষদ সদস্য ও কর্মকর্তা এসব জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এখন আইনগত ব্যবস্থা নেবে দুদক।

উল্লেখ্য, বেনামি কিছু প্রতিষ্ঠানের নামে শেয়ার কিনে পিকে হালদার চক্র ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় ২০১৪ সালে। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানটিতে শুরু হয় নজিরবিহীন লুটপাট। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি বেশ ভালোভাবেই চলছিল।

প্রতি বছরই এর শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিত। যে কারণে এর শেয়ারের দাম অভিহিত মূল্যের চেয়ে ১০ গুণ বেড়ে গিয়েছিল। এখন অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে এসেছে।

প্রতিষ্ঠানটি এখন আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। যে কারণে এটি পুনর্গঠন করতে আদালত থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে পর্ষদের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়। তিনি দায়িত্ব নিয়ে দেখেন প্রতিষ্ঠানের সব টাকা লুট হয়ে গেছে।

যে কারণে তিনি প্রতিষ্ঠানটি পুনর্গঠন করতে অপারগতা প্রকাশ করে পদত্যাগ করেন। পরে আদালত পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দিয়োগ দেন সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলামকে। তিনি এখন প্রতিষ্ঠানটি পুনর্গঠনের ব্যাপারে কাজ করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews