অনলাইন ডেস্কঃ
দক্ষিণ ভারতের তামিলনাডু রাজ্যে পুলিশের রাতভর নির্যাতনে পিতা-পুত্রের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে গোটা ভারতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। রাজ্যজুড়ে জারি থাকা লকডাউন অমান্য করে নির্ধারিত সময়ের পর দোকান খোলা রাখায় ১৯ জুন ৫৮ বছর বয়সী পি জয়রাজ ও তার ৩৮ বছর বয়সী ছেলে ফেনিক্সকে আটক করেছিল পুলিশ। বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর পিতা-পুত্রকে রাতভর পু্লিশি হেফাজতে রাখা হয়। দুইদিন বাবা-ছেলে কয়েকঘণ্টা ব্যবধানে মারা যান। নিহতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশের বর্বরোচিত নিপীড়নে কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, পি জয়রাজ পেশায় কাঠের ব্যবসায়ী। নির্দেশনা অনুযায়ী দোকান বন্ধের সময় রাত ৮টা। কিন্তু ওইদিন রাত ৮টা ১৫ মিনিটে দোকান বন্ধ করার সময় টহলরত পুলিশকর্মীদের সঙ্গে তার তর্ক হয়। পিতা-পুত্রের সঙ্গে তর্কে জড়ায় পুলিশ। কিছুক্ষণ পর বিষয়টি মিটে যায়। দু’জনে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু পর দিন রাত পৌনে ৮টার দিকে একদল পুলিশ দোকানে হাজির হন। জয়রাজকে জোর করে গাড়িতে তোলে পুলিশ। বাবাকে পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে দেখে ফেনিক্স আটকাতে যান। কিন্তু তাকে থানায় আসতে বলে জয়রাজকে নিয়ে চলে যায় পুলিশের গাড়ি। পরে সে থানায় গেলে তাকেও আটক করে হাজতে পুরে রাখা হয়। বিরোধীদলীয় সাংসদরা এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন; ব্যবসায়ীদের একটি প্রভাবশালী সংগঠন পুলিশের বর্বরতার নিন্দা জানিয়েছেন, স্থানীয় আদালত পুলিশ হেফাজতে জয়রাজ-ফেনিক্সকে নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়েছেন অনেক রাজনীতিবিদ-তারকা। পুলিশ হেফাজতে ‘রাতভর নির্যাতনে’ পিতা-পুত্রের এই মৃত্যুর ঘটনার বিচার চেয়ে ও পুলিশ সদস্যদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে টুইট করেছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ান থেকে শুরু করে আরও অনেক তারকাও এমন দাবি জানিয়েছেন। শিখর ধাওয়ান লিখেছেন, ‘তামিলনাডুতে জয়রাজ ও ফেনিক্সের ওপর বর্বর নির্যাতনের কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে পড়েছি। আমাদের অবশ্যই আওয়াজ তুলতে হবে এবং পরিবারটির জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’ তার মতো আরও অনেকেই এমন করে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে কাজ করে এমন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) করা তালিকা অনুযায়ী, ভারতে শুধু ২০১৯ সালে পুলিশের হেফাজতে ১ হাজার ৭৩১ জন প্রাণ হারান। ওই বছর একদিনে সর্বোচ্চ পাঁচ জনও পু্লিশের হেফাজতে মারা গেছেন।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy