1. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  2. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
পোরশায় ফসলী জমি কেটে চলছে রম রম রম পুকুর খননের মহাউৎসব
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
বৈদেশিক ঋণনির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে বাড়তি পরিশ্রমের  নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর  সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী লক্ষ্মীপুরে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ বরুড়ায় বই ও কসমেটিক বিক্রেতাকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড,  স্বামী’র কারাদণ্ড বদলগাছীতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কাঠ মিস্ত্রিকে সহায়তা দিলেন সংসদ সদস্য সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী দেবীদ্বারে আনোয়ারাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের ফ্লাইওভারে গাড়িতে আগুন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অস্থির চট্টগ্রামের মসলার বাজার বরগুনা উপজেলার হলদিয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়ন ভেঙ্গে নতুন ৫ ইউনিয়ন করার দাবী এলাকাবাসীর রাউজানে বড় ভাইয়ের হাতে আপন ছোট ভাই খুন

পোরশায় ফসলী জমি কেটে চলছে রম রম রম পুকুর খননের মহাউৎসব

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২১, ৫.৩৮ পিএম
  • ১৮০ বার পঠিত

নাহিদ নওগাঁ (পোরশা) প্রতিনিধিঃ

উত্তর বঙ্গের শস্য ভান্ডার নামে খ্যাত নওগাঁর পোরশা উপজেলায় উর্বর ফসলী জমি কেটে দিন দিন সাবাড় করা হচ্ছে। একের পর এক দুই তিন ফসলী জমি বেকু মেশিন দিয়ে কেটে করা হচ্ছে বড় বড় পুকুর। এ যেন পুকুর খননের মহাউৎসব। ফলে একাধারে যেমন কমছে ফসলী জমি। পুকুর আর জলাশয়ের কারণে মাঠে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, পোরশা উপজেলায় কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন চলতে থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ফসল উৎপাদন। আর পরিবেশ অধিদপ্তর এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুকুর খননে ভূমির শ্রেণি বদল হওয়ায় পরিবেশগত প্রতিকূলতার আশঙ্কা বাড়ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের যথাযথ ভূমি না থাকায় এভাবে অপরিকল্পিত পুকুর খননের প্রতিযোগী থামানো যাচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেছেন পোরশা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নিতপুর কপালীর মোড় হতে সুতরইল মোড় পর্যন্ত প্রধান সড়কের দু‘পাশের্^ বেশ কয়েকটি পুকুর অবৈধভাবে খনন করা হয়েছে। এখনো ব্রীজের কাছাকাছি প্রধান সড়ক থেকে ৫শ মিটার ভিতরে একটি ১৬ বিঘার আবাদী জমির উপরে পুকুর খনন কাজ চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই জমির মালিক প্রয়াত হুবুল্লাহ শাহ চৌধূরী। তার অবর্তমানে তার ওয়ারিশগণের নিকট থেকে লিজ নিয়েছেন সাপাহার এর মুকুল মাষ্টার, আনারুল মাষ্টার, তোজামিল মাষ্টার এবং শরিফুল মাষ্টার। এই চার ব্যক্তি ১৬ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পুকুর খননের মহাৎসবে মেতে উঠেছেন। তাদের মধ্যে একজন তোজামিল মাষ্টার এর সাথে কথা বলে ফসলী জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খননের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুকুর এর জমি হিসেবেই আমরা জানি। এটি পূনঃরায় আমরা সংস্কার করছি। এর পর পুকুর সংস্কার এর জন্য আবেদনও করেছি। তবে এখনো অনুমতি পাইনি।’ সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কিভাবে ফসলী জমিতে পুকুর খনন করছেন জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি তোজামিল মাষ্টার।

একই বিষয়ে তাদের আরেক সহযোগী আনারুল মাষ্টার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ আমরা উক্ত জমির মালিক পোরশা হবুল্লাহ শাহ চৌধূরীর ছেলে নুরুল্লাহ শাহ চৌধূরীর নিকট থেকে পুকুর হিসেবে লিজ নিয়েছি। তিনি আমাদের পুকুর খনন করে দিবেন এবং আমরা সেখানে মাছ চাষ করব। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারবনা বলেও জানান তিনি।’

একই প্রশ্ন জমির মালিক নুরুল্লাহ শাহ চৌধূরীর নিকট করা হলে তিনি বলেন, আমার ১৬ বিঘার জমি অন্যান্য জমির তুলনায় নিচু। আবাদ করে খুব বেশি লাভবান হওয়া যায়না। সে কারণেই বিঘা প্রতি ১৯ হাজার টাকা হারে ১১বছর মেয়াদে তাদের লিজ দিয়েছি। তারা নিজ উদ্যোগে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করবেন।’ আবাদী জমিতে পুকুর খনন করা অবৈধ কি না জানতে চাইলে, নুরুল্লাহ শাহ বলেন, ‘ যারা পুকুর খনন করছে তারা হয়তো কোর্ট থেকে অর্ডার নিয়েছে। তাছাড়া কয়েকদিন আগে এখানে পুকুর খননকালে উপজেলা প্রশাসন বাধা প্রদান করেছিলেন। পরে বিষয়টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান মিলে দেখে শুনে ঐ জায়গায় পুকুর খননের জন্য মৌখিক অনুমতি দেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আইউব আলি জানিয়েছেন ২০১৯ইং সালের তথ্য মতে, ২৪২৯টি পুকুর খনন রয়েছে। গত কয়েক বছরে এ উপজেলায় পুকুর জলাশয়ের সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। এসব নতুন নতুন পুকুর খননের তালিকা সংগ্রহ চলছে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে পোরশা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজ আলম জানান, পোরশা উপজেলায় দিন দিন পুকুর খননের প্রতিযোগতা চলছে। সাথে সাথে কমে আসছে আবাদী জমির সংখ্যা। অধিক মুনাফার আশায় জমির মালিক এবং পুকুর ব্যাবসায়ীরা অনুমতি না নিয়েই তাদের ফসলী জমিতে পুকুর খননের মাহউৎসবে মেতে উঠেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার নাজমুল হামিদ রেজা জানান, ‘আমরা ইতিপূর্বে খবর পেয়ে উক্ত স্থানে পুকুর খননে বাধা প্রদান করি এবং কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি, আমাদের নির্দেশ অমান্য করে আবারোও যদি তারা পুকুর খনন কাজ চালাতে থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

এছাড়াও উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায়, বেশ কিছু জায়গায় পুকুর খননের কাজ চলমান রয়েছে। তবে পুকুর খনন করতে গিয়ে জমির মালিকরা গ্রামীণ ও আঞ্চলিক সড়কেরও ক্ষতি করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews