1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
প্রত্যাবাসন চাওয়ায়’ প্রাণ গেল মুহিবুল্লাহর
বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ০২:৫৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কসবায় বিএসএফের এলোপাথাড়ি গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত! চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ৩ হাজার পিস ইয়াবা সহ আটক ১ঃ মাদক পরিবহনে নিয়োজিত মোটর সাইকল জব্দ ট্রেনঃ পৃথিবীর সবচেয়ে আন্ডাররেটেড ঘাতকের রহস্য এবং “হ্যাবিচুয়াল কনফিডেন্স” চট্টগ্রামে ১৪ পিছ বিদেশী স্বর্নের বার সহ আটক ১ সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ছেড়ে দিয়েছে আদালত আওয়ামীলিগের সময়ে আওয়ামীলিগের নেতা , বিএনপির সময়ে বিএনপির নেতা সেজে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা ! নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এলজিইডি কুমিল্লার মতবিনিময় কলেজ ছাত্র আব্দুল আলীম হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ! সাভারে বিরুলিয়ায় নিহত নারী ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা : স্বামী গ্রেফতার । ফেসবুকে মানহানিকর লেখা প্রচারের অভিযোগ এনে এক কোটি টাকার মানহানি এবং হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রত্যাবাসন চাওয়ায়’ প্রাণ গেল মুহিবুল্লাহর

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১, ২.২৪ এএম
  • ২৩৪ বার পঠিত

ইমাম হোসেন জীবন চট্টগ্রামঃ

৪৮ বছর বয়সী মুহিবুল্লাহকে রোহিঙ্গারা ‘মাস্টার মুহিবুল্লাহ’ বলে ডাকত। মিয়ানমারে থাকতে তিনি একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। ২০১৮ সালে গণহত্যা বিরোধী একটি সমাবেশ করে বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছিলেন তিনি। ওই সমাবেশে নাগরিত্ব প্রদান, নিরাপত্তা, রাখাইনে ফেলে আসা জন্মভিটা ফেরতসহ কয়েকটি দাবি পূরণ না রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুহিবুল্লাহ।

মুহিবুল্লাহ গঠন করেছিলেন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ)’ নামের একটি সংগঠন। যেটির চেয়ারম্যানও করা হয় তাকে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন তিনি।

মুহিবুল্লাহর স্বজনদের দাবি, রোহিঙ্গাদের নেতা ও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন চেষ্টা করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।

বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে মুহিবুল্লাহ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সে ছিলেন তার মেঝ ভাই হাবিবুল্লাহ, ছোট ভাই আহম্মদ উল্লাহ ও মুহিবুল্লাহর প্রতিবেশী নুরুল আমিন।

এ সময় মুহিবুল্লাহর মেঝ ভাই হাবিবুল্লাহ সময় সংবাদকে বলেন, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনা বাহিনীর নির্যাতনের কারণে প্রাণ বাঁচাতে মুহিবুল্লাহসহ আমাদের ৩ ভাই পরিবার নিয়ে পালিয়ে উখিয়ায় চলে আসি। মুহিবুল্লাহ পরিবারে রয়েছে স্ত্রী ও ৯ সন্তান। যার মধ্যে মেয়ে রয়েছে ৫ জন ও ছেলে রয়েছে ৪ জন। উখিয়ায় ক্যাম্পে বসবাসের শুরু থেকেই ক্যাম্পে সবার সঙ্গে কথা-বার্তা ও চলাফেরা করত। এছাড়াও বিশ্বের নানাপ্রান্ত থেকে আসা জাতিসংঘ, বিভিন্ন রাষ্ট্রের নেতা ও বাংলাদেশে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে কথা বলতো মুহিবুল্লাহ। সবার পক্ষে হয়ে কথা বলার কারণে সবাই মুহিবুল্লাহকে নেতা বলে মেনে নিয়েছিল। আর নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাবার বিষয়ে বিশ্বের সঙ্গেও কথা-বার্তা বলছিল। রোহিঙ্গাদের নেতা হওয়া ও মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য কথা বলায় আমার ভাইয়ের জীবন গেল।

হাবিবুল্লাহ বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শার্ট-প্যান্ট, মুখে মাস্ক পরে ও হাতে অস্ত্র নিয়ে ১০-২০ জন অফিসে ঢুকেই গুলি করে পালিয়ে যায়। যারা গুলি করেছে তাদের অনেকই চিনেছি। যারা গুলি করেছে তারা রোহিঙ্গা। তাদের মধ্যে কয়েকজনের মুখ চেনা আর কয়েকজনকে চেনা যায়নি। তবে সবাই ক্যাম্পের বিভিন্ন ব্লকের বাসিন্দা, দিনে তারা সবাই ক্যাম্পে ঘোরাফেরা করে।

কথা হয় মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই আহম্মদ উল্লাহ বলেন, মুহিবুল্লাহ ভাই বাড়ির কাছেই অফিসে ছিল। দাঁড়িয়ে কথা বলছিল সবাই। গুলির পর ভাই মাটিতে পড়ে যায়, তখন সবাই দৌড়ে এদিক-ওদিক পালিয়ে যায়। মুহিবুল্লাহ ভাইয়ের গার্ডরাও পালিয়ে যায়। তারপর আমরা গিয়ে মুহিবুল্লাহ ভাইকে মাটি থেকে তুলে প্রথমে ব্লকের হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে থেকে পরে এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মুহিবুল্লাহ ভাইয়ের গায়ে গুলি লেগেছে ৪টি। বুকে ৩টি ও হাতের বাহুতে একটি।

আহম্মদ উল্লাহ আরও বলেন, যারা গুলি মেরেছে তাদের কয়েকজনকে চিনেছি। তারা মোট ১০ থেকে ২০ জন ছিল। প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছিল ভাই। তাই তাকে মারা হয়েছে।

প্রতিবেশী নুরুল আমিন বলেন, রোহিঙ্গাদের সবার শান্তি চেয়েছিলেন মুহিবুল্লাহ। মিয়ানমারেও থাকাকালে সবাই মুহিবুল্লাহকে ডাকত শান্তির বাপ। শান্তির বাপ মানে হচ্ছে; মানুষ যে কোনো জায়গায় বিপদ পড়লে মুহিবুল্লাহ সেই বিপদ থেকে তাকে উদ্ধার করত। কোনো ধরনের টাকা ছাড়া। তাই মানুষজন মুহিবুল্লাহর নাম দিয়েছিল শান্তির বাপ।

নুরুল আমিন আরও বলেন, অনেকেই শান্তি চায় না, অশান্তিই ভালো লাগে; পৃথিবী তো এখন এমনই হয়ে গেছে। সত্য কথা বলার লোক পৃথিবীতে নেই। যতই মিথ্যা কথা বলা যায় ততই ভালো। সত্য কথা বলা এবং সবার শান্তি চাওয়া কারণেই হত্যা করা হয়েছে মুহিবুল্লাহকে।

২০১৯ সালের ১৭ জুলাই রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় এসেছিলেন মুহিবুল্লাহ। সে সময় তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেছিলেন, ‘আমরা (রোহিঙ্গারা) দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই। এ বিষয়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাই।

এর আগে তিনি জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট উখিয়ার কুতুপালং শিবিরের ফুটবল মাঠে কয়েক লাখ রোহিঙ্গার গণহত্যাবিরোধী যে মহাসমাবেশ হয়েছিল, তা সংগঠিত করেছিলেন মুহিবুল্লাহ। গণহত্যাবিরোধী ওই সমাবেশ বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছিল। ওই সমাবেশে মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের নাগরিত্ব প্রদান, নিরাপত্তা, রাখাইনে ফেলে আসা জন্মভিটা ফেরতসহ কয়েকটি দাবি পূরণ না রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এখনো ওই দাবিতে অনড় রয়েছে রোহিঙ্গারা।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমনপীড়নের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। সেই সময় বাস্তুচ্যুত অন্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছিলেন মুহিবুল্লাহ ও তার পরিবার।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews