ইব্রাহিম হোসেন, খাগড়াছড়িঃ
খাগড়াছড়ি জেলাধীন মাটিরাঙ্গা উপজেলা গোমতী ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এর ঘর নির্মাণে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
বিনামূল্যে এসব ঘর দেয়ার কথা থাকলেও ঘরপ্রতি ২,০০০০ (বিশ হাজার) টাকা আদায়ের অভিযোগ মাটিরাঙ্গার গোমতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন লিটন এর বিরুদ্ধে ।
পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে না পারায় গরিব আসহায় খেটে খাওয়া দিন মজুর গোমতী ইউনিয়নের শান্তিপুর ০১ নং ওয়ার্ড মজুমদার পাড়ার বাসিন্দা আবু তাহের নামে সরকারি বরাদ্দ হওয়া ঘরটি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ওই এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তি ইসমাইল হোসেনকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভোক্তভোগী আবু তাহের ।
অভিযোগ কারী আবু তাহের দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি অত্যন্ত গরিব,দিন মজুরি করে দিনে ২০০/২৫০ টাকা আয় করে আমার বৃদ্ধ পিতা মাতা নিয়ে কোন রকম দিন যাপন করছি, থাকার মতো একটি ঘর নেই আমার, এলাকার মেম্বার কাছে একটি ঘর এর জন্য আবেদন করলে আমার নামে একটি সরকারি ঘর বরাদ্দ আসে।
কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেব আমার কাছে থেকে ( ৫০,০০০) পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে, আমি টাকা দিতে না পারায় আমার নামে বরাদ্দকৃত ঘরটি পার্শ্ববর্তী বিত্তবান ইসমাইল হোসেনকে দিয়ে দেওয়া হয়। আমি এ বিষয়ে জানতে ইউনো আফিসে গেলে উল্টো আমাকে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়, বিভিন্ন মহলে জানালেও কেউ কোন ব্যবস্থা নেয়।নি ।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন মেম্বার লোকমান হোসেন বলেন,আমারওয়ার্ডে আবু তাহের অত্যন্ত গরিব ও খেটে খাওয়া দিন মজুর তার নামে সরকারি বরাদ্দ হওয়া ঘরটি দেয়ার পরিবর্তে চেয়ারম্যান সাহেব একজন সচ্ছল ও বৃত্তবান লোককে কি ভাবে দিলো তা আমার জানা নাই।আমি বিষয়টি জানার পর চেয়ারম্যান সাহেবকে জিজ্ঞেসা করেলে উত্তরে চেয়ারম্যান সাহেব জানায় ওনার নামে ঘর বরাদ্দ হয়েছে। তবে যাকে ঘর দেওয়া হয়েছে সে এ ঘর পাওয়ার জন্য আমার কাছে কোন আবেদনও করে নাই এবং প্রকৃত পক্ষে সে একজন সচ্ছল ব্যাক্তি ।
এ বিষয়ে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি ও জানান তিনি।
গোমতি ০১ নং ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা বলেন,প্রধানমন্ত্রীর যে স্বপ্ন নিয়ে অসহায় মানুষদের ঘর দিয়েছিলেন তা বাস্তবায়ন হয়নি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অর্থায়নে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় মাটিরাঙ্গা উপজেলা গোমতী ইউনিয়নে ঘর নির্মাণকাজে চেয়ারম্যান নিজেই ঠিকাদার। লাখ টাকার ঘরে মালপত্র দিয়েছেন অর্ধেক ও নিম্নমানের। ঘরপ্রতি ২০,০০০( বিশ হাজার) টাকা কেরিং বাবদ দিতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এক মিটিংয়েও।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকল্প বায়স্তবায়ন কর্মকর্তা রাজ কুমার শীল জানান, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং আবু তাহের পরবর্তীধাপে ঘর পাবে।যাদেরকে ঘর দেয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে সামান্য কিছু অর্থ নেয়া হয়ে থাকে যা ব্যবহৃত হয় আসবাবপত্র কেরিং এর কাজে,এছাড়া আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আমি জানিনা।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গোমতী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন লিটন বলেন, আমি আনাড়স মার্কা নিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছিতো এইজন্য আমার উপর নানান অভিযোগ করছে।তবে এটা সত্য যাদেরকে ঘর দিয়েছি তাদের থেকে কিছু অর্থ নিয়েছি তাদের আসবাবপত্র কেরিং এর জন্য, আবু তাহেরকে বলা হয়েছিল তার নামে ঘর বরাদ্দ এসেছে কিছু অর্থ দেওয়ার জন্য সে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে ইসমাইল হোসেনকে দেওয়া হয়,
ইসমাইল হোসেনের বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, ইসমাইল হোসেন অনেক আগেই একটি ঘরের জন্য আবেদন করে রেখেছিল।সে খরচের টাকা দিয়েছে যার জন্য ইসমাইল হোসেনের ছেলে ঘর পেয়েছে,তার সম্পত্তির বিষয়ে আমি জানিনা।
এই প্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন,গৃহহীনদের ঘরের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না কারণ এই দায়িত্বে আমি নেই,তারপরেও লিটন চেয়ারম্যান এবং মেম্বার লোকমানকে বলেছি তদন্ত করে প্রকৃত ব্যক্তীকে ঘর দেওয়ার জন্য।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy