প্রিন্ট এর তারিখঃ মে ২৩, ২০২৫, ৩:৩৮ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ২৩, ২০২১, ১২:২৮ এ.এম

আলহাজ্ব জসীম ঊদ্দীন রিপোর্ট
প্রবাস এমন একটা জায়গা, যার ডাক নাম জেলখানা। অসুস্থ হলেও এখানে দেখার কেউ থাকে না, সেবা বলতে নিজের দেখভাল নিজেকেই করতে হয়, এখানে রেঁধে রাখার কেউ নেই, কাজ শেষ করে এসে রাঁধতে হয় অতঃপর খেতে হয়।
ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনিচ্ছার অনেক কিছু করতে হয়, মানতে হয়, মানিয়ে নিয়ে চলতে হয়। প্রবাসে সময়ের মূল্য মানে দুষ্প্রাপ্য বাঘের চোখ। প্রবাসীদের পরিবার ও অনেক জমজমাট ভাবে শৌখিনতা করে। যাদের বাবা কিংবা ভাই বিদেশ থাকে, তাদের হাতে রং বেরঙের ঘড়ি থাকে,
অনেক দামি মোবাইল ইউজ করে, ল্যাপটপ ব্যাবহার করে, মোটর বাইক কিনে, ফাইভ স্টার হোটেলে গিয়ে ডিনার করে, বার্থডে পার্টি করে। অথচ যে মানুষটা দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে, ঈদের দিনেও ডিউটি,
সারা বছর কোম্পানির ডিউটি করার পরে ঈদের যে ছুটি মিলে সেই দিনও ছাড় নেই, ডিউটি অার ডিউটি, নিজের সুখ গুলাকে বিসর্জন দিয়ে, দূর প্রবাসে পড়ে আছে! প্রিয়জনরা কি তা একটিবারের জন্যও ভাবে? তার কোন সুখে দিন কাটছে, সে কেমন আছে? কি খেয়েছে? কোথায় ঘুমাইছে, কেউ তা জিজ্ঞেস করে না।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস যখন মহামারী আকারে, তখন আমার দেশের মন্ত্রী বলেন প্রবাসীরা এখন দেশে আসতে পারবেনা, তারা দেশে এখন আসলে হয়তো দেশে করোনা নিয়ে আসবে, এটাইতো বুঝাইতে চাইছেন আমাদের মন্ত্রী মহোদয়। তাই তিনি বললেন আমরা যেন প্রবাস থেকে দেশে না যাই, ঠিক আছে মন্ত্রী
আমরা এখন দেশে যাবো না। আমরা প্রবাসে মরলে আমাদের লাশটা কি আপনার নিবেন না? আমরা মরলে আমাদের লাশটা দেশে নিয়ে আপন মাতৃভূমিতে দাফনের সুযোগ করে দিয়েন এটাই প্রবাসীদের চাওয়া।
লক্ষ লক্ষ প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা একমাত্র দেশের মায়া,পিতা,মাতার আদর বিসর্জন দিয়ে দুমোটো মোটা চাল ও মোটা কাপড় এবং সংসারের অভাব টেনে ধরতে প্রবাসে পাড়ি জমায়।
আর এই প্রবাসে মাস,বছর, যুগ যুগ পড়ে থাকে কারন সদুর প্রবাসে আসতে তার যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয় তা হয়তো কয়েক যুগ ধরে মিটিয়ে আসতে সময় লেগে যায়।তারপর আসে পরিবারের চিন্তা, একটু সচ্ছল ভাবে চলার জন্য জীবন যুদ্ধ। এই যুদ্ধে কেউ হেরে যায়,আবার কেউ না হেরেও বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে অকালে ঝড়ে পড়ে প্রবাসের মাঠিতে।বর্তমান সবাই বলে প্রবাসীরা দেশের
রেমিট্যান্স যোদ্ধা এমন কি সরকারের কাছে শুনি আমরা রেমিট্যান্স যোদ্ধা। তাহলে কি সুযোগ সুবিধা আছে প্রবাসীদের জন্য বা কি সুযোগ সুবিধা রেখেছে আমাদের মত লক্ষ লক্ষ প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা ভাইদের জন্য সরকার। প্রবাসীরা ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রম করে যে অর্থ উপার্জন করে দেশে রেমিট্যান্স পাটাই।তা দিয়ে কি দেশের কোন উপকারে আসে না।মাননীয় মন্ত্রী
একবার চিন্তা করে দেখুন।মাতৃভাষার জন্য আমাদের সুর্য সন্তান দামাল ছেলেরা ৯ মাস যুদ্ধ করেছে।একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি।শ্রদ্ধাজানাই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, ভালবাসি প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ কে।
প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা অপ্রয়োজনে কাহারো কাছে হাত বাড়ায় না।আপনি একটু চিন্তা করবেন প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা ৯ মাস না যুগ যুগ ধরে ধুধু বালু আর পাথরের সাথে যুদ্ধ করে ভীনদেশীদের সাথে পাল্লা দিয়ে দেশের মান উজ্জ্বল করে যাচ্ছে।
পরিশেষে আবারও একটি কথা বলবো দেশের প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা ভাইয়েরা বিদেশের মাটিতে মরে গেলে তাদের অন্তত লাশটা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতে বিনা মূল্যে এবং সরকারি খরচে দেশে আনার চেষ্টা করবেন।