রংপুর ব্যুরো:
রংপুরের পেশাদার সাংবাদিকদের আশ্রয়স্থল ও সকল সাংবাদিকদের যোগাযোগ এবং সাংবাদিকতার উপর কার্যক্রম পরিচালনার কেন্দ্রবিন্দু, প্রেসকাব, রংপুর। রংপুর পায়রা চত্ত্বরের তিনকোণা বিল্ডিংটি সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ থাকাকালে শহর উন্নয়ন কার্যক্রমের কারণে সেই তিনকোণা বিল্ডিংটি সরিয়ে ফেলার জন্য রংপুর শহরের সাংবাদিকদের বসবার ও খবরাখবর পাঠানোর লক্ষ্যে কোন অফিস বিল্ডিং না থাকার কারণে সাংবাদিকগণ বিভিন্ন জায়গায় বসে অতিকষ্ঠে তাদের সাংবাদিকতা পেশা চালিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে মরহুম প্রেসিডেন্ট হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের আমলে প্রেসকাব, বংপুর-এর এই জায়গাটি সকল সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ দিয়ে সেই জমির উপর সরকারি অনুদানে একটি স্থাপনা তৈরি করা হয়, রংপুর শহরের সকল সাংবাদিকের আশ্রয়স্থল হিসেবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই আমল থেকে কতিপয় সাংবাদিকদের কবলে প্রেসকাব, রংপুর-এর স্থাপনাটি দখলে নিয়ে শুরু থেকে এই ক্লাবটি দুর্নীতি, অনৈতিক কর্মকান্ড, দ্বৈতপেশা (শিক্ষক+সাংবাদিক) ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলে আসছে। বিভিন্নভাবে, যখন যে যার সান্নিধ্যে আসে তাকেই নানান কুটকৌশলের মাধ্যমে সদস্য করা হয়। দু’এক বৎসর পর পর একটি, দুটি করে নতুন সদস্য নেয়া হয়। এবং এই ক্লাবটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুদান এনে দোকান ঘর তৈরি করে এবং দোকান ঘর বিক্রি করে প্রেসক্লাব রংপুরের সদস্যদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। অতি চড়া মূল্যে সেই দোকানগুলো বহিরাগত মানুষের কাছে বিক্রি করে মালিকানা দিয়ে তারা সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেন।
রংপুর শহরের বর্তমান সাংবাদিক সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। কিন্তু প্রেসকাব, রংপুরে পেশাদার সাংবাদিকদের সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ জন, দ্বৈতপেশা মিলে সর্বমোট সদস্য ৩৫ থেকে ৩৭ জনের ঊর্ধে নয়! প্রকৃত গণমাধ্যম কর্মীদের এই ক্লাবে কোন প্রকার সুযোগ-সুবিধা বা অধিকার নেই, এমনকি পেশাদার সাংবাদিকদের বিপদ, আপদ বা প্রয়োজনে কোন সহযোগিতা করা হয় না। জাতীয় দৈনিক আমাদের কণ্ঠ’র রংপুর প্রতিনিধি হারুন-অর-রশিদ বাবু বলেন, ‘পাঁচ শতাধিক সাংবাদিকের মধ্যে হাতে গোণা ১২-১৫ জন সাংবাদিক কিভাবে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের জন্য এই বৃহৎ সম্পদটি ভোগ দখল করছে?’ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এর জবাব কিভাবে দিবেন আমি জানি না।
গণমাধ্যম কর্মীদের আশ্রয়স্থল প্রেসকাব, রংপুরকে কখনোই রংপুরের সাংবাদিক মহল নিজেদের বলে দাবী করার সক্ষমতা রাখে না! অথচ তারা প্রায় পাঁচশতাধিক সাংবাদিকদের অধিকার বঞ্চিত করে বহাল তবিয়তে তাদের কুটকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে রংপুরের সকল গণমাধ্যম কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করার সময় এসেছে।
দ্বৈত পেশাদারদের কবল থেকে প্রেসকাব, রংপুরকে মুক্ত করাসহ গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত করার নিমিত্তে ২৩ মে ২০২৩ পেশাদার সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রেসকাব, রংপুর-এর কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে জেলা প্রশাসক অফিসের সামনে মানববন্ধনের ডাক দেয় সাংবাদিক জাকির হোসেনের নেতৃত্বে। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে মানববন্ধন করার অনুমতি না পেয়ে স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গণমাধ্যম কর্মীরা।
উল্লেখ্য, প্রেসকাব, রংপুরের গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ “ক” এর ধারা ২ এর (খ) উপধারা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট সংবাদ মাধ্যমে বেতনভুক্ত সার্বক্ষণিক কর্মরত সাংবাদিকরাই-এর সাধারণ সদস্য হতে পারবেন। যারা ক্লাবের সকল অধিকার ভোগ করবেন। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২১ সলের ২৮ মার্চ জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে বলেছে, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিও শিক্ষক অপর কোন দ্বৈতপেশায়/পদবিতে জড়িত থাকলে তা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। এতদসত্ত্বেও রংপুর প্রেসকাবে দ্বৈত পেশায় জড়িত অন্ততঃ ১০ জন এবং অপেশাদার আরও ১০/১২ জন সদস্য কায়েমী স্বার্থবাদী হয়ে পেশাদার সাংবাদিকদের অধিকার হরণ করে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে লুটপাট করছেন। অথচ, অনেক পেশাদার সাংবাদিক তাঁদের রোষানলে পড়ে প্রেসকাব, রংপুরের সদস্যপদ লাভে দীর্ঘদিন ধরে অধিকার বঞ্চিত রয়েছেন। এসব অনিয়ম, নৈরাজ্য এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান হয়।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ রংপুর জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন-এর মাধ্যমে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং রংপুর জেলা শিক্ষা অফিসার এনায়েত হোসেনের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy