আসিফুজ্জামান সারাফাত, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের বরণ্য লেখক, সাংবাদিক, সংগঠক ও একুশে পত্রিকার সম্পাদক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য আজাদ তালুকদার আর নেই। আজ ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।
তিনি লিভার ক্যানসারসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
আজ বাদ জোহর নগরের ওয়াসার মোড়স্থ জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠ প্রাঙ্গণে তাঁর ১ম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।এরপর দুপুর আড়াইটায় জামালখানস্থ প্রেসক্লাবের সামনে ২য় নামাজে জানাজা এবং বাদে আসর তার নিজ বাড়ি রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া মদিনাতুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
আজাদ তালুকদার ১৯৭৮ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার উত্তর পদুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৫ সাল থেকে বন্দরনগরীতে সাংবাদিকতা করে আসছেন আজাদ তালুকদার। তিনি এর আগে একাত্তর টিভি, বৈশাখী টিভি, একুশে টিভি ও আন্তর্জাতিক ফিচার সংস্থা-সান ফিচার সার্ভিসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। এছাড়া কপ-১৭ (ডারবান), কপ-১৮ (দোহা), কপ-১৯ (ওয়ারশো) কাভার করার পাশাপাশি পেশাগত প্রয়োজনে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তরান্বিত করতে আজাদ তালুকদার গণমাধ্যমে তুলে ধরেছেন অনুসন্ধিৎসু তথ্য-উপাত্ত। একাত্তর টিভিতে ‘রাজাকারের রোজনামচা’ শীর্ষক ডকুমেন্টারি তৈরিতে সারথী হয়েছেন তিনি। ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একাত্তর টিভিতে সংবাদ প্রচার ও টক-শোতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে তাদের বিভিন্ন হুমকি ও হামলার শিকার হয়েছিলেন আজাদ।
করোনার সংক্রমণ শুরুর পর ২০২০ সালে মাত্র ১৪ দিনে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা প্রথম ফিল্ড হাসপাতাল ‘চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল’ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আজাদ তালুকদার। করোনাকালে সবাই যখন চিকিৎসা পাওয়া নিয়ে চিন্তার অস্থির, তখনই তাঁরা করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন।
বর্তমানে একুশে পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে লিভার ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি। সম্প্রতি ভারতের মুম্বাইয়ে চিকিৎসা শেষে রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।
লেখক, সাংবাদিক ও সংগঠক আজাদ তালুকদারের অকাল মৃত্যুতে সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জাদ তালুকদারের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম। এ ছাড়া সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে শোক প্রকাশ করেন। অনেকে ছুটে যান হাসপাতালে।