বরাবর,
প্রিয় সম্পাদক/ ফিচার সম্পাদক
এ আমাদের কর্মফল বা অর্জন
- জাহাঙ্গীর হোসাইন বাবলু
১৪৪৬ খৃষ্টাব্দে সূফি দরবেশ শেখ আবদুল আউয়াল (বঙ্গবন্ধুর ষষ্ট পূর্ব পুরুষ) (রাঃ) হযরত বায়জিদ বোস্তামী (রাঃ) এর বায়েত প্রাপ্ত ভক্ত হিসেবে আপন পীরের সাথে বঙ্গীয় অঞ্চল বা বর্তমান বাংলাদেশে আসেন ইসলাম প্রচারে এছাড়াও আরো হযরত শাহজালাল, শাহ পরান, শাহ কামাল, শাহ জামাল, হযরত খাজা, শাহ শরফুদ্দীন চিশতি, শাহ মাকদুম (রাঃ) শাহ কেল্লাশাহসহ ৩৬০ আউলিয়া, শাহ আলী বাগদাদী, সালেহ বাবা, গোলাম রহমান সহ হাজার হাজার অলী সূফি গাউস কুতুবদের আগমনের মাধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচার শুরু করে। হিন্দু -বৌদ্ধ অধ্যুশিত এ অঞ্চল, সূফিবাদের মাধ্যমে ইসলাম প্রচারান্তে হয়ে ওঠে এশিয়ার সূফিবাদ ভিত্তিক অনন্য একটি মুসলিম প্রধান দেশ।
স্বাধীন সার্বভোম রাষ্ট্র হিসেবে যেহেতু সর্ব ধর্মের আবাসস্থল। সে হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব১৯৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল ধর্মের অংশ গ্রহনে ও বিসর্জনে অর্জিত স্বাধীন ও যীষু খৃষ্ট জন্মের আরো প্রায় ২৫০০ বছরের পক্ষান্তরে পুরনো, বাঙালী সংস্কৃতীর পূন্যভুমি এ দেশটির নাম বাংলাদেশ। সেহেতু বাঙালী জাতি রাষ্ট্রের জনক ও স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর বালাদেশ সংবিধানের উল্লেখযোগ্য মুলনিতী মোতাবেক বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে চিরাচরিত আত্ম প্রকাশ।
এখানে মুসলমানসহ কোন ধর্মেরই যৌক্তিক দাবি আব্দারের বাইরে অতিরিক্ত কিছু আশা করার কারন নেই। এখানে কোন ধর্মের মাধ্যমেই রাজনীতি ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি কলুশিত করা এবং উগ্রবাদী কর্মকান্ডের কোন প্রকার সুযোগ নেই। যে ব্যাক্তি, সংগঠন কিংবা দল যখনই বেশি অসহনীয় কোন কিছু করেছে। তখনই তাদের বিঁষদাত তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেনই যেনো ইসলামের নাম নিয়ে কোন ব্যক্তি /গুষ্টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে হাজির হলে, কোন কিছু উপস্থাপন করলে তিনি অনায়াসে তাদের আবদারটা কোন কিছু না ভেবেই সহজে দাবি মেনে নেন ও পুরন করেন। এর পিছনে কোন ষড়যন্ত্র আছে কিনা, কাকে কোন দুরত্বে রেখে কাজ করলে রাষ্ট্র/দেশের কল্যান হবে কি না সে সকল না ভেবে আস্করা দিলে ঐ মানুষ গুলো কোন অতিরঞ্জিত করলে সে খেত্রে তাঁদের তুলনায় আমরাও কম দায়ী নই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সপ্তম পূর্ব পুরুষের ধর্মিয় চৈতন্যবোধের এবং আদর্শের যে রক্ত তাঁর ধমনিতে প্রবাহিত,হয়ত সে কারনেই এ সাঁয় দিয়ে চলছেন। না হয় একের পর এক কেনো এতো ছাড়? যারা ধর্মকে বানিজ্য কিংবা অর্থ উপার্জনের দোকান বানিয়ে ফেলেছে তাদের জন্য খুব বুঝে শুনে বিবেচনা করা প্রয়োজন। না হয় আজকের বর্তমান সময়ের মতো আরো অনেক ঘটনা ওরা ভবিশ্যতে ঘটাতে পারে।
মনে পড়ে (১) সেদিন সেি বিচারালয়ের ভাস্কর্যকে প্রতিষ্ঠা দেওয়া হলে আজ তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার মতো এতো বড় ঐদ্ধত্যপুর্ণ দুঃসাহস পেতো না কিংবা আজ কুষ্টিয়ায় জাতির জনকের ভাস্কর্য ভাঙার সাহস পেতো না।
(২) যারা সকল ওলী আউলিয়া পীর ফকিরগনের সকল মাঝার গুড়িয়ে দিতে চেয়ে জনসম্মুখে বক্তব্য দিয়েছিলো এ দেশ থেকে সূফিবাদীদের ও সূফিবাদের বীজ উপড়ে ফেলতে চেয়েছিলো, নিশ্চিহ্ন করে একটি ইয়াজিদী কিংবা ওহাবী রাষ্ট্র কায়েম করতে চায় সেই তাদেরকে সরকার যখন তাতক্ষনিক ভাবে গ্রেফতার করে না অথচ একজন বাউল শিল্পি শরিয়ত সরকারকে গ্রেফতার করা হয়। তখন ফতোয়াবাজ, উগ্রপন্থিদের দ্বারা যে কোনো কিছু খতি সাধন হলে তা মোটেই বেশি কিছু নয়, আরো বেশি শক্তি প্রয়োগ ও উগ্রতার ক্ষমতা রাখে। হয়ত এখনই ওদের বিঁষবৃক্ষ উপড়ে পেলতপ হবে, না হয় মেনে নিতে হবে ও ধরে নিতে হবে এটাই আমাদের কর্মফল বা অর্জন।
(৩) যে চরমোনাইর আল্লাহর অলী পীরে কামেল সৈয়দ এছাহাক (রঃ) কখনো কোনদিন সূফিবাদের সাথে রাজনীতী মিশ্রন করে ক্ষমতার লোভ করেননি। আল্লাহর অলী পীর ফকিরগন কখনো ক্ষমতার লোভ দুনিয়াভি ভাবনার তোয়াক্কা করেননি। তাই হযরত এছাহাক (রঃ) ও ওসবের স্বপ্ন দেখতেন না। তিনি বেলায়েতের এক অনন্য সাধক পুরুষ ছিলেন। সে সময় হতেই এর পরবর্তী প্রজন্ম সৈয়দ ফজলুল করিম'র মাহফিলে মানুষ লঞ্চ, নৌকা যোগে ঔখানে যেতেন এক কথায় নদী হাতরে যেতে হতো, আজ সেখানে শেখ হাসিনা সরকার সেতু তৈরী করে চরমোনাই দরবার পর্যন্ত সহজ সড়ক যোগাযোগের ব্যাবস্থা করেছেন। সেই তারাই আজ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে মুর্তি বলে সাধারন মানুষের মাঝে ধর্মীয় ব্লাক মেইলের মাধ্যমে উগ্রতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় ব্যাকুল। কারন এখানে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন রাজনৈতিক দলটির নামে বড় একটি হালুয়া রুটির হিসেব নিকাশ রয়েছে। অর্থাৎ ক্ষমতা অংশিদাত্বের স্বাদ নিতে চাইছেন বললে ভুল হবে না। তাঁরা ধর্মিয় কোমল অনুভুতিতে রাজনৈতিক কুট কৌশল অবলম্বনে সাধারন মানুষকে বানাচ্ছে বলির পাঠা। অপরিকল্পিত শান্তিপ্রিয় মেধাকে সম্বল করে পরিকল্পিতভাবে ঘোলা জলে মাছ শিকারের চেষ্টায় মত্ব।
(৪) পৃথিবীতে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি নিজগুনে নির্দেশে সময়ের শত্রু, ষড়যন্ত্রকারী নেতা হেফাজতের সফি সাহেবকে লালবাগ হতে জামাতের জিম্মিদশা থেকে অক্ষত উদ্ধার করে সরকারের তদারকিতে উড়োজাহাজে করে চট্রগ্রামে নিরাপদে পৌঁছে দিলো। আজ সেই হেফাজতের ভুমিকা কি তা সবাই দেখছে।
(৫) দীর্ঘ বছর নানা সরকারের কাছে কান্না কাটি করেও কমপক্ষে আশ্বাস ও পায়নি কওমি মাদ্রাসার সম্মতি। সেখানে নীজগুনে সে মহৎ কাজটি শেখ হাসিনা করলেন। হেফাজত,র বেশ কজন হরযত, নানা পন্থায় সরকারের শিকড় কাটতে কিংবা উপড়াতে মরিয়া হয়ে লেগেছে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শত্রু গোষ্ঠী বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ বিনিয়োগ করে এ শুকরের ডিমে তা দিয়ে যাচ্ছে। কে বা কারা তা গ্রহন করছে তা তদন্ত করা দরকার। সেই পুরনো শক্রু, জামাত, বিএনপি তো আছেই। সব মিলিয়ে ওরা যে কোনো সময় যে কোন কিছু করে দিতেই পারে, যদি এখনো সরকার আপোশহীন শব্দটির অর্থ না বোঝে। যদি সরকার এখনো কঠোর না হয় তবে ওহাব নাজদীর আদর্শিক সন্তান নামক সয়তানগন সব কিছু বিনাশ করে দেবে। এমন কি সুযোগ পেলে ওরা প্রয়োজনে সেদিন ইয়াজিদ কতৃক ঈমাম বংশ ধংসে যা করেছিলো, যা ঘটিয়েছিলো তা করতেও দ্বিধাবোধ করবে না। বিদেশি অর্থের মিঠা মিঠা স্বাদে এমন ভাস্কর্য ভাঙতে ভাঙতে এদেশ বিশ্বের দরবারে কলঙ্কিত দেশ হিসেবে প্রমান করে দেবে। আজ আমাদের চোখ কান খোলা রেখে সামনে এগুতে হবে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy