আবুল হাশেমঃ
বসন্ত মানেই প্রাণবন্ত প্রকৃতি। চারদিকে ফুলের সমাহার, পাখি আর ঝিঁঝি পোকার ডাক, সব মিলিয়ে এক সুরেলা আবহ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও লেগেছে বসন্তের ছোঁয়া। পাতাঝরা গাছের সৌন্দর্যে ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণা সেজেছে নতুন রূপে।
বাংলাদেশে বসন্তকে বলা হয় ঋতুরাজ। ফাল্গুন ও চৈত্র—এই দুই মাস মিলে বসন্তকাল, যা বছরের শেষ ঋতু। দখিনা বাতাস আর নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া নিয়ে বসন্তের আগমন ঘটে। শীতের নির্জীব প্রকৃতি যেন হঠাৎ করেই প্রাণ ফিরে পায়। সৌন্দর্য, রং, রূপ, গন্ধ আর স্পর্শের এক অপূর্ব সমন্বয়ে ঋতুরাজ বসন্ত হাজির হয়। তাই তো কবি বলেছেন—
“কোকিলের কুহুতানে আজ সুরেলা বসন্ত,
সেই সুরের তালে মেতে উঠেছে সুদূর দিগন্ত।”
কেউ বলে ফাল্গুন, কেউবা বলে পলাশের মাস।
বসন্তের আগমনে প্রকৃতি তার রুক্ষতা মুছতে শুরু করে, চারদিকে দেখা মেলে সজীবতার। যদিও বসন্তের আনুষ্ঠানিক আগমনের জন্য আরও কিছুদিন বাকি, তবে প্রকৃতি যেন আগেই তার আগমনী বার্তা দিচ্ছে। রাবি ক্যাম্পাসে বইছে মৃদু বাতাস, নেই কুয়াশার চিহ্ন। চারদিকে ফুটতে শুরু করেছে হরেক রকমের ফুল, পাতাঝরা বৃষ্টিতে সৌন্দর্য আরও বেড়ে গেছে। আবাসিক হলগুলোও যেন পরিণত হয়েছে ফুলের বাগানে। আস্তে আস্তে সবুজের সমারোহ ছেয়ে যাচ্ছে চারপাশ।
বসন্তে চারদিকে ফোটে পলাশ, শিমুলসহ নানা রঙের ফুল। গাছে গাছে নতুন পাতার আভাস, শোনা যায় পাখির কিচিরমিচির। প্রকৃতির মতো মনও হয়ে ওঠে উচ্ছ্বসিত। আগমনী বসন্তের সাজসাজ রব যেন রাবি ক্যাম্পাসকে আগেভাগেই মেতে তুলেছে। পহেলা ফাল্গুনে ঋতুকে বরণ করে নিতে শিক্ষার্থীরাও উদগ্রীব।
বসন্তের আমেজে মোহিত হয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমাতুস সানিহা বলেন, “বসন্ত আমার বরাবরই খুব পছন্দের, শুধু আমার না, সবারই। কিছুদিন আগে শীতের সকালে পাখির ডাক শুনতে পেতাম না, এখন শুনতে পাচ্ছি। ক্যাম্পাসের দক্ষিণা বাতাস বেশ উপভোগ করছি। উত্তরবঙ্গের হাড়কাঁপানো শীত বিদায় নিচ্ছে, আর বসন্তের আগমনী হাওয়া লাগছে গায়ে। সকালের মিষ্টি রোদ, বিকেলের শান্ত বাতাস আর রাতের স্বচ্ছ আকাশের তারকারাজি—সব মিলিয়ে বসন্তের আগমন দারুণ লাগছে।”
আইসিই বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াশিক ইমতিয়াজ বলেন, “কিছুদিন আগেও প্রচণ্ড শীতের কারণে ক্লাসে যেতে মন চাইত না। কিন্তু এখন চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। ক্যাম্পাসে গেলেই মনে হয় বসন্ত বুঝি এসেই গেছে! চারদিকে এত সুন্দর বসন্তের আবহ! এখন আর ঘরে ফিরতে ইচ্ছে করে না, মনে হয় দিনভর ক্যাম্পাসের এই সৌন্দর্য উপভোগ করি।”
ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনুভা হোসেন অর্নি বলেন, “এখন ক্যাম্পাসে থাকতে এত ভালো লাগে! চারদিকে বসন্তের আমেজ। আর পহেলা ফাল্গুনের জন্য অপেক্ষা করতে পারছি না! আমার মনও এখন অনেক ভালো থাকে। বসন্তের সময়টাকে দারুণভাবে উপভোগ করছি।”
Leave a Reply