স্পোর্টস ডেস্ক: ভক্তদের অপেক্ষার পালা বোধ হয় ফুরোলো। বলা যায় বার্সা ফ্যানদের জন্য সুসংবাদই। ক্লাব ছাড়তে চাইলেও শেষ পর্যন্ত আরো এক মৌসুম বার্সেলোনায় থাকতে রাজি হয়েছেন লিওনেল মেসি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেসির বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসি।
ফুটবল বিষয়ক বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যম গোল এবং ব্লেচার রিপোর্ট জানিয়েছে, বার্তোমেউয়ের সঙ্গে আলোচনার পর আরো এক মৌসুম বার্সেলোনায় থাকতে রাজি হয়েছেন মেসি। শিগগিরই এ সম্পর্কে চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলে হারের পর থেকেই গুঞ্জন চলছিল বার্সা ছাড়তে পারেন মেসি। এই গুঞ্জন সত্যি করে কিছুদিন পরই ব্যুরোফ্যাক্সের মাধ্যমে ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে দলবদল করার অনুমতি চান লিও। তবে মেসিকে কোনোভাবেই বিক্রি করতে চাননি বার্সা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ।
এমতাবস্থায় দুপক্ষের মতবিরোধে অনেকটা নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়। প্রথমে মেসির সঙ্গে বার্তোমেউ কথা বলতে চাইলে আর্জেন্টাইন তারকা সাড়া দেননি। পড়ে মেসি নিজেই বোর্ডের সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু এসময় বোর্ডের পক্ষ থেকেই মেসিকে উত্তর দেয়া হয়নি।
সংকট নিরসনে গতকাল আর্জেন্টিনা থেকে স্পেনে পৌঁছান মেসির বাবা হোর্হে মেসি। বিকেলেই বার্সা বোর্ডের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। উভয় পক্ষের দুই ঘণ্টার আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি বলে সেসময় জানানো হয়েছিল। তবে একদিন পরই মেসির বাবা জানালেন, শেষ পর্যন্ত বার্সায় থাকতে রাজি হয়েছেন মেসি।
এর আগে মেসির বার্সা ছাড়তে চাওয়াকে কেন্দ্র করে বেশ নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বার্সেলোনার দাবি ছিল, মেসি ক্লাব ছাড়তে চাইলে তাকে বাই আউট ক্লজের ৭০০ মিলিয়ন ইউরো দিতে হবে। অন্যদিকে মেসি দাবি করেন, শর্ত অনুযায়ী তিনি ফ্রি-তে যেকোনো ক্লাবে যেতে পারবেন।
জানা গেছে, পরবর্তীতে বিশেষ এক শর্তে মেসিকে বার্সা ছাড়ার অনুমতি দিতে রাজি হয়েছিল কাতালান ক্লাবটি। এ বিষয়ে ইএসপিএন জানিয়েছিল, মেসিকে ফ্রিতেই ছেড়ে দেবে বার্সেলোনা। কিন্তু শর্ত একটাই, আগামী মৌসুমে কোনো ফুটবল খেলতে পারবেন না তিনি।
অর্থাৎ বার্সেলোনার চুক্তি অনুযায়ী আগামী মৌসুমে মেসিকে কোনো বেতন দেয়া হবে না এবং গ্রীষ্মের আগে তিনি কোনো দলে যোগ দিতে পারবেন না। অবশ্য তখন এমনিতেই মেসির সঙ্গে বার্সার চুক্তির মেয়াদ শেষ হতো। ফলে এই চুক্তি মানলে বরং মেসিরই ক্ষতি বেশি হতো।
২০১৭ সালে মেসির সঙ্গে শেষবারের মতো চুক্তি নবায়ন করেছিল বার্সা। সেসময় শর্ত ছিল, তিনি চাইলে প্রতি মৌসুম শেষেই ক্লাব ছাড়তে পারবেন। তবে এ ইচ্ছাটা মৌসুম শেষ হওয়ার ২০ দিন আগে জানাতে হবে। সেটা না করলে নতুন মৌসুমের জন্য ফের কাতালান ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন আর্জেন্টাইন তারকা।
মেসির আইনজীবীরা দাবি করেছিলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এই মৌসুম শেষের সময়সীমা পিছিয়ে গেছে। ৩১ আগস্ট চলতি মৌসুম শেষ হয়েছে এবং এর আগেই মেসি ক্লাব ছাড়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু তার দাবি উড়িয়ে দেয় বার্সা ম্যানেজমেন্ট। কাতালান ক্লাবের দাবি, গত জুনেই মেসির ক্লাব ছাড়ার আবেদনের সময়সীমা পেরিয়েছে।
এই অবস্থার মাঝে নতুন কোচের অধীনে করোনা টেস্ট ও অনুশীলন কোথাও যাননি মেসি। ফলে সংকট আরো ঘনীভূত হয়। মেসি বারবার ফ্রিতে যেতে চাইলেও তাকে ৭০০ মিলিয়নের কমে না ছাড়ার ঘোষণা দেয় বার্সেলোনা। ক্লাবটি নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসায় মেসির বার্সায় থাকার বাইরে উপায় ছিল না।
বলা যায়, কাতালান ক্লাব কর্তৃপক্ষ নমনীয় না থাকার কারণেই শেষ পর্যন্ত আরো এক বছর থাকতে বাধ্য হলেন মেসি। একইসঙ্গে গত কয়েকদিনের নাটকীয়তারও সমাপ্তি ঘটল এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy