গৌরবের যে স্বাধীনতা। তা এমনি এমনি আসেনি। ৩০ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। দুর্বার সাহসিকতা দেখাতে হয়েছে এ দেশের সাধারণ মানুষকে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ আজও হিসাব মেলাচ্ছেন কী পেলাম আর কী পেলাম না।
১৯৪৭ এ জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতীয় উপমহাদেশ দ্বিখণ্ডিত হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সব সংজ্ঞার বাইরে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র। ভৌগোলিক দূরত্ব, ভাষা, সংস্কৃতি ও জলবায়ুর প্রভাব সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়। অযৌক্তিক রাষ্ট্র পাকিস্তান বাঙালির জন্য হয়ে দাঁড়ায় গলার কাঁটা। বাঙালি প্রথমে রক্ত দিয়ে ভাষার দাবি প্রতিষ্ঠিত করেছে। এরপর ধাপে ধাপে মুক্তির দিকে কেবলই এগিয়েছে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে পৃথিবীর ইতিহাসে আওয়ামী লীগ পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল নিরঙ্কুশ সংখ্যাধিক্য ভোটে বিজয়ী হয়। জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ একাই ১৬৭টি আসনে বিজয়ী হয়েছিল।
জেনারেল ইয়াহিয়া এবং ভুট্টো বুকের তলায় অভিসন্ধি লুকিয়ে রেখে বাঙালির প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে টালবাহানা শুরু করে।
বাঙালি মেনে নেয়নি চাপিয়ে দেওয়া এ অন্যায়। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর তারা বুঝে গিয়েছিল কী করতে হবে এখন।
এরপর কেবলই রক্তক্ষয়। হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও পাপাচারের প্লাবন ছুটিয়েছে পাকিস্তানি বাহিনী।
এতকিছুর পরেও একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে বাঙালি।
বাংলাদেশ হয়ে উঠুক সকল মানুষের। এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মেসবাহ কামাল।
তিনি বলেন, স্বপ্নটা ছিল মুক্তির। কিন্তু সেটা একমাত্র চাওয়া ছিল না। বাংলাদেশ তো সাধারণ মানুষের হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরে বাংলাদেশ ভিন্ন পথে, ভিন্ন অর্থনৈতিক অভিযাত্রার পথে হাঁটতে শুরু করে।
একাত্তরে স্বাধীনতার যে অগ্নিশিখা জ্বলেছিলো আজও তা চিরবহমান। কিন্তু মানুষের জীবনে কতটা মুক্তি এল, স্বাধীনতাই বা কতটা অর্থবহ হলো। বিজয়ের মাস এলে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয় পুরো জাতি।