1. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  2. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের বাঘে খেয়েছে স্বামীকে, মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা মোরশেদা
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৪:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
এপি হাউজ স্টার অ্যাওয়ার্ড সিজন ২, ২০২৪ স্বাধীনতাবিরোধীরা সুযোগ পেলেই ছোবল মারতে চায়: রাষ্ট্রপতি অবশেষে রাজধানিতে  দেখা মিলল  বৃষ্টির যে কারণে যৌনতার প্রতি আগ্রহ কমে যায় টেকনাফ সীমান্তে  ভেসে আসছে মর্টার শেল ও ভারি গোলার বিকট শব্দ,  দেখা যাচ্ছে  আগুনের কুণ্ডলী বৈদেশিক ঋণনির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে বাড়তি পরিশ্রমের  নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর  সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী লক্ষ্মীপুরে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ বরুড়ায় বই ও কসমেটিক বিক্রেতাকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড,  স্বামী’র কারাদণ্ড বদলগাছীতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কাঠ মিস্ত্রিকে সহায়তা দিলেন সংসদ সদস্য সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের বাঘে খেয়েছে স্বামীকে, মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা মোরশেদা

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৩, ৮.০৪ পিএম
  • ৭০ বার পঠিত
  •  এস এম সাইফুল ইসলাম কবির. বাগেরহাট:

বিশ্ব ঐতিহ্য প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিশ্ব ঐতিহ্য পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ হিসেবে সুখ্যাত সুন্দরবনের নদী-খালে ধরা মাছ বিক্রি করে যা পেত তাতেই চলতো তিনজনের সংসার। অনেক টাকা পয়সা না থাকলেও, স্বামী কাছে ছিল এতেই আমার শান্তি ছিল। তিনি তো চলে গেল। এখন আমাদের কী হবে। এই মেয়েকে (সিনথিয়া) কীভাবে আমি মানুষ করবো। জীবনটা অন্ধকারে ঢেকে গেল। এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বলছিলেন সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে নিহত শিপারের স্ত্রী মোরশেদা বেগম।

২৩ বছর বয়সী মোরশেদা আরও বলেন, মেয়েটির বয়স মাত্র সাড়ে পাঁচ বছর। একটি ঘর ছাড়া আমাদেরতো আর কিছু নেই। শ্বশুরেরও এই বাড়ি ছাড়া কোনো জমি-জমা নেই। নিজের বাবাও বৃদ্ধ, তাকে চলতে হয় অন্যের ওপর ভরসা করে। কয়েক মাস পরে মেয়েকে স্কুলে দিতে হবে। কীভাবে কি করবো জানি না।

শিপারের বাবা ফারুক হাওলাদার ও ১৭ বছর বয়সী ছোট ভাই ফোরকান হাওলাদারও জেলে। তারাও সুন্দরবন থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। ছেলের এমন মৃত্যুতে ভেড়ে পড়েছেন তারাও।

বাবা ফারুক হাওলাদার কান্না কণ্ঠে বলছিলেন, শিপার সুন্দরবনে যাওয়ার আগেই আমি সাগরে গেছিলাম মাছ ধরতে। ৩০ সেপ্টেম্বর সাগর থেকে ফিরে শুনি চারদিন ধরে শিপার বাড়ি আসে না। ফোনও বাড়িতে রেখে গেছে। পরের দিন সুন্দরবনে অনেক খোঁজাখুঁজি করে আমার বাবার মাথার খুলি পেয়েছি। বাবা তো চলে গেছে, কিন্তু এখন আমার নাতির কী হবে! আপনারা যারা আছেন, তারা যদি একটু সহযোগিতা করেন তাহলেই হয়তো মেয়েটা বেঁচে থাকতে পারবে।

সাউথখালী ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. কামাল হোসেন তালুকদার বলেন, শিপার অনেক ভালো ছেলে। সে পাশ নিয়েই সুন্দরবনে যেত। বাড়ির পাশেই বন হওয়ায় হয়তো পাশ নেয়নি। এরপরেও মানবিক দৃষ্টিতে শিপারের পরিবারকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। কারণ শিপারের স্ত্রী ও সন্তানের বেঁচে থাকার মতো কোনো অবলম্বন নেই। গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে সুন্দরবন বন বিভাগ, উপজেলা পরিষদ, মৎস্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনসহ সকলের কাছে শিপারের পরিবারকে সহযোগিতার আবেদন করছি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, শিপার বন বিভাগের পাশ না নিয়েই সুন্দরবনে প্রবেশ করেছিল। যার কারণে আমাদের পক্ষ থেকে তাকে কোনো সহযোগিতা করা সম্ভব হচ্ছে না। পাশ নিয়ে সুন্দরবনে গেলে আমরা তাকে আইন অনুযায়ী সহযোগিতা করতে পারতাম। এজন্য সকল জেলে ও স্থানীয়দের পাশ পার্মিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করার অনুরোধ করেন এই কর্মকর্তা।

এর আগে, ২৭ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে ঝাঁকি জাল (খেওলা জাল) নিয়ে শিপারের বাবা সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের তুলাতলা এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের ফারুক হাওলাদারের ছেলে শিপার হাওলাদার। নিখোঁজের চার দিন পরে ১ অক্টোবর রোববার সকালে ওই এলাকা থেকে শিপারের দেহ বিচ্ছিন্ন মাথার খুলি, শরীরের দুটি হাড় ও তার পরনে থাকা প্যান্ট-গেঞ্জি উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরবর্তীতে ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী শিপারের দাফন সম্পন্ন হয়।

এদিকে সুন্দরবনে বাঘ এবং কুমিরের আক্রমণে কেউ মারা গেলে তার পরিবারকে ৩ লাখ টাকা এবং গুরুতর আহত হলে ১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও, শিপার হাওলাদার সেই সুবিধা পাবেন না। কারণ শিপার বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই সুন্দরবনে প্রবেশ করেছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews