রেখা মনি ,নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশীয় জাতের বাঁশের পাশাপাশি দেশে বিপুল পরিমাণ বাঁশের চাহিদা মেটাতে বোম্বে জাতের বাঁশের ব্যাপক বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে লালমনিরহাটে।প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ বাঁশ চাষে ভাগ্য ফিরতে পারে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের বাঁশচাষীদের। এ লক্ষে সীমিত আকারে ওই জাতের বাঁশ চাষ শুরুও করেছেন অনেকে।
লালমনিরহাটের কাকিনা পাল পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ওই জাতের বাঁশের চাষ। কথা হয় আবুল হোসেন (৮১)নামের বাঁশ চাষীর সাথে। ১০/১২ বছর আগে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে ওই বাঁশের একটি কঞ্চি কলম এনে নিজ ভিটের এক কোণায় রোপন করেন তিনি। তা থেকে প্রায় একটি ঝাড় তৈরি হয়েছে তার। যা দেখতে ছুটে আসেন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনেকেই।
তিনি বলেন, তার লাগানো এ বাঁশ সাধারণ জাতের বাঁশের চেয়ে অনেক বেশি লম্বা ও মোটা হওয়ায় প্রায় দুই-তিনগুন বেশি মুল্যে তা বিক্রি হয়। বিশেষ করে বাঁশের বেড়া ও কাঠের ফ্রেমের তৈরি টিনের ঘরের খুঁটি হিসেবে সহজে ব্যবহার উপযোগী এবং সাশ্রয়ী হওয়ায় ব্যবহারকারীদের নজরও এ জাতের বাঁশের উপর।
আবুল হোসেন জানান, শুধু যে বাঁশের মুল্যেই বেশি তা নয় এর চারার মুল্যও অনেকটা বেশি। একটি মুড়া চারা ৬০০টাকা অন্যদিকে একটি কঞ্চি চারা বিক্রি হয় ৩০০ টাকায়। এমন মুল্যে চারা ক্রয়ের চাহিদা দিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি সহ চাষীরা।
তবে ভিটের বাইরে জায়গা জমি না থাকায় তার চারার যোগান অনেকটাই অপ্রতুল।ব্যাপক ভিত্তিতে এর চাষ করা গেলে অনেকটাই লাভবান হতেন বলে মনে করেন পরিবারটি।
আবুল হোসেনের বোম্বে জাতের বাঁশ চাষের সফলতা দেখে তা চাষাবাদ শুরু করেছেন ওই এলাকার শহিদুল মাষ্টারও।
শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান,আবুল হোসেনের বাঁশ ঝাড় দেখে আমিও তার কাছ থেকে চারা নিয়ে এসে লাগাইছি। আমার চারা গুলো বাড়তে শুরু করছে।তবে এ বাঁশ চাষে যদি সরকারী ভাবে কোন উদ্দ্যেগ নেয়া হয় তাহলে বাহিরে রপ্তানি করা সম্ভব।
অপরদিকে কম কঞ্চির ওই বাঁশগুলো দেখতে সুন্দর হওয়ায় সেখানে এসে ছবিও তুলেন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী।
এ জাতের বাঁশ চাষ বিষয়ে কথা হলে লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিধুভূষণ রায় জানান, তিনি সরেজমিন বিষযটি দেখে এ জাতের বাঁশ চাষে কি করনীয় সে ব্যাপারে চাষীদের সাথে কথা বলবেন।