ভুক্তভোগী ভিকটিম চট্টগ্রাম জেলার ডবলমুরিং এলাকায় তার স্বামী সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। ভিকটিমের স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন।২০১৭ সাথে ভিকটিমের স্বামী দেশে আসেন।এসময় আসামী শেখ রাসেলের সাথে ভিকটিমের স্বামীর ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব হওয়ার সুবাধে সে প্রায়ই ভিকটিমদের বাড়িতে বেড়াতে আসতো।রাসেল তার মায়ের চিকিৎসার কথা বলে ভিকটিমের স্বামীর নিকট হতে ৩ লক্ষ টাকা ঋণ নেয়।
ঋণ নেওয়ার কিছুদিন পর ভিকটিমের স্বামী আবার বিদেশ চলে যায়।ভিকটিমের স্বামী বিদেশ যাওয়ার আগে রাসেলকে বলে যায় ঋণের টাকা প্রতি মাসে কিছু কিছু করে ভিকটিমকে দেয় এবং তার সংসারের খোঁজ খবর রাখতে।
এই সুবাধে রাসেল ভিকটিমের স্বামীর অনুপস্থিতে প্রায় সময় তাদের বাড়িতে টাকা দেয়ার জন্য আসত এবং তাদের সংসারের খোঁজ খবর রাখতো।এভাবে ভিকটিমের সাথে রাসেলের ভালো ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে।
ভিকটিমের বাড়িতে রাসেলের আবাধ চলাচলের সুবাধে রাসেল ভিকটিমের অজান্তে তার ব্যক্তিগত মুহুর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও রেকর্ড করে রাখে।পরবর্তীতে রাসেল ভিকটিমকে সেইসব ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে তার সাথে শারীরিক সর্ম্পক করার প্রস্তাব দেয় এবং সে যদি রাজী না হয় তবে তা তার স্বামীসহ সবার নিকট ছড়িয়ে দিয়ে তার সংসার ভেঙে দেয়ার হুমকি প্রদান করে।ভিকটিম তার প্রস্তাবে রাজি না হলে তখন রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমের ছবি ও ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
পরবর্তীতে ভিকটিম গত ১৫ই জানুয়ারি ২০২২ইং চট্টগ্রাম জেলার ডবলমুরিং থানায় একটি সাধারণ ডায়রী দায়ের করেন।ডবলমুরিং থানা পুলিশ রাসেলকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং তার মোবাইল হতে ভিকটিমের ছবি ও ভিডিও ডিলেট করে দেয় এবং এমন কাজ আর করবে না বলে অঙ্গীকার প্রদান করে।
পরবর্তীতে এমন কাজ আর না করার শর্তে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।কিন্তু ছাড়া পাওয়ার পর রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমের ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি ও ভিডিও এডিট করে তার আত্মীয় স্বজন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় এবং ভিকটিমকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে।ভিকটিম নিরুপায় হয়ে বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইব্যুনাল,চট্টগ্রাম বরাবর পিটিশন মামলা দায়ের করেন।যার মামলা নং-২৩৮/২০২২, (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন -২০১৮ সালের ২৩/২৫/২৬/২৯ ধারা)।মামলা দায়েরের পর আসামী এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক বর্ণিত আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে।
ভিকটিমের এমন অভিযোগের বিষয়টি র্যাব-৭,চট্টগ্রাম মানবিকতার সহিত আমলে নেয়।এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭,চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল বর্ণিত মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গত ২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং সাড়ে বারোটায় তারিখ চট্টগ্রাম মহানগরীর চট্টগ্রাম মহানগরীর টাইগার পাস এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী শেখ রাসেল(২৮)কে আটক করতে সক্ষম হয়।রাসেল নগরীর ডবলমুড়িং থানা আওতাধীন মতিয়ারপুল এলাকার মৃত ফজল হকের ছেলে।পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী বর্ণিত মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী বলে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে।