কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় বসত ঘরের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে জেসমিন আক্তার নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাতে আনুমানিক ১০টার দিকে উপজেলার চান্দলা ইউনিয়নের ছোটধুশিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জেসমিন আক্তার (২৩) ছোটধুশিয়া গ্রামের মৃত জুজু মিয়ার মেয়ে। এছাড়া সে একই উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ শিদলাই গোলাবাড়িয়া গ্রামের আবু জাহেরের ছেলে মো. আকতার হোসেনের স্ত্রী।
নিহতের বড় ভাই আবুল বাশার জানান- গত প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে গোলাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আকতার হোসেন (২৮) সঙ্গে আমার বোন জেসমিন আক্তারের সামাজিক ও আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ হয়। আমার বোন জেসমিন আক্তারের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
তিনি জানান- বিবাহের পর হইতে আমার বোন জেসমিন আক্তার এবং তাহার স্বামী ও পরিবারের লোকজনের মধ্যে সাংসারিক বিষয় নিয়া মাঝেমধ্যে ঝগড়া বিবাদ হইত। যাহার কারণে আমার বোন জেসমিন আক্তার বেশিরভাগ সময় আমার বাড়িতে বসবাস করিত। মাঝেমধ্যে স্বামীর বাড়িতে যেত। জেসমিন আক্তারের স্বামী ঢাকায় দর্জির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
গত বুধবার (১৮ অক্টোবর) আনুমানিক বেলা ১১টার সময় আমার বোন জেসমিন আক্তার তাহার স্বামীর বাড়িতে যায় ও সেখানে সে না থেকে একইদিন বিকেলে আমাদের বাড়িতে চলে আসে। ওইদিন রাত আনুমানিক ৯টা প্রতিদিনের ন্যায় জেসমিন আক্তার রাতের খাবার খাওয়ার পর আমাদের অপর একটি বসত ঘরে ঘুমানোর উদ্দেশ্যে যায়। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ১০টার সময় হঠাৎ আমার ভাগ্নী মোসা. জান্নাত আক্তার (আড়াই বছর) কান্নাকাটি শুনে বাড়িতে থাকা অন্যান্য লোকজন ওই ঘরে গিয়ে দেখে ভেতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করা। এসময় আমার বোন সোহানা আক্তার ডাক-চিৎকারে করিলে বাড়ির লোকজন এসে জানালার খিল ভেঙে ঘরের ভিতরে গিয়ে দেখে আমার বোন জেসমিন আক্তার বাঁশের তীরের সাথে তার নিজের ব্যবহৃত ওড়না দিয়া গলায় ফাঁস লাগাইয়া ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। আমি চিৎকার চেঁচামেচি শুনে দোকান থেকে বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি জানতে পারি।
পরে ঘটনার বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানাইলে স্থানীয় চেয়ারম্যান ব্রাহ্মণপাড়া থানা পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার বোন জেসমিন আক্তারের লাশ বাঁশের তীর থেকে নামিয়ে থানায় নিয়ে যায়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল বলেন, নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. আবুল বাশার থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।