লন্ডন থেকে জমির উদ্দিন সুমন :
ব্রিটেনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায়
সরকার তিন স্তরের যে বিধিনিষেধ ব্যবস্থা ঘোষনা করেছিলো, তার সর্বোচ্চ স্তর টায়ার - থ্রি’র আওতায় চলে
আসার উপক্রম হয়েছে ইংল্যান্ডের প্রায় শহর ও অঞ্চলের। ওয়েলসেও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। স্কটল্যান্ড
কর্তৃপক্ষও পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে।
সংক্রমণের হার ও ভাইরাসের সাথে সংযুক্ত মৃত্যু হার পুরো ইউকে জুড়েই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে
বিভিন্ন অঞ্চলকে মাঝারি, উচ্চ বা অতি উচ্চ সতর্কতার স্তরে বিভক্ত করা হচ্ছে। টায়ার-২ থেকে টায়ার-৩ এ
উন্নীত করতে সরকারী চাপ নিয়ে বৃটেনের বড় বড় শহর ও অঞ্চলের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে ডাউনিং স্ট্রিটের
দেনদরবার চললেও, সরকার পিছু হটছে না। বর্তমানে ল্যাঙ্কাশায়ার এবং লিভারপুল সিটি অঞ্চল টায়ার থ্রি’র
আওতায় বিধিনিষেধ আরোপিত একমাত্র অঞ্চল। এসব বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে, এই এলাকার কোন ব্যক্তি তাদের
পরিবার বা ‘সাপোর্ট বাবল’ (সহায়তাকারী ব্যক্তিদের একটি বলয়) এর বাইরের কারো সাথে ঘরের ভেতরে কিংবা বাইরে
কোথাও দেখা সাক্ষাত করতে পারবে না। পাব, রেস্টুরেন্ট, বার, ক্যাফে ইত্যাদি অবশ্য বন্ধ রাখতে হবে। যাদের পক্ষে
সম্ভব, তাদেরকে বাড়িতে থেকে কাজ করতে হবে।
এ সপ্তাহের মধ্যেই আরো কয়েকটি বড় বড় শহর ও অঞ্চলও টায়ার-থ্রি স্তরে উন্নীত করা হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম
হচ্ছে গ্রেটার ম্যানচেস্টার। আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য মেয়র এন্ডি বার্নহ্যাম সরকারের ওপর অব্যাহত চাপ
এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিরোধিতা সত্বেও গ্রেটার মানচেষ্টারে টায়ার-৩ বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। গ্রেটার
ম্যানচেস্টারের ব্যবসায় ও কর্মজীবিদের সহায়তায় সরকার ৬০ মিলিয়ন পাউন্ড প্রণোদনা দিতে রাজী হয়েছে, যদিও
স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলো এই খাতে ৬৫ মিলিয়ন পাউন্ডের আর্থিক সহায়তা চেয়েছিলো। গ্রেটার ম্যানচেষ্টারের যে
এলাকাগুলোতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে স্তর-তিন এর বিধিনিষেধ কার্যকর হবে, সেগুলো হচ্ছে - বারি, রচডেল,
ওল্ডহ্যাম, ট্যামসাইড, স্টকপোর্ট, ম্যানচেষ্টার, ট্রাফোর্ড, স্যালফোর্ড, উইগ্যান এবং বল্টন
সাউথ ইয়র্কশায়ার অঞ্চলও কঠোরতম বিধিনিষেধ এর আওতায় আসছে। শেফিল্ড সিটি রিজিয়নের মেয়র এই তথ্য
জানিয়ে বলেন, মন্ত্রীদের সাথে ব্যাপক আলোচনার পর তারা তিন স্তরে যেতে সম্মত হয়েছেন। সাউথ
ইয়র্কশায়ারভুক্ত এলাকা - বার্নসলি, ডনকাস্টার, রদারহাম ও শেফিল্ড এ নতুন বিধিনিষেধ কার্যকর হবে।
টিয়ার থ্রি অর্থাৎ তৃতীয় স্তরের সতর্কতা ব্যবস্থার আওতায় গ্রেটার ম্যানচেষ্টার ও সাউথ ইয়র্কশায়ারে স্তর-১
ও স্তর-২ এর বিধিনিষেধের বাইরেও আরো কিছু কঠোরতম নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে।
সাউথ ইয়র্কশায়ার অঞ্চলের কাউন্সিল নেতৃবৃন্দ ৪১ মিলিয়ন পাউন্ডের আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজে সম্মত
হয়েছেন। এর মধ্যে ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড দেয়া হবে ব্যবসায়গুলোর সহায়তার জন্য এবং কন্টাক্ট ট্রেইসিং সহ বিভিন্ন
গণস্বাস্থ্য খাতে লকাল অথরিটিগুলো ১১ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করবে।
নটিংহ্যাম বর্তমানে ইংল্যান্ডের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার রয়েছে, যেখানে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে
সংক্রমণের হার হচ্ছে ৬৩২.৬। তবে নটিংহ্যামশায়ায়েরর বিস্তীর্ন এলাকায় আক্রান্তের হার বেশি না হওয়া সত্বেও
একি ধরনের বিধিনিষেধের আওতায় রয়েছে তারা।
এই অঞ্চলে সংক্রমণের হার নিয়ে বিরামহীন উদ্বেগ থাকা সত্বেও বৃটেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলো, যেমন
নর্থআম্বারলান্ড, নিউক্যাসল, সাউথ এন্ড নর্থ টাইনিসাইড, গেইটশ্যাড, সান্ডারল্যান্ড, এবং কাউন্টি ডারহ্যাম
এখন পর্যন্ত স্তর-৩ এর বিধিনিষেধ এড়াতে সক্ষম হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy