ডেস্ক: জ্বর, কাশি আর শ্বাসকষ্ট ছাড়াও করোনা আক্রান্ত রোগীদের ডায়রিয়া, চর্মরোগ, ঘা, ফুসকুড়ি হতে পারে। এ ছাড়া ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট মশার কামড়ের মতো র্যাশ দেখা যেতে পারে, এমনটাই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি কোভিড-১৯-এর নানান উপসর্গ নিয়ে এক নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে কোভিড-১৯ সংক্রমণের প্রাথমিক উপসর্গ সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক ডার্মাটোলজির সভাপতি সন্দীপন ধর জানালেন, কোভিড-১৯-এর উপসর্গ হিসেবে পায়ের আঙুলে ছোট ফুসকুড়ি ও ঘা হতে পারে। এ ছাড়া ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট মশার কামড়ের মতো র্যাশ দেখা যেতে পারে। ইতালি ও চীনের হুবেই-এর হাসপাতালে ভর্তি কোভিড আক্রান্তদের ২০ শতাংশের শরীরে এই র্যাশ দেখা গিয়েছে। চিকিৎসকরা প্রথমে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলে মনে করলেও পরবর্তীকালে জানা যায়, নভেল করোনার কারণেই ত্বকে নানা ধরনের র্যাশ বেরোয়। কোভিডের কারণে ফুট শোর নামে পায়ের বুড়ো আঙুলের নীচে এক বিশেষ ধরনের ঘা হয়। একমাত্র করোনা হলেই এই নির্দিষ্ট সমস্যা দেখা যায়। এবং কলকাতা-সহ গোটা দেশেই কোভিড রোগীদের মধ্যে ত্বকের নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী জানান, যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ হলে ডায়রিয়ার ঝুঁকি খুব বেশি। কেননা শ্বাসনালীতে যে রিসেপ্টরগুলিতে কোভিড-১৯ আক্রমণ করে, সেই রকমই গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল ট্র্যাক, অর্থাৎ অন্ত্রেও সেই রিসেপ্টর আছে। নাক-মুখ দিয়ে প্রবেশ করে নভেল করোনা ভাইরাস শ্বাসনালীতে না গিয়ে পেটে পৌঁছে গিয়ে অন্ত্রে সংক্রমণ হলে পেটের গোলমাল, ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা ও বমি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। একই সঙ্গে তিনি জানান, শ্বাসনালী ও ফুসফুসের সংক্রমণের তুলনায় ডায়রিয়া হলে রোগের সঙ্গে মোকাবিলা কিছুটা সুবিধাজনক। স্যালাইন ও জিঙ্ক দিয়ে ডায়রিয়ার মোকাবিলা করা হয়।
এক নজরে জেনে নেয়া যাক করোনা আক্রান্তদের কী কী প্রাথমিক উপসর্গ দেখা যায় :
• জিভের স্বাদ চলে গিয়ে খাবারে অরুচি হয়।
• গন্ধের বোধ নষ্ট হয়ে যায়।
• পেটে ব্যথা ও ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
• পায়ের আঙুলে ছোট ফুসকুড়ি ও ঘা হতে পারে।
• ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট মশার কামড়ের মতো র্যাশ দেখা যেতে পারে।
• গা ম্যাজম্যাজ করে, ব্যথা হতে পারে।
• পেটে ব্যথা ও বমি হতে পারে।
• জ্বরের সঙ্গে কাঁপুনি থাকতে পারে।
• গলা ব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও জ্বর হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে তিন শতাংশ রোগীর গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হয়। এদের অক্সিজেন ও প্রয়োজনে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দরকার হয়। এছাড়া কোভিড-১৯ সংক্রমণ হলে পেটের গোলমাল, ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা ও বমি হওয়ার ঝুঁকি থাকে বলেও জানালেন বিশেষজ্ঞরা ।
এমনও হতে পারে রোগী কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত অথচ কোনও রকম উপসর্গ নেই। আচমকা ৬-৭ দিন পর প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হল। এই অবস্থাটাই সব থেকে সঙ্কটজনক। এই অবস্থায় রোগীকে উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসার পাশাপাশি সব রকম সাপোর্ট দিতে হয়।
ভারতীয় এই দুই চিকিৎসকই একটা ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করতে চান যে, কোভিড-১৯-এর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। তাই নিজেদেরই সাবধান হতে হবে। যথাযথ মাস্ক ব্যবহার করে ও হ্যান্ড হাইজিন মেনে এই সংক্রমণ অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা যায়। মাস্কের ব্যাপারে বিশেষ সচেতন হতে হবে। কোভিড-১৯-এর অন্যান্য যে কোনও একটি উপসর্গ দেখা গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সূত্র-আনন্দবাজার পত্রিকা।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy