প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২০, ২০২৪, ৯:৫১ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারী ৩১, ২০২১, ৩:১৮ এ.এম
ভিসি কলিমউল্লাহর অনিয়মের মহামারীতে আক্রান্ত বেরোবি!
নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনাভাইরাস এর মহামারীতেও থেমে নেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। অধ্যাপক ড:নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ড মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় আইন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি গঠন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম শিক্ষক-কর্মকর্তাদের হয়রানিসহ একের পর এক অনিয়মের জন্ম দিয়ে চলেছেন তিনি ।করোনাকালে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির মাত্রা আরো বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষক শিক্ষার্থী ,কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ।সম্প্রীতি ঢাকায় গিয়ে ভিসির সাথে ফটো সেশন না করায় একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ না করে বিভাগটির অপর শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভিসি কলিমুল্লাহর বিরুদ্ধে । ভিসির সাথে ওই শিক্ষকের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় অডিও ক্লিপ থেকে জানা যায় বেশি কলিমুল্লাহ একাউন্টিং বিভাগের শিক্ষক ওমর ফারুককে ফোন দিয়ে ঢাকায় তার সাথে ফটোসেশন করে নিয়োগপত্র নেয়ার কথা বলেন। ঢাকায় গিয়ে নিয়োগপত্র নেয়ার ব্যাপারে অপরাগতা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন ।ওই শিক্ষক এর পরপরই ওমর ফারুককে বাদ দিয়ে একই বিভাগের শিক্ষক আমিরকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেন ভিসি ঢাকায় গিয়ে ফটো সেশন না করার জন্য ওমর ফারুককে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত করা হলো বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ।এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটিতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে বিভাগের প্লানিং কমিটিতে বিভাগের শিক্ষক মোরশেদ হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম নিরব ও বিভাগীয় প্রধানের পদাধিকারবলে জনি পারভীন থাকার কথা থাকলেও সেখানে ভিসির দুর্নীতির বিরুদ্ধে সড়ক জাহাঙ্গীর আলম নীরব কে বাদ দিয়ে ডিসি নিজেকে রেখে কমিটি গঠন করেছেন। শিক্ষক এর প্রতিবাদে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ড:মোরশেদ হোসেন সেই প্লানিং কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে তিনি বলেন, কমিটিতে অনিয়ম করে বিভাগের বাহিরে অনুষদের ডিনন কে সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে যেটি সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূত। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট স্টাডিস বিভাগের প্ল্যানিং কমিটিতে অবৈধভাবে একাই দুই সদস্যের পদ নিয়েঅন্য সদস্যদের প্ল্যানিং কমিটির অন্য সদস্যদের স্বাক্ষর ছাড়াই নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে ভিসির বিরুদ্ধে। বিভাগটির শিক্ষকদের অভিযোগ ,প্লানিং কমিটি কোনরকম সবাই শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি প্ল্যানিং কমিটির অন্য সদস্যদের অগোচরেই নিয়োগ হয়েছে।শুধু তাই নয় বিভাগের যোগ্য শিক্ষক থাকার পরেও সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে বিভাগ বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে রেখেছেন ভিসি। না থাকায় মাসের-পর-মাস বেশি ক্যাম্পাসে না থাকায় একপ্রকার গাইবি ভাবেই চলছে বিভাগটি, বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর নিতে হয়রানির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।অপরদিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন এর ২৬ ধারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন সুনির্দিষ্ট আইন থাকার পরেও বিজনেস্ স্টাডিজ অনুষদের ডিন হিসেবে প্রেষণে ট্রেজারার পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হাসিবুর রহমান কে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভিসির বিরুদ্ধে। এ নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং সামরিক শাসকদের মত ফরমান জারি বলে অভিযোগ শিক্ষক নেতাদের। এছাড়া মহামারীতে বন্ধ ক্যাম্পাসে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোকজ, সাময়িক বরখাস্ত, প্রমোশন অথবা আপগ্রেডেশন, এন ও সি না দেওয়াসহ ডিসির দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এক ডজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অবৈধভাবে বরখাস্ত করেছেন তিনি।হাইকোর্ট তাদের চাকরিতে বহাল করতে নির্দেশ দিলেও আদালতের রায়কে তোয়াক্কা করছেন না ভিসি। করোনা মহামারীতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।কয়েকটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে যে সকল শিক্ষক বিভাগীয় প্রধান হওয়ার কথাতাদের অনেকেই ভিসির দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য তাদের বিভাগীয় প্রধান পদ দেয়া হচ্ছে না বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। শুধু তাই নয়, ভিসির আমলে নিয়োগ পাওয়া তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী খোরশেদ আলম শিক্ষার্থীদের পতিতা, হকার, ও কুলাঙ্গার বলার পরও বেশি নীরবে তাকে সমর্থন করায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রসায়ন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি করার জন্য ভিসি পরিচালনায় লিখিত পরীক্ষা চালু করেছেন। বাছাইয়ে বোর্ড কে পাশ কাটিয়ে সকল বিভাগের নিয়োগ লিখিত পরীক্ষায় একাই প্রশ্ন করেন, একাই উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন। বাসায় বোর্ডের সদস্যদের নামমাত্র কন্ট্রিবিউশনে ভিসির দেয়া লিখিত পরীক্ষা দেয়ার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী।শোনা যায় এ বিতর্কিত প্রক্রিয়ায় পিসির ঘনিষ্ঠ অনেক জনকেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। উপাচার্যের এ অনিয়মতান্ত্রিক নিয়োগ বন্ধে ইউজিসির হস্তক্ষেপ কামনা করছি। বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন,ভিসি কলিমুল্লাহ১১০০ দিন ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থেকে ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিসার নিয়োগ বাণিজ্য, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম-দুর্নীতি করছেন। তিনি ১/১১ এর প্রেতাত্মাদের অন্যতম একজন হয়েও সেটা নথিপত্র গায়েব করে ভিসি হয়ে তিনি আইন লংঘন করে এসব কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন। অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডঃ মতিউর রহমান বলেন, যেহেতু ডিসির মেয়াদ আর কিছু দিন পরে শেষ হয়ে যাবে। সেই সাথে উনি আগে যে অনিয়মগুলো করেছেন, সে সব কর্মকাণ্ড আরো বেপরোয়া ভাবে শুরু করেছেন। শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড: তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ডিসি মহোদয় ডিসি মহোদয় ক্যাম্পাস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার কারণে তিনি যেসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন,সে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আইন রিতি কোন কিছুই তিনি অনুসরণ করছেন না। সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল, প্রো-ভিসি সরিফা সালোয়া ডিনা ও ভিসি অধ্যাপক ড: নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের সাড়া মেলেনি।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy