নিজস্ব প্রতিবেদক: উপ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে ঢাকা-৫ (ডেমরা-যাত্রাবাড়ী) এলাকা। নির্বাচনি এলকার হাট বাজারে, চায়ের দোকানে সর্বত্র এখন নির্বাচন নিয়ে চলছে ভোটারদের মাঝে আলাপ-আলোচনা। কিন্তু এ আলোচনা চলছে এক তরফা। সবই চলছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাজী মনিরুল ইসলাম মনু কেন্দ্রীক।
অন্যদিকে, বিএনপি প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদের এখনো দেখা মেলেনি ভোটের মাঠে। এটাও ঠিক যে তফসিল অনুযায়ী এখনো প্রচার প্রচারণা শুরম্ন হয়নি। কিন্তু কর্মীরা তো আর বসে নেই। তাদেরকে নিয়েই চলছে বিভিন্ন মতবিনিময় সভা। আর এদিক দিয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনু। যেহেতু তফসিল অনুযায়ী এখনো সরাসরি মাঠ-ঘাটে প্রচারণা করা যাচ্ছে না তাই বিভিন্ন ওয়ার্ড কেন্দ্রীক কর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করে চলেছেন এই প্রার্থী। এ ধারাবাহিকতায় গতকালও ডেমরা ও যাত্রাবাড়ীর দুইটি ওয়ার্ডে নির্বাচনী কর্মী মতবিনিময় সভায় যোগ দেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাজী মনিরম্নল ইসলাম মনির। মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার পর থেকেই তিনি এরকম কর্মীসভা করে চলেছেন। অন্যদিকে, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদের সাড়া শব্দ এখনো পাওয়া যায়নি এখানে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ঢাকা-৫ আসনে নির্বাচন হলেও বিএনপি প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমেদের সকল কার্যক্রম চলছে ঢাকা-৪ আসনে। বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে তিনি যে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছেন সেটিও অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা-৪ আসনের অন্তর্গত শ্যামপুরে। বিষয়টি প্রকাশের পর পর অনেক বিএনপি কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ আবার ফেসবুকে লিখেছেন ‘‘ভোট দিব আমরা আর মিষ্টি খাবে তারা, এ কেমন বিচার?’’। এ বিষয়ে সালাহউদ্দিনের কর্মীরা বলেছেন, এখনো প্রচারণা শুরম্ন হয়নি তফসিল অনুযায়ী। তাই ঢাকা-৫ আসনের বদলে ঢাকা-৪ আসনে মিলাদ হয়েছে। কিন্তু ঢাকা-৫ আসনের ভোটারটা উল্টো প্রশ্ন ছুড়েছেন তাহলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কিভাবে মতবিনিময় সভায় করেছেন। মনোনয়ন পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত সালাহউদ্দিন আহমেদের চেহারাও দেখা যায়নি ডেমরা-যাত্রাবাড়ীতে। কেউ কেউ বলছে বিএনপি প্রার্থী নির্বাচনে ভুল করায় এ খেসারাত দিতে হচ্ছে। সালাহউদ্দিন থাকে শ্যামপুরে। আর ভোট চাইতে আসবেন যাত্রাবাড়ীতে। এটাও কি সম্ভব।
১৭ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর অন্য প্রার্থী ও তার সমর্থকদের নির্বাচনি তৎপরতা দেখা গেলেও ভোটের মাঠে সালাহ উদ্দিন আহমেদের দেখা মেলেনি এখনো। স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঢাকা-৫ আসনে বিএনপি কি এমন কাউকে খুঁজে পায়নি যে ঢাকা-৪ আসন থেকে একজন ভাড়াটে ব্যক্তিকে এনে প্রার্থী করা হলো? সবাই ঢাকা-৫ আসনে তাদের নির্বাচনি তত্পরতা চালালেও সালাহ উদ্দিন আহমেদ এখনও পা রাখেননি অত্র এলাকায়।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৪ আসন থেকে অংশ নেয়া সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা তো দূরের কথা মাঠে নামারও সাহস পাননি। নির্বাচনের দিন সকাল বেলায় মার খেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ভোট পান ২০ হাজারেরও কম। এছাড়া প্রায় এক যুগ সালাহউদ্দিন আহমেদের বিচরণ ঘটেনি অত্র ঢাকা-৫ এলাকায়। ২০০৮ এর নির্বাচনে পরাজয়ের পর অনেকটাই আড়ালে চলে যান এই নেতা। এরপর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। আর একাদশে অংশ নিলেও সালাহউদ্দিন আহমেদ মনোনয়ন পান ঢাকা-৪ (শ্যামপুর-কদমতলী) এলাকায়। অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রায় এক যুগ ঢাকা-৫ (ডেমরা-যাত্রাবাড়ী) এ দেখা মিলেনি সালাহউদ্দিন আহমেদের।
রাজনীতির মাঠে সালাহউদ্দিন আহমেদ ‘দৌড় সালাহউদ্দিন’ নামে পরিচিত। ২০০৩ সালে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানের দাবিতে সালাহউদ্দিনের নির্বাচনী এলাকার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ক্ষোভে ফুঁসে ওঠা মানুষকে বিক্ষোভ বন্ধের হুমকি দিলে তখনকার এমপি সালাহউদ্দিনকে ধাওয়া দেয় জনতা। তিনি দৌড়ে এলাকা ছাড়েন- এমন ছবি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে ‘দৌড় সালাহউদ্দিন’ নাম মানুষের মুখে মুখে ছড়ায়।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy