সুর্যোদয়, ভোলা : ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাচঁড়া ইউনিয়নে জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদেরকে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে জয়নাল আবেদিন সিকদার, রুহুল আমিন সিকদার, ইউসুফ সিকদার, মহসিন সিকদার, বাহার সিকদার, শরীফ সিকদার ও মারুফ সিকদার এর নাম জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চাচঁড়া ইউনিয়নের আনন্দ বাজার এলাকায় মৃত মমতাজ উদ্দিন সিকদারের উত্তরাধিকারীরা বিরোধকৃত এ জমি ভোগ দখল করে আসছিলো। মফিজ মিয়া নামে তাদের এক ব্যক্তি সম্প্রতি জমির মালিকানা দাবি করে। পারিবারিকভাবে বসে তার দাবির সত্যতা যাচাই করা হয় এবং তাতে মফিজ মিয়া তার দাবির স্বপক্ষে কোনো দেখাতে পারেননি। তবুও তিনি এলাকায় ‘ভূমি দস্যু’ নামে পরিচিত ইউনিয়ন আওয়ামী লাীগের সভাপতি শামসুল হক মাস্টারের প্ররোচণায় সে জমিতে অবৈধভাবে ঘর উঠাতে চেষ্টা করলে মমতাজ উদ্দিন সিকদারের উত্তরাধিকারীরা বাধা দেয়, এসময় মফিজ মিয়ার সহায়তাকারী হিসেবে শামসু মাস্টারের ভাই –ভাতিজা ও পোষ্য ক্যাডাররা নিরস্ত্র সিকদার পরিবারের লোকজনের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তাদের গুরুতর আহত করে। হামলাকারীরা আহত ইউসুফ সিকদারের একটি মোটরবাইকও ভাঙচুর করে।
স্থানীয়রা আরও জানান, শামসু মাস্টারের বিরুদ্ধে এলাকায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যের জমি দখলের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কিছুদিন আগে এক বিধবার জমি দখল করে সেখানে দোকান ঘর তৈরি করেন। বিধবা তজুমদ্দিন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিকার চেয়েছেন। সেই বিধবাকে শ্লীনতাহানী ও তার ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে শামসু মাস্টারের লোকেরা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত জয়নাল আবেদিন সিকদার সংবাদিকদের বলেন, আমরা এ জমি আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে ভোগ দখল করে আসছি। আমাদের বৈধ দলিল রয়েছে, আমরা তা দেখিয়েছিও। তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের জমি দখল করতে আসলে আমরা বাধা দিতে গেছি। আমরা ছিলাম নিরস্ত্র, তারা আমাদের উপর সশস্ত্র হামলা চালায়।
চাচঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াদ হোসেন হান্নান বলেন, আমরাও জানি এবং দেখে এসেছি এ জমি সিকদার বাড়ির লোকজন ভোগ দখল করে আসছে। তাদের বৈধ দলিলও রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে মফিজ মিয়া অংশীদারী দাবি করছেন কোন ভিত্তিতে তা জানি না। তাকে দলিল পত্র দেখানোর কথা বলা হলেও তিনি তা দেখাতে পারেন নি।
হান্নান চেয়ারম্যান বলেন, আমি আজ (শুক্রবার) সকালে ঘটনাস্থলে চৌকিদার পাঠিয়ে মফিজ মিয়াকে ঘর তৈরি না করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তিনি আমার অনুরোধ না শুনে শামসু মাস্টারের ক্যাডারদের সহায়তায় ঘর উঠাতে গেলে সিকদার বাড়ির লোকজন বাধা দিতে গেলে শামসু মাস্টারের ক্যাডাররা তাদের উপর হামলা করে।
তিনি আরও বলেন, আমি দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু মফিজ মিয়া শামসু মাস্টারের প্ররোচণায় সমঝোতায় যেতে গড়িমসি করছিলেন। শামসু মাস্টার ইউনিয়নে এভাবে বিভিন্ন জনের সাথে ঝামেলা বাধিয়ে দেন। তজুমদ্দিন থানার উপ-পুলিশ পরিদর্ক আব্দুল খালেক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।