আঃ হামিদ মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মহিষমারা ইউনিয়নের আশ্রা( ধলপুর) আশ্রয়ণ প্রকল্প( গুচ্ছগ্রামে) বসবাসরত এক ভিক্ষুকের জমানো ১লক্ষ ১৫ হাজার টাকা জমি দেওয়ার নামে আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন ৭৫ বছরের দুদু ভিক্ষুক নামের এক বৃদ্ধা।
জানা যায়, তার নিজস্ব কোন ভূমি না থাকায় (আশ্রা)ধলপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প( গুচ্ছ গ্রামে)স্বামী সন্তান নিয়ে আশ্রয় নেন দুদু মিয়া ও তার পরিবার। বয়সের ভাড়ে কর্মক্ষমতা হারানো দুদু মিয়া ভিক্ষা বৃত্তি করেন। তার স্ত্রী রোকিয়া বেগম (৬৫) পাহাড়ী এলাকায় আনারস ও হলুদের ক্ষেতে শ্রমিকের কাজ করেন। আর ছেলে নুরুন্নবী কাজ করে ইটভাটায়। এই আয়েই চলে তাদের সংসার। তাদের সংসারের ব্যয় বহনের পর উদ্বৃত্ত টাকা কিছু কিছু করে স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংকে জমিয়ে রাখেন।
গত চার বছর আগে তাদের জমানো ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা স্থানীয় ব্যবসায়ি আব্দুল আজিজের নিকট গচ্ছিত রাখেন। মৌখিকভাবে শর্ত ছিল ওই টাকা ব্যবসায় ব্যবহার করে লভ্যাংশ ও মূল টাকা দিয়ে জমি কিনে দেবেন। অথবা তিনি নিজের জমি ভিক্ষুক দুদু মিয়াকে লিখে দেবেন।
হঠাৎ তাদের আশায় গুরেবালি হয়েছে। দুই বছর আগে টাকার একটি ডকুমেন্ট করার কথা বলার পর থেকেই টালবাহানা শুরু করেন আব্দুল আজিজ। তারপর থেকেই অদ্যাবধি পর্যন্ত টাকার জন্য বারবার গিয়ে ফিরে আসছেন দুদু মিয়া ও তার স্ত্রী রোকিয়া বেগম। বর্তমানে আব্দুল আজিজ জমি কেনে দেবেনতো দূরের কথা টাকা চাইতে গেলেই গালিগালাজ করেন। মারতে আসেন।
বছরের পর বছর এলাকার মানুষের ধারে ধারে ঘুরেও কোন লাভ হয়নি। শেষ পর্ষন্ত কোন উপায়ান্তর না দেখে বিচারপ্রার্থী হন স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানের।
বৃদ্ধা রোকিয়া বেগম বলেন, আমার কষ্টের টেহা। এই টেহা দিয়া জমি কিনা নিজের একটা বাড়ি করবার চাইছিলাম। অহন মুনে অয় ওই স্বপ্ন আর পুরন অবোনা। আজিজ আমার ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা নিছে। অহন জমিও দেয়না টাকাও দেয়না। মারবার আহে। বকে।
এদিকে আব্দুল আজীজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল মান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমি এবং চেয়ারম্যান মহোদয় বারবার চেষ্টা করেও এই বৃদ্ধার টাকা উদ্ধার করতে পারিনি। ১০ বছরের কষ্টের গচ্ছিত টাকা হারিয়ে পাগল প্রায়। তিনি বলেন টাকার জন্য বারবার গেছি দেয় না। টাকা চাইতে গেলে মারতে আহে। তার কষ্টের গচ্ছিত টাকা ফেরত পেতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন জানান।
এ ব্যাপারে মহিষমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল মোতালেব বলেন, আব্দুল আজীজ ভিক্ষুকের টাকা নিয়েছে। তাকে বারবার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ফেরত দিচ্ছে না। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক পদক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..