ইসমাইল হোসেন ময়মনসিংহ থেকে
এবার আলোচিত-সমালোচিত হিরো আলমকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে আলোচনায় এলেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ।সম্প্রতিঅ্যাক্টরসইকুইটি একটি অনুষ্ঠানে মামুনুর রশীদ বলছেন আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি।যেখান থেকে হিরো আলমের মতো এক লোকের উত্থান হয়েছে। উত্থান কুরুচি,কুশিক্ষাও অপসংস্কৃতির উত্থান। এ উত্থান কীভাবে রোধ করা যাবে,এটা যেমন রাজনৈ তিক সমস্যা, তেমনি আমাদের সাংস্কৃতিক সমস্যাও।তিনি রবিবার এক জাতীয় দৈনিককে জানান, হিরো আলম সম্পর্কে আগে খুব একটা জানতেন না তবে নাট্যাঙ্গনের কয়েক জন তাঁকে হিরো আলমের কর্মকাণ্ড সম্পর্ক জানিয়েছেন।পর থেকেই হিরো আলমকে নিয়ে বিরক্তে রয়েছে । তিনি বললেন, খোঁজ নিয়ে দেখলাম, হিরো আলম যখন ইলেকশন করছে, তাকে কেউ একজন একটা গাড়ি দিচ্ছে।সেই গাড়ির আবার নয়-দশ বছরের ফিটনেস নেই। এই হিরো আলম নিয়ে আমি অনেক দিন বিরক্ত ছিলাম। বিরক্ত ছিলাম এই কারণেও, আমাদের দেশের মানুষের তো রুচির দুর্ভিক্ষ হয়ে গেছে। একটা বান্দর যদি কোথাও নাচতে থাকে আর তার পাশে যদি অভিনয় করি আমি, আমার এখানে দশটা লোক হবে এখন স্বাভাবিক।কোন সৃজনশীল শিল্প তো এসব দিয়ে বিচার করা যাবে না।’ এ সংকট থেকে উত্তরণের উপায় কী জানতে চাইলে তিনি ওই বলেন, উত্তরণের উপায় খুব কঠিন। কারণ, আমাদের রাজনীতিও তো রুচিহীন হয়েগেছে।রাজনীতি যদি সুস্থ হতো, দুর্নীতিপরায়ণ সমাজ যদি না হতো,তাহলে কিছু একটা হতো। মামুনুর রশীদ আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র তো কোনোভাবে রুচির উন্নয়নে কাজ করছে না। এখন আমার রাজনীতির কাছে, রাষ্ট্রের কাছে, সংস্কৃতির কাছে, কোথাও আবেদন-নিবেদন নেই। আবেদন, হলো যে মানুষগুলো সামাজিক কাজের প্রতি দায়বদ্ধ,তাঁদের প্রতি। আপনারা এগিয়ে আসুন। কথার কথা, কাল মুরগির দাম ছিল ১০০ টাকা, আজ হয়ে গেছে ১৫০ টাকা। তারপরও কিন্তু মানুষ কিনছে।পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সাধারণ মানুষ বাধা দেয়। অস্ট্রেলিয়াতে একবার দেখেছি, একদিন সকালে হঠাৎ কলার দাম বেড়ে গেল। ওদের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব রাষ্ট্র ব্যবস্থা এ নিয়ে তোলপাড়। শেষ মেশ দাম কমাতে বাধ্য হলো।বাইর হতে ইম্পোর্ট করা শুরু করল, তখন ব্যবসায়ীরা ও বিপদে পড়ে গেল। আমাদের এখনে রাষ্ট্র কোন ব্যবস্থা নেয় না, মানুষও এত বেশি দাম সত্ত্বেও সবকিছু মেনে নিচ্ছে! মেনে নিচ্ছে বলেই ব্যবসায়ীরা যা খুশি করছেন। বাংলাদেশ একটা ব্যবসায়ীদের রাষ্ট্র হয়ে গেছে,আ স্টেট অব বিজনেসম্যান ।’
ক্ষোভ থেকে মামুনুর জানালেন, আজ থেকে ৫০-৬০ বছর আগে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বলেছিলেন, দেশে একটা রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে। আমরা সেই রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। আমাদের মিডিয়া মুক্ত হওয়ার ফলে আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। হিরো আলমের মতো একটা লোকের উত্থান হয়েছে।যে উত্থান কুরুচি, কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতি দ্বারা উত্থান। অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। কী সুন্দর রাস্তাঘাট হচ্ছে,মেট্রোরেল হচ্ছে, খুব মুগ্ধ। কিন্তু দেশের মানুষের সংস্কৃতির-রুচি যদি ঠিক না করা যায়, এসব কে ব্যবহার করবে।তাই সংস্কৃতি ও রুচির উন্নয়নে কাজ করতে হবে।’