প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৮, ২০২৪, ৩:৩৪ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১, ১:৪০ পি.এম
মাদকের বৃত্তেই ছিল পলাশের বসবাস
রেখা মনি,নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুর হারাগাছ থানার নিহত এএসআই পেয়ারুল ইসলামের খুনি পলাশ ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছে মাদকের সাথে। মাদকাসক্ত ছিলেন তার বাবা জাহিদুল , ফুফা মোফাজ্জল হোসেন। মাদক ও চুরির মামলায় দুইবার জেল খেটেছে তার ফুফাতো ভাই ও একই এলাকার মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে সুমন।
শুধু তাই নয় ,চাচা নুর হোসেন , চাচার শ্বশুর আজিজুল ও একই এলাকায় বসবাসরত নুর হোসেনের স্ত্রীর মামাতো ভাই মফিজুল অন্য পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে মাদক দ্রব্য পাচার করে আসছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছাকাছি থেকে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালালেও প্রশাসনের কাছে অধরা এই দলটি।
জানা যায়, ১৯৯৭ সালের দিকে মফিজুলকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা থেকে রংপুরে তার ফুফা মরহুম লুৎফর রহমান নিয়ে আসেন এবং তারই ভিটায় বাড়ি করে দেন। রংপুরের তৎকালীন পৌরবাজারে ফজলু স্টোরে কাজ করতেন মফিজুল মিয়া। অল্পদিনেই অতিরিক্ত লোভে চুরি করতে থাকে। এমনকি চুরির কারণে পৌরবাজারে বেঁধে রাখেন ব্যাবসায়ী ফজলু। পরে ১০ হাজার টাকা মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন তার ফুফা লুৎফর রহমান। এরপর থেকেই সে কিসের ব্যবসা করে কেউ জানেনা।
মাত্র ১০ থেকে ১২ বছর আগে হঠাৎ করে আলাউদ্দিনের চেরাগ পায়, মফিজুল, আজিজুল আর তার জামাই নুর হোসেন। পেশার ব্যাপারে এলাকাবাসীর কিছু জানা না থাকলেও তাদের অঢেল ধনসম্পদ যেন বিশ্মিত করছে সবাইকে। হঠাৎ করে তাদের এমন অবস্থা যেন আঙুল ফুলে কলাগাছ হবার মতই।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাদক পাচারের সাথে জড়িত মফিজুল মাদক ব্যবসার কল্যাণেই সহায়সম্বলহীন নিঃস্ব অবস্থা থেকে হঠাৎ করেই ধনী হয়েছেন। আর তার ফুফা আজিজুলের বাড়ি পাটগ্রামের পানবাড়ি হওয়ায় বর্ডার দিয়ে মাদকদ্রব্য পাচার করে মফিজুল ও নুর হোসেনের মাধ্যমে বিরাট এক মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তারা।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন জানান, একসময় এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া হয় মফিজুল সাপের মনি পেয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পরই সে চুরি করতে গিয়ে দোকান মালিক তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। সে স্থানীয় না হওয়ায় তার ব্যাপারে আমরা নাক গলাই না। কিন্তু যাদের সামান্য সামর্থ্য নেই তাদের হঠাৎ করে বড়লোক হওয়া সন্দেহের জন্ম দেয়। ভারত থেকে শুধু পণ্যদ্রব্য নয়, এর আড়ালে মাদক পাচারের মাধ্যমে খুব অল্পসময়ে ধনী হয়ে উঠছে মফিজুল, আজিজুল ও তার জামাতা নুর হোসেন। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের জরুরি ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।
তেলীপাড়া এলাকার শাহজাহান হোসেন ঝন্নু বলেন, এলাকায় প্রত্যেকে কে কি করে আমরা বলতে পারি। কিন্তু মফিজুল কি করে আমরা জানিনা। কিছুদিন আগে শুনেছি সে ভারত থেকে মালামাল নিয়ে আসে কিন্তু কোনদিন দেখিনি। সে যদি ভারত থেকে পন্যদব্য আনতো তাহলে তো সেটা দেখা যেতো। কিন্তু তার দোকান পাট বা ব্যবসা কেন্দ্র কিছুই আমরা জানিনা।
একই এলাকার ফিরোজ হোসেন বলেন, অনেকেই ভারতীয় পন্য এনে ব্যবসা করে, কিন্তু এদের মতো হঠাৎ ফুলে ওঠে না। মফিজুলদের পৈতৃক কোন সম্পত্তি ছিল না। মফিজুলের ফুপা আজিজুল মিয়ার বাড়ি পাটগ্রামের পানবাড়ি এলাকায়। আগে সে সাড়াদিন জুয়া খেলতো।
২০০৪ সালের দিকে চাঁদা তুলে বড় মেয়ে পারভিনের বিয়ে দেয় পলাশের চাচা নুর হোসেনের সাথে। সেই আজিজুল, তার জামাতা নুর হোসেন আর মফিজুল আজ লাখপতি। আজিজুল মানুষকে দেখায় সে ধান ব্যবসায়ী কিন্তু ব্যবসার আড়ালে ভাতিজা ও জামাইয়ের সাহায্যে মাদক ব্যাবসা চালাচ্ছে।
উল্লেখ্য, রংপুরে মাদকসেবীর ছুরিকাঘাতে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পিয়ারুল ইসলামের নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে পলাশ নামের এক মাদকসেবীকে। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছের সাহেবগঞ্জ এলাকায় শুক্রবার রাতে পিয়ারুল ইসলামের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy