-জাহাঙ্গীর হোসাইন বাবলু
সম্প্রতি সূফিতত্ব, তথ্য, তীর্থ ও ইসলাম বিষয়ক ১টি গবেষনা কর্মে গিয়েছিলাম কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর একাত্তরের মহান শহীদ ও অলীয়ে কামেল সলেমান শাহ চিশতি (রাঃ)র দরবার শরীফে। তাঁর সম্পর্কে, তাঁর কর্ম সম্পর্কে, তার শান্তি প্রচার গবেষনা করতে গিয়ে যা বুজেছি তা ইসলামের জন্য, সুফিবাদের জন্য ও বাংলাদেশের জন্য অত্যান্ত গর্বিত বিষয়। এ বিষয়ে অন্য কোন সময় কোন গবেষনা প্রতিবেদনে প্রকাশ করবো।
ওখানের সে অভিজ্ঞতার বাইরে একটি মানবিক বিষয়ে অন্যরকম অভিজ্ঞতা মনে দাগ কেটেছে। তবে একটি বিষয় আমার মনে খুব দাঁগ কেটেছে তা হলো দরবারের আশপাশে বেঁচে থাকা একটি অপ্রত্যাশিত জীবন। এ সত্য গল্পটা ঠিক এমন যে ২০০৭- ২০০৮ সালের যে কোন এক সময় আল্লাহর অলী হযরত সলেমান শাহ্ চিশ্তির নামে বাৎসরিক ওরশ মাহফিলে একজন ভক্ত আশা পুরন হওয়ায় মান্নত হিসেবে ১টি খুব বড় সাইজের খাশি নিয়ে পাবনা থেকে গোলাপনগর আসছিলেন এমন সময় একজন ৩২/৩৩ বয়সি যুবককে দেখতে পেলো- লোকটি অস্বাভাবিক চলা ফেরা তবে আপত্তিকর কোনো আচরনের নয়। কোমল মনের প্রকট বিশ্বাস বোধে তাদের কাছে মনে হলো পাগল লোকটি কোন সাধারন পাগল হয়ত নয়, আল্লাহর পাগল নিশ্চই। তারপর পাগল রুপি লোকটিকে সাথে নিয়ে চলে এলেন পীরের দরবারে। লোকটিও কোন প্রকার আপত্তি করেনি। এখানে বাৎসরিক ওরশ মাহফিলে দেশ ও বিদেশের শিষ্য ভক্ত দর্শনার্থীদের পদভারে ওরশের সময় ২/৩টি গ্রাম লোকে লোকারন্য হয়ে স্থানীয়দের বক্তব্য মতে মাহফিলে ১৫/২০ লাখ মানুষের সমাগম হয়। মুল বিষয় হলো জনসমুদ্র মাঝে পাগলরুপি লোকটি হারিয়ে যায়। যারা ওকে খুব ইজ্জতের সাথে এনেছিলো কিন্তু কোনো ভাবেই আর তাঁকে খুজে পেলো না। শেষে সে লোক গুলো পাগলের মতো কেঁদে কেটে চলে গেলো। আর পাগলরুপি লোকটি রয়ে গেলো সলেমান শাহর দরবারে। সেই হতে এখানেই তার জীবন ধারা এগিয়ে চলছে। পীর আউলিয়ার পাক দরবারে দরবার এ সকল মানুষের খাবারের সংকট হয় না চলে যায় আর থাকা, সে তো যেখানে যেমন। এখানে একজন সুস্থ স্বাভাবিক সাধারন চল্লিশোর্ধ সুন্দরী স্বামীহারা বিধবা নারিরও গাজীপুর থেকে এ দরবারে এ দরবারে এসে জিবিকা চলছিলো। আশপাশের লোকজন ভেবে চিন্তে বলে কয়ে ও দুজনার জীবন বিবাহের মাধ্যমে এক করে দিলো।
তাহলে সকলের মনে প্রশ্ন পাগলরুপি লোকটি কে, কি তাঁর পরিচয়? তার সেবায় থাকা স্ত্রীর নামইবা কি? উত্তর
পুরুষটির নাম-রিয়াজউদ্দীন শেখ
পিতা-মোহাম্মদ মাজেদ শেখ
মাতা- আমেনা খাতুন
গ্রাম- চান্দের চর
উপজেলা- লোহাগড়া
জেলা- নড়াইল।
এখানে বিবাহিত স্ত্রী- শরীফা খাতুন প্রকাশ মনোয়ারা খাতুন।
তাদের বসবাসের জন্য দরবার নিকটস্থ পদ্মা রক্ষা বাঁধ এলাকায় একটি ঘর, পাকঘরসহ বারান্দা সম্বলিত বাসস্থান ব্যাবস্থা করে দেয় রিয়াজের কতিপয় ভক্তবৃন্দ।
প্রশ্ন থেকে যায় আসলে সে কে, কি করে সে এরুপ হলো?
তার অতিরিক্ত মানসিক চাঁপে মস্তিস্ক বিকারগ্রস্থ? পারিবারিক ভাবে মানসিক নির্যাতনে এমন? কোন মানবী প্রেমে ব্যার্থ হয়ে? বিদেশে যাওয়া ব্যর্থ, দালালকে দেওয়া অর্থ মার খেয়ে? সরকারি চাকুরির জন্য দেওয়া ঘুষের টাকা দিয়ে চাকুরী কিংবা অর্থ ফেরৎ না পেয়ে এমন? নাকি কোনো সন্ত্রাসী হয়ে নিজেকে আত্ম গোপন করতে দীর্ঘ বছর এমন অভিনয় করে চলছে? নাকি কেউ তাঁকে এমন করেছে? মানুষ পড়ে বিষয়টি বিরক্ত হতে পারে। আহ এমন একটি বিষয়ের সাথে সন্ত্রাসী শব্দটির ব্যাবহার কেনো? নিশ্চই কারন আছে আর তা হলো তার হাটুর উপর থেকে বুকের নিচ পর্যন্ত আগুনে পুড়ে কিংবা বোমা বিস্ফোরনে ঝলসে যাওয়ার মতো তিব্র পোড়া দাঁগ। তাহলে এ বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে সর্বস্তরের মানুষ বিষয়টিকে সমাধান আবশ্যক। কেউ তাকে বলছে আল্লাহর পাগল, কেউ নোংড়া বিশ্লেশন। কিন্তু বিশেষ করে দুঃখিনী মা, বাবা, ভাই, বোন পরিজনকে তাঁদের হারানো মানিক পুনঃরুদ্ধার করা প্রয়োজন, শুন্য মায়ের বুকটা পুর্ন করা আবশ্যক সবার আগে এ মানবিক ভাবনাটা মাথায় নিয়ে সবার আসা উচিৎ।
Surjodoy.com
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy