রেখা মনি, নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাহমুদুল হাসান জীবন। বয়স মাত্র ১০ বছর। জীবনের আলো প্রস্ফুটিত হওয়ার পূর্বেই এক দুর্ঘটনায় পতিত হয় সে। সাইকেল থেকে পড়ে ভেঙ্গে যায় একটি হাত। জীবনের দরিদ্র পিতা স্থানীয় লোকজনের পরামর্শে হাতুড়ে ডাক্তার আর কবিরাজের চিকিৎসা করান। কিন্তু ছোট্ট ফুলের মতো শিশুটা আর সুস্থ হয় না। যে জীবন সারাদিন হেসে খেলে বেড়াতো, সে শুধু দিন দিন ব্যথায় কাতরাতে থাকে।
জীবনের বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রী। দিন আনে, দিন খায়। জীবনের চিকিৎসা করাতে পারে না। এই দুঃসময়ে এগিয়ে আসে তার দাদু। স্থানীয় এক স্কুলের নৈশপ্রহরী তিনি। তিনি সমাজের বিভিন্ন লোকের কাছে হাত পেতে কোন রকমে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করান।
কিন্তু ততদিনে দেরি হয়ে গেছে। জীবনের হাতে পচন ধরে গেছে। সেই পচন ছড়িয়ে যাচ্ছে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা করানোর পর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু খরচ জোগাতে না পেরে একসময় চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে ক্লিনিক থেকে রিলিজ নিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়। জীবনের জীবন হয়ে যায় অনিশ্চিত, ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে এগোতে থাকে সে।
জীবনের এই করুন কাহিনী শুনে তাকে ডেকে আনেন বাংলাদেশ পুলিশের আইকন, রংপুর জেলা পুলিশের অভিভাবক, মানবিক পুলিশ সুপার বিপ্লব ,কুমার,সরকার, বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয়। জীবন ও তার দাদুর কাছে বিস্তারিত শুনে পুলিশ সুপার মহোদয় দ্রুত জীবনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।
তিনি এসময় জীবনের চিকিৎসার সকল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এসপি বিপ্লব,কুমার,সরকার ছোট্ট জীবনের মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে সাহস দেন। আপ্যায়ন করান। যে জীবন হাত ভাঙ্গার ব্যথায় হাসতে ভুলে গিয়েছিলো, এসপি মহোদয়ের স্নেহ ও ভালোবাসায় সে আবারও উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠে, নতুন করে বাচার স্বপ্ন দেখে। পুলিশ সুপার মহোদয়ের এই আন্তরিকতা দেখে জীবনের দাদু আনন্দে কেদে ফেলেন। এসময় জীবন ও তার দাদুর আনন্দ দেখে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সকলেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।