প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ৩০, ২০২৪, ১২:৪০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ৪, ২০২০, ৭:০০ পি.এম
মায়ের কোল ছেড়ে দেখি এ জীবন শূন্য
রাব্বি হাসানঃ
রতিটি সন্তানের জন্য "মা" হচ্ছে প্রথম স্কুল, প্রথম শিক্ষক, নিরাপদ আশ্রয়। মায়ের ভ্রুণ থেকে শুরু করে, জন্ম গ্রহণ, শৈশব, কৈশোর, যৌবন, বৃদ্ধকালিন জীবনের প্রতিটি স্তরের মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। শৈশবে যেমন মায়ের চোখের আড়াল হয়ে যেতে ইচ্ছে করতো কিন্তু পারা যেত না তেমনি বয়স বাড়ার সাথে সাথে সময়, কর্মব্যস্থতার উপেক্ষা করে মায়ের চোখে চোখে থাকার ইচ্ছে করলে ও এখন পারা যায় না, শৈশবের আড়াল যেন এখন এসে গেছে।
শৈশবে মার কাছে নানা কিছু বায়না করতাম। প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে আমাদের পাশের গ্রামে বৈশাখী মেলা হতো, দেখতাম শৈশবের বন্ধুরা যেত, আশাপাশের অনেকে যেত কিন্তু আমি যেতে পারতাম না, মার কাছে বায়না ধরতাম মেলায় যাবো,কিন্তু মা বলতো পহেলা বৈশাখের দিন অনেক তুফান হয় যদি আমি হারিয়ে যাই তাই যেতে দিবে না। বাবা থাকতো প্রবাসে, বাবা কাছে থাকলে হয়তো নিয়ে যেত, মা তখন বাঁধা হতে পারতো না, দেখতাম শৈশবের বন্ধুরা তার বাবার সাথে, ভাইয়ের সাথে যেত আমি পারতাম না আমার বড় ভাইও ছিল না। ভীষণ মন খারাপ হতো, কান্না করতাম সারাদিন।
একবার, নানু আসলেন আমাদের বাড়ি, এসে বললেন আমাকে নানুর সঙ্গে করে রাঙামাটি নিয়ে যাবেন উনার বড় ভাইয়ের বাসায়। আমি তো মহাখুশি, কারন শুনেছি রাঙামাটি অনেক বড়বড় পাহাড় ঝর্ণা আছে। আমাকে মা নতুন জামা কাপড় পড়িয়ে দিল, খানিকক্ষণ পর বাবা ফোন দিলের প্রবাস থেকে আমার যাওয়া নিয়ে ঝগড়া হলো মার সাথে, আমি নাকি হারিয়ে যাবো, শেষ পর্যন্ত আর আমার যাওয়া হলো না, সেদিনও বড্ড কেঁদেছিলাম, আমার মা এমন কেন? অনেক অভিমান হচ্ছিল মার সাথে। সারাদিন কথা বলিনি মার সাথে।
কিন্তু আজ আমি একা একা অনেক গুলো শহর ঘুরেছি, থাকছি একা, খাচ্ছি একা, ঘুমচ্ছি একা। যে ছেলেটাকে মা কখনো চোখের আড়াল হতে দিতো না সেই আমি আজ ছয় বছর ধরে একা একটি শহরে থাকি। মাস দুমাস পর একবার মার কাছে যাই। আগের মতো মা কি এখনও ভয় পায় আমাকে নিয়ে?
মাঝে মধ্যেই মনে হয় এই বুঝি বড় হলে গেলাম, আবার ভাবি মার কাছে সন্তান কখনো বড় হয় না। আবার ভাবি ছোট-ই যদি থাকি তাহলে কেন মা আগের মতো এত কড়াকড়ি হয় না, কেন একা বাড়ির বাহিরে যেতে মানা করে না? কেন একা একটি শহরে থাকতে দিচ্ছে? এখন মনে হয় আমার শৈশব টাই তো ভালো ছিল।
শৈশবের আবদার গুলো ছোট ছিল, হয়তো সব আবদার পূরণ হয়নি, হয়তো পারিনি একা একা মেলায় যেতে, পারিনি রাত বিরেতে বাড়ির বাহিরে থাকতে, কিন্তু এখন সব কিছু নিজের ইচ্ছে মতো পারলেও আগের সেই আনন্দ টাই শুধু নেই, নেই শৈশবের সেই অনুভূতি। এখন গুনগুন করে বলি
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy