একই বাসায় পাশে রুমের চার বছরের শিশুকে হত্যা করে মরদেহ ঘরে রেখে সঙ্গ দিয়েছেন নিহত শিশুর বাবাকে, খুনি নিজেই হারানো বিজ্ঞপ্তি পোস্টার লাগিয়ে দেয়ালে লাগিয়েছেন এবং নিহত শিশুর বাবাকে সাথে নিয়েই করেছেন মাইকেন। রুপনগর দুয়ারীপাড়া বালুর মাঠে এলাকায় ভাড়া বাসায় মুক্তি পণের টাকার জন্য পাশের রুমের যুবকের হাতে খুন হলেন কোমলমতি চার বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ, পিতা আব্দুল জলিল,মা মাহমুদা বেগম আব্দুল জলিল দীর্ঘ দিন যাবত রুপনগর থানাধীন দুয়ারীপাড়া বালুর মাঠ বস্তি এলাকা বসবাস করেন।
আব্দুল জলিল, স্ত্রী দুই সন্তান এবং বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বালুর মাঠ নুরজাহান ম্যাডামের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকেন। আব্দুল জলিল একজন রাজমিস্ত্রি দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন এবং স্ত্রী বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজের ভুয়া হিসেবে কাজ করেন। প্রতিদিনের মতো আব্দুল জলিলের স্ত্রী মাহমুদা বেগম সকাল সাতটায় অন্যের বাড়িতে কাজ করতে যেতে হবে তাই গত ২৮/১০/২০২৩ তারিখেও সকাল ৭ টায় কাজের তাগিতে স্বামীর আগে বাসা থেকে বের হন। অন্যদিকে স্বামী আব্দুল জলিল তিনিও সকাল ৮ টা বাজে বাসা থেকে কাজের জন্য বের হন। আব্দুল জলিলের ২ সন্তানের বড় ছেলেকে মাদ্রাসায় রাখেন এবং চার বছরের ছোট ছেলে মাহমুদুল্লাহ কে নিয়ে বৃদ্ধ মা বাসায় দেখাশোনা করেন। আব্দুল জলিল বলেন কাজ করা অবস্থায় ২৮ তারিখ সকাল এগারোটার সময় আমার ভাগ্নি শরিফা খাতুন ( ২৫) মোবাইলে ফোন করে আমাকে জানায় আমার ছেলে মাহমুদুল্লাহ ( ৪ ) কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি সংবাদ পেয়ে বাড়িতে এসে আমার মায়ের নিকট শুনতে পাই আমার ছেলে বাড়ির সামনে গেটের কাছে রেখে সকাল ১০ টার দিকে বাসার ভিতরে বাথরুমে যায়।
পরবর্তীতে আমার বৃদ্ধ মা বাসার ভিতরের বাথরুম সেরে মেইন গেটে এসে দেখে আমার ছেলে আব্দুল্লাহ নেই।
আশেপাশে এবং তার নিজেদের আত্মীয়-স্বজনের বাসা সহ সকল স্থানে খোঁজাখুজি করে আব্দুল জলিল ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে স্থানীয় রূপনগর থানায় গিয়ে গত ২৮ ২০২৩ তারিখে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে পরবর্তীতে ৩১-১০ ২০২৩ ইং তারিখে হঠাৎ অজ্ঞাতনামা আব্দুল জলিলের মোবাইলে একটি ফোন আসে।
ফোন করে বলে তোমার সন্তান আমাদের কাছে আছে, তোমার সন্তানকে পেতে হলে ৫০০০০ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। আব্দুল জলিল তখন বলেন আমার সন্তানকে ফেরত দিলে আমি টাকা দিব। আমি পুনরায় মোবাইল ফোনে তাদেরকে বলি আমার সন্তানের সাথে কথা বলান তাহলে আমি টাকা দিব। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ভয়েস এপস এর মাধ্যমে বাচ্চার কন্ঠ সোনালে বাবা আব্দুল জলিল সন্তানের ভয়েস ভেবেই নিরুপায় সন্তানকে ফিরে পাওয়ার উদ্দেশ্য তাদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে প্রথমবার ১৫০০০ টাকা পরবর্তীতে একই নম্বরে পুনরায় আবার ৫০০০ টাকা,সব মিলে বিশ হাজার টাকা পাঠায় দেন অজ্ঞাতনামার ফোনে। টাকা পাওয়ার পরে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি, আব্দুল জলিলকে ফোন করে বলে বেশি চালাকি করবি না, আমি তোকে যে সময় বলবো সেই সময় তুই একাই মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বরে থাকবি তোর ছেলেকে দিয়ে দিব। পরবর্তীতে আব্দুল জলিল, ছেলেকে ফিরে পাওয়ার উদ্দেশ্যে তাদের ফোনের অপেক্ষায় থাকলেও আর ফোন আসেনি আব্দুল জলিলের ফোনে। তখনও জানেনা পিতা তার সন্তানকে আর কোন দিন ফিরে পাবে না।
চিরতরের জন্য সন্তানকে মেরে ফেলছে সেই খুনি আমিনুল ইসলাম আমিন যিনি একই বাসায় পাশে রুমে থাকতেন,এবং মাহমুদুল্লাহ লাশ ঘরে রেখে খেয়েছেন ভাত, ঘুমিয়ে ছিলেন নিশ্চিন্তায়। অথচ সন্তানের জন্য পথ চেয়ে বসে থাকতেন মা বাবা কখন আসবে ৪ বছরের সন্তান মাহমুদুল্লাহ। অবশেষে নভেম্বরের ৩ তারিখে রূপনগর থানা একটি মামলা হয়, মামলা হলে রূপনগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে মামলাটি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় রুপনগর থানার এস আই মহসিনকে, এসআই মহসিন তদন্ত প্রাপ্ত হয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে অতি গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করেন এবং এই মামলার সাথে জড়িত মোঃ আমিরুল ইসলাম আমিনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন,
শুধু তাই নয় গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে এসআই মহসিন এবং রূপনগর থানার সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে সে স্বীকার করে যে এই মামলার যে ভিকটিম মাহমুদুল্লাহকে সে ঘটনার দিন ২৮ তারিখে আসামী তার নিজের ঘরে মুখে গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ হত্যা করে টলি ব্যাগে রেখে দেন এবং পরের দিন ২৯ তারিখ সকাল ৯ টার দিকে
ক্ষুনি আমিনুল ইসলাম আমিন, মাহমুদুল্লাহ লাশের টলি ব্যাকটি নিয়ে বিরুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং বাস থেকে নেমে বিরুলিয়া বোর্ড ক্লাবের পাশে একটি রাস্তার ডালে জঙ্গলের মধ্যে মাহমুদুল্লাহ লাসটি ফেলে দিয়ে আসেন। পরবর্তীতে আসামি গ্রেফতার হলে পুলিশের সহযোগিতায় মাহমুদুল্লাহ ট্রলি ব্যাগ থাকা জঙ্গলে উদ্ধারকৃত লাশটি এতদিনে পচে গলে মাথার খুলি ছাড়া কিছুই আর রইল না। এমন একটি ন্যাক্কারজনক কাজের জন্য এলাকাবাসী এই আসামী খুনি আমিনুল ইসলাম আমিন এর সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দাবি করছেন।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy