মির্জাপুর প্রশাসন ঘোষিত "জিরো টলারেন্স" উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে পাহাড় কাঁটার ধুম
লুৎফর অরেঞ্জঃ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উত্তর পূর্বাংশের প্রায় পুরো এলাকা জুড়ে রয়েছে পাহাড় এবং বনভূমি। দিনের বেলায় প্রশাসনের অভিযানের মুখে টিকতে না পেরে রাতের বেলায় চলছে লাল মাটির পাহাড় কাঁটার ধুম । এরই মধ্যে মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসন অবৈধ মাটি কাঁটার বিরুদ্ধে "জিরো টলারেন্স" ঘোষণা করেছেন। এ পর্যন্ত ৩১টি মামলায় বিশ লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও থামানো যাচ্ছে না অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্য। উপজেলার তরফপুর এবং আজগানা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কমপক্ষে ৭টি পয়েন্টে লাল মাটির পাহাড় কাঁটার চিত্র দেখা গেছে। চতুর মাটি ব্যবসায়ীরা দিনের বেলায় ভেকু জঙ্গলের ভিতর লুকিয়ে রেখে কোথাও কোথাও রাত দশটার পর আবার কোথাও কোথাও সন্ধ্যার পরপরই নেমে পরেন পাহাড় কাঁটার মহোৎসবে। ফজরের আগ পর্যন্ত চলে এই কর্মযজ্ঞ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ড্রাম ট্রাক এবং ভেকুর শব্দে রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারেন না। সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হয় শিশু এবং রোগীদের। ড্রাম ট্রাকের চাকায় এলাকার রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ীরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে কিছু বলতে সাহস পান না। সরেজমিনে জানা গেছে, আজগনা ইউনিয়নের চিতেশ্বরী এলাকার সোনাউদ্দিনের ছেলে মোস্তফার কাছ থেকে পার্শ্ববর্তী সৈয়দপুর এলাকার আমিনুর পাঁচ লক্ষ টাকা মূল্যে লাল মাটির উঁচু টিলা ক্রয় করে সেই মাটি অন্যত্র বিক্রি করছেন। তরফপুর ইউনিয়নের টাকিয়া কদমা এলাকায় মাটি ব্যবসায়ী শহিদুল দেওয়ান স্থানীয় আব্দুল বাসেত এর ছেলে আব্দুল মজিদ এর কাছ থেকে লাল মাটির উচু টিলা সমতল করে দেওয়ার শর্তে দেড় লক্ষ টাকায় চুক্তি করে মাটি বিক্রি করছেন। মুঠো ফোনে তার সাথে যোগাযোগ করলে, তিনি ইয়াবা-গাঁজার ব্যবসা করেন না, মাটির ব্যবসা করেন। অতএব সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের জবাব দিতে তিনি বাধ্য নন বলে জানান। মাটি কাঁটার বিষয়ে তরফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজ রেজা মুঠো ফোনে বলেন, কে বা কারা কোথায় মাটি কাটছে আমার জানা নেই, এ বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এমন আরিফুল ইসলাম বলেন, অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। যখন যেখানে খবর পাচ্ছি সেখানেই অভিযান পরিচালনা করছি।স্থানীয়দের পরামর্শ, "জিরো টলারেন্স" ঘোষণা করে লাভ হবে না। অবৈধ পাহাড় কাঁটা বন্ধ করতে চাইলে, দিনের পাশাপাশি রাতেও আরো বেশি বেশি অভিযান পরিচালনা করতে হবে। অর্থ দণ্ডের সাথে জেল সাজাও দিতে হবে। অন্যথায় এভাবে পাহাড় কাঁটা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে মির্জাপুরের পাহাড়ি অঞ্চল সমতল ভূমিতে পরিণত হবে। প্রকৃতি হারাবে বৈচিত্র; বিপন্ন হবে পরিবেশ।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy