চরম অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি আর নান অনিয়মের কারণে মীরকাদিম পৌরসভা এলাকবাসী চরম ভীতি ও আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। অত্যাচার অবিচার আর দুর্নীতির প্রতিবাদে পৌর এলাকার নাগরিক সমাজ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় এক মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশে যে উন্নয়ন চলছে তার পাশাপাশি মুন্সিগঞ্জসহ মীর কাদিম পৌর এলাকার উন্নয়নে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও পক্ষের শক্তিকে আগামী পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ার জন্য দাবি জানানো হয়।
মানবন্ধনে এলাকাবাসী জানান, একটি মহল মীরকাদিম পৌরসভা এলাকার নাগরিকদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতে অত্যন্ত সুকৌশলে সরকার বিরোধী চক্র নানা ষড়যন্ত্র করছে। ঐতিহ্যবাহী মীরকাদিম পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর থেকে গত ১০ বছরে তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। যে উদ্দেশ্য লক্ষ্য নিয়ে এ পৌরসভা গঠিত হয়েছিল তা সুফল সাধারণ জনগণ পায়নি। একটি মহল এই এলাকার নাগরিকদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতে অত্যন্ত সুকৌশলে সরকার বিরোধী মহল কৌশলে আওয়ামীলীগের অনুপ্রবেশ করে দলীয় মনোনয়ন নেয়। আজ পর্যন্ত এ পৌরসভার কোনও ওয়েব সাইট চালু হয়নি।
ডিজিটাল যুগে পৌরসভার ওয়েব সাইট না থাকায় সাধারণ জনগন তথ্য জানার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একনজরে মির কাদিম পৌরসভার তথ্য পেতে সাধারণ নাগরিকরা এ করোনাকালে পৌরসভায় গত এক বৎসর কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি। ফলে পৌর কর্তৃপক্ষ ও মেয়র সহ অন্যান্যরা তাদের ইচ্ছামত জনগনের সুযোগ-সুবিধা এবং অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার জন্য সরকারি অনুদান ও স্থানীয় অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম ও অনৈতিক ঘটনা ঘটছে। গত কয়েক বৎসর এই পৌরসভার নিয়ম মাফিক উন্নয়ন কাজে কোনো টেন্ডার বা দরপত্র আহ্বান করা হয়নি।
সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দকৃত অনুদানের অর্থ উন্নয়ন কাজে ব্যয় না করে নানাভাবে অপব্যয় ও অনৈতিক ভাবে ব্যয় করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। এলাকার উন্নয়নে বর্তমান মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিন একজন সরকার বিরোধী লোক তার পূর্ব পুরুষ স্বাধীনতা বিরোধী। বিশেষ মহলের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে শহিদুল ইসলাম শাহিন আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন গ্রহণ করে মেয়র পদে নির্বাচিত হন। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি আদালতের নির্দেশ ব্যক্তিগত স্বার্থে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ খাল ভরাট করে নিজস্বার্থে ব্যবহার করছে। এলাকার ১৮টি সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারকে উৎখাত করে এলাকার ঐতিহ্যবাহী পালবাড়ি দখল করেছে।
জনগনের দাবির প্রতি এবং নাগরিকদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার যে উদ্দেশ্য লক্ষ্য নিয়ে এ পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করেছিল তা সুফল ভোগ করতে হলে এলাকার সকল পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার জন্য মানববন্ধনে দাবি জানানো হয়। মীরকাদিম পৌর এলাকার সকল পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে বর্তমান মেয়রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। ধলেশ্বরী নদীর তীরবর্তী ঐতিহ্যবাহী কমলাঘাট বাণিজ্য বন্দরের সন্নিকটে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে অবস্থিত আমাদের মুন্সীগ জেলার সদও উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভা। ১০ দশমিক ৩২ বর্গ কিমি আয়তন বিশিষ্ট মিরকাদিম পৌরসভাকে ২০১৩ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ‘খ’ শ্রেণী থেকে ‘ক’ শ্রেণীতে উন্নীত করে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার অধীন ৯টি ওয়ার্ড সংখ্যা নিয়ে গঠিত ৬০ হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত এই পৌরসভার কিস্তু সাধারণ জনগণ এই পৌরসভার সফুল ভোগ করতে পারছে না। মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্য বক্তব্য রাখেন মিরকাদিম পৌর নাগরিক সমাজের সাধারণ সম্পাদক ও ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল জলিল মাতাব্বর, মিরকাদিম উন্নয়ন পরিষদের মনিরুজ্জামান শরিফ, ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের জালাল মাতবর, জিল্লুর মিয়া, নাসির উদ্দিন পিন্টু, মো. অন্তর আমিন, মো. রুবেলসহ সর্বস্তরের জনগন।