প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ৩০, ২০২৪, ৬:৫০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ১০, ২০২১, ৬:৫৬ পি.এম
মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে পেটাল পুলিশ!
রেখা মনি, নিজস্ব প্রতিবেদক:
Facebook Twitter share
কুড়িগ্রামের উলিপুরে পুলিশের বিরুদ্ধে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমমভাবে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। আহত ওই মুক্তিযোদ্ধা সরকারের কাছে এই ঘটনার বিচার চেয়েছেন।
Surjodoy.com
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।বুধবার বিকালে উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের তেজারমোড় নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
The Daily surjodoy
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় আব্দুল মালেক (৩৭), গোলজার হোসেন (৫০), আরাফাত হোসেন (৩০) ইদ্রিস আলী (৪৫), শাহ আলম রানুসহ (৩৩) আরও অনেকে জানান, উলিপুর থেকে ঢাকাগামী হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি গাড়ি মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে দলদলিয়া ইউনিয়নের গাজির দরগাহ ঈদগাহ মাঠের সামনে পৌঁছলে বাড়ির পাশে থাকা মঞ্জু মিয়া (৪০) ও তার পুত্র রুহানকে (৮) ধাক্কা দেয়।
The Daily surjodoy
এতে পিতা-পুত্র গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। এ সময় স্থানীয়রা হানিফ এন্টারপ্রাইজের গাড়িটি আটক করে রাখেন।
The Daily surjodoy
এরপর বুধবার বিকালে তেজার মোড় এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে হানিফ গাড়ির প্রতিনিধির সমঝোতা বৈঠক চলাকালীন উলিপুর থানা পুলিশ সেখানে গাড়িটি উদ্ধার করতে আসেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে জনগণ কিছু বুঝে উঠার আগেই অতর্কিত লাঠিচার্জ শুরু করেন।
The Daily surjodoy
এ সময় সেখানে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম ওরফে হবিবুর রহমান (৭০), আজাহার আলী (৫৯), জাহিদ হাসান (১৭), জাকারিয়াসহ (১৪) অনেকেই পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হন। এ ঘটনায় ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তারা সকলেই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলে পুলিশ গাড়ি উদ্ধার না করেই ফিরে যায়।
The Daily surjodoy
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন পিতা-পুত্র আমার ভাই ও ভাতিজা। বুধবার বিকালে সড়ক দুর্ঘটনার সমঝোতা বৈঠক চলাকালীন পুলিশ এসে কোনো কথা না শুনেই অতর্কিতভাবে সবার উপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ সময় পুলিশ নির্মমভাবে আমাকেও পিটায়। আমি সরকারের কাছে এ ঘটনার বিচার চাই।
The Daily surjodoy
দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইউনুছ আলী বলেন, আমি সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। গাড়ি দুর্ঘটনার ব্যাপারে সুষ্ঠু সমাধান চেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু ওসি সাহেব গাড়ি থানায় নিয়ে যেতে চান। জনগণ তা না মানায় ওসি পুলিশকে নিদের্শ দেন লাঠিচার্জ করার।
The Daily surjodoy
তিনি দাবি করেন, এ সময় ওসি সাহেবের নেতৃত্বেই মুক্তিযোদ্ধার উপর লাঠিচার্জ করা হয়।
এ বিষয়ে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি ঘটনার বিচার দাবি করেন।
The Daily surjodoy
উলিপুর থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির বলেন, পুলিশের লাঠিচার্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা আহত হওয়ার ঘটনা সঠিক নয়। ওই সড়কে প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটে, এ কারণে জনতা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজনের উপর ক্ষিপ্ত ছিল। সেখানে হানিফ পরিবহনের প্রতিনিধির উপর তারা চড়াও হয়েছিল।
The Daily surjodoy
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পুলিশ দেখে জনতা হৈ দিয়ে উঠে। এ সময় পুলিশ তাদের থামাতে গেলে কারো না কারো গায়ে তো ধাক্কা লাগবে। ওই ধাক্কায় বীর মুক্তিযোদ্ধা বয়স্ক মানুষ একটু পড়ে গিয়েছিল। সেখানে পুলিশ কাউকে লাঠিচার্জ করেনি। উনারা উভয়পক্ষ টাকা পয়সা নিয়ে মিটমাট হয়ে গেল, এখন সব দোষ পুলিশের।
The Daily surjodoy
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, বিষয়টি ওসি সাহেব আমাকে জানিয়েছেন। জনরোষ থামাতে সবাইকে সরিয়ে দিতে গিয়ে হয়তো উনার গায়ে লেগেছে। উনি যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসি সাহেব তা জানতো না। এ রকম একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে, বিষয়টি ইচ্ছা করে কেউ করেনি।