1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
মুমূর্ষু মাকে সড়কে ফেলে গেল ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-ব্যাংকারসহ প্রতিষ্ঠিত ৮ সন্তান
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩০ অপরাহ্ন

মুমূর্ষু মাকে সড়কে ফেলে গেল ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-ব্যাংকারসহ প্রতিষ্ঠিত ৮ সন্তান

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২১, ১২.১০ এএম
  • ২৫৫ বার পঠিত

আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধিঃ

তীল তীল করে গড়ে তুলেছেন ছেলে-মেয়েদের। বানিয়েছেন ডাক্তার, ব্যাংকার, ইঞ্জিনিয়ার আর ব্যবসায়ী। মেয়েরাও প্রতিষ্ঠিত। অথচ আট ছেলে-মেয়ের ঘরে ঠাঁই হলো না শতবর্ষী মায়ের। শেষ বয়সে মাকে গাড়ি থেকে ফেলে দিলেন সন্তানরা। তাও একটি বাজারের পাশে। নিষ্ঠুর সন্তানদের ঘরে মুমূর্ষু মায়ের জায়গা না হলেও ঠাঁই দিয়েছে এলাকাবাসী। করেছেন চিকিৎসার ব্যবস্থাও।

হৃদয়স্পর্শী ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার ধামরাই উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের রশ্মিমপুর গ্রামে। শতবর্ষী এ মায়ের নাম মরিয়ম বেগম। একটি বাজারের পাশে সন্তানরা তাকে গাড়ি থেকে ফেলে দেন। পরে এলাকাবাসী মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে একটি বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

ডাক্তার, ব্যাংকার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ীসহ বৃদ্ধা মরিয়মের আট ছেলে-মেয়ে রয়েছেন। সবাই সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত। এরপরও কোনো ছেলের বাড়িতেই তার মাথা গুঁজবার ঠাঁই হলো না। তার বাবার রেখে যাওয়া ১৫ বিঘা জমি সন্তানদের লিখে না দেওয়ায় এ পরিণতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে গ্রামবাসী।

জানা গেছে, রশ্মিমপুর গ্রামের মো. আসুরুদ্দিন সরকার নামে এক ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন। তাঁতশিল্পসহ কয়েকশ বিঘা জমি ছিল তা। তাই একমাত্র মেয়ে মরিয়ম বেগমের সুখের কথা ভেবে ১৫ বিঘা জমি লিখে দিয়ে বিলাসবহুল একটি বাড়ি বানিয়ে বিয়ে দেন। এরপর জামাই মো. আব্দুস সালামকে ঘরজামাই হিসেবে বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত করেন।

পরবর্তীতে মরিয়ম বেগম ছয় ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের মা হন। প্রত্যেক সন্তানকেই তিনি লেখাপড়া শিখিয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আক্তারুজ্জামান একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা। ছোট ছেলে ডা. মো. হুমায়ুন কবীর বিসিএস কর্মকর্তা (ডাক্তার)। তিনি একটি সরকারি আবাসিক হাসপাতালে কর্মরত। সাখাওয়াত হোসেন সাকী ও আব্দুল্লাহেল বাকী নামকরা ব্যবসায়ী ও আলমগীর হোসেন বিদেশে ভালো বেতনে চাকরি করেন।

তাদের কারো সংসারে কোনো অভাব-অনটন নেই। শুধু বৃদ্ধা মাকে ভরণপোষণ করতে যেন তাদের অভাবের শেষ নেই। ক্ষুধার জ্বালায় সবসময় ছটফট করেন বৃদ্ধা মরিয়ম বেগম। ক্ষুধার যন্ত্রণা মেটাতে ঘুরে বেড়ান এদিক-সেদিক। না খেয়ে তার বাকশক্তি হারিয়ে ফেলার উপক্রম হয়ে গেছে।

সন্তানদের কাছে বিষয়টি বারবার বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শতবর্ষী মাকে চিকিৎসার কথা বলে গাড়িতে তুলে স্থানীয় বঙ্গবাজারের পাশে রাস্তার ওপর ফেলে রেখে যান তারা। গোঙানির শব্দ পেয়ে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় মো. আব্দুল লতিফের বাড়িতে নিয়ে সেবা-শুশ্রূষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

বৃদ্ধার ছেলে মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমার মায়ের অনেক বয়স হয়েছে। তার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমাদের নিয়ে এমন মিথ্যাচার করছেন। আমরা তাকে যথেষ্ট ভরণপোষণ দিচ্ছি ও সেবাযত্ন করছি।

মো. আব্দুল লতিফ নামে এক গ্রামবাসী বলেন, বৃদ্ধার ছেলেরা যদি তার এত ভরণপোষণ দিচ্ছে ও সেবাযত্ন করছে তাহলে তার এ করুণদশা কেন? শুধু তাই নয়, গ্রামবাসী মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে স্থানীয় বঙ্গবাজারের পাশের রাস্তা থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিচ্ছেন কেন?

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews