হাবিবুর রহমান হবি, যশোর :
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সমর্থিতরা সাধারণ সম্পাদকসহ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জন করেছে। সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছেন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি সভাপতির একটিমাত্র পদে প্রার্থী দিয়ে জয়লাভ করেছে। ভরাডুবি হয়েছে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের। তাদের মাত্র দু’জন প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। সভাপতি পদে গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি সমর্থিত কাজী ফরিদুল ইসলাম ৩২ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন একশ’ ৮৬ ভোট। তার অপর দু’ প্রতিদ্বন্দ্বী মহাজোট সমর্থিত গাজী আব্দুল কাদির একশ’ ৫৪ এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সমর্থিত মঈনুল হক ময়না পেয়েছেন একশ’ ১৬ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে ব্যাপক ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন মহজোট সমর্থিত শাহানুর আলম শাহীন। তিনি পেয়েছেন দুশ’৫৪ ভোট। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সমর্থিত এমএ গফুর পেয়েছেন একশ’ ৭০ ভোট।
নির্বাচনকে ঘিরে সকাল থেকেই আদালতপাড়ায় উৎসবের সৃষ্টি হয়। কেবল আইনজীবীরা নন, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবী নেতারা সেখানে ভিড় করেন। সকাল ১০ থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। নির্বাচনে আটটি বুথে চারশ ৭৪ জন ভোটারের মধ্যে চারশ’ ৬৩ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সহসভাপতির দুটি পদেই মহাজোট সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। দুশ’৭৪ ভোট পেয়ে খোন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন মুকুল ও একশ’৫৭ ভোট পেয়ে জিএম মুছা নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মনজুর কাদের আশিক পেয়েছেন একশ’৬৬ ও এমএ লতিফ পেয়েছেন একশ’৫৭ ভোট। মহাজোটের প্রার্থী আবুল কায়েস দুশ’৩৮ ভোট পেয়ে যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী বিএনপির আশেক মাসুক সুমন পেয়েছেন একশ’ ৮৮ ভোট। সহকারী সম্পাদকের দুটি পদে মহাজোটের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। মহাজোটের জাহিদুল ইসলাম সুইট দুশ’ ৭২ ও নাসির উদ্দিন দুশ’ ১২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির কাজী সেলিম রেজা ময়না একশ’ ৯২ ও মাধবেন্দ্র অধিকারী পেয়েছেন একশ’৩৩ ভোট। গ্রন্থাগার সম্পাদক পদে বিএনপির নুরুজ্জামান খান দুশ’ ২৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মহাজোটের শহিদুল ইসলাম পেয়েছেন একশ’৭৮ ভোট। কার্যকরী সদস্য পদে মহাজোটের রেজাউর রহমান দুশ’৫৯ , আব্দুল্লাহ আল মাসুদ দুশ’৪৮, আরিফ শাহরিয়ার দুশ’৪৩, নব কুমার কুন্ডু দুশ’ ১০, বিএনপির সেলিম রেজা দুশ’৪৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মহাজোটের উদয়ন বিশ্বাস একশ’ ৯৩, মাহমুদা খানম একশ’ ৬২, শাহিনা খানম লিলি একশ’ ৮১ ও রুহিন বালুজ পেয়েছেন একশ’৭৩ ভোট। নির্বাচনের দিন সকালে মহাজোটের পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নুরজাহান ইসলাম নীরা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহমুদ হাসান বিপু, আওয়ামী লীগ নেত্রী হাজেরা পারভীনসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ তাদের সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের জন্যে ভোট প্রার্থনা করেন।
অপরদিকে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পক্ষে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য আব্দুস সালাম আজাদ, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, মুনির আহম্মেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পী তাদের সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন। এছাড়া বাসদের জেলা সন্বয়ক হাসিনুর রহমান, সিপিবির জেলা সাধারণ সম্পাদক এলাহদাদ খান ও ওয়ার্কার্সপার্টি (মার্কসবাদী) জেলা সভাপতি নাজিম উদ্দিন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী ফরিদুল ইসলামের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন।