বরগুনায় শামীম ইমতিয়াজ বাদশাহ নামের এক যুবলীগ কর্মী হত্যা মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।
উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হলে পুনরায় জামিনের জন্য বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. হাসানুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আদালত এ আবেদন মঞ্জুর করেন।
জামিন শুনানির সময় আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিদ্দিকুর রহমানের ভায়রা বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস।
এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দেয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে সিদ্দিকুর রহমানসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইয়াসির আরাফাত।
২০১৯ সালের ৮ জানুয়ারি রাতে বুড়িরচর ইউনিয়নে কামরাবাদ এলাকায় যুবলীগ কর্মী শামীম ইমতিয়াজ বাদশাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরের দিন ৯ জানুয়ারি নিহত বাদশার বাবা সোহরাব মৃধা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বুড়িরচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানের নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে গ্রেফতারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এ মামলার ৪ নম্বর আসামি মো. রাকিব।
পরে দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত সাত জানুয়ারি বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। অভিযোগপত্রে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানকে এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস বলেন, আমাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সিদ্দিকুর রহমানের ১০ হাজার টাকা বন্ডের বিনিময়ে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন।
এ সময় আসামিপক্ষের জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুল মোতালেব এবং অ্যডভোকেট আবদুর রহমান নান্টু প্রমুখ।
এ বিষয়ে নিহত যুবলীগ কর্মী বাদশাহ’র বাবা ও এ মামলার বাদী সোহরাব মৃধা বলেন, আমার একমাত্র সন্তান হত্যার নির্দেশদাতার জামিনের খবর আমি শুনেছি। এতে আমি হতাশ হয়েছি। তারপরও আমি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আসামির স্বজনরা তাকে ও তার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আমি আমার ছেলের ন্যায়বিচারের প্রতীক্ষায় আছি। দ্রুততম সময়ে আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।